এখন হইহুল্লোড়ের সময়। আর তাই চটপট নিজেকে সাজিয়ে তুলতে কিছু রুটিন আপনাকে মেনে চলতেই হবে। এখানে দেওয়া হল তারই কিছু টিপ্স।
পোশাকে এবং মেক-আপে স্লিম লুক
সঠিক মেক-ওভার আপনার চেহারায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনে দিতে পারে। হাইলাইটিং বা কন্ট্যুরিং টেকনিক ব্যবহার করুন মেক-আপের সময়, মুখের বিসদৃশ ফোলাভাব কমিয়ে এটি আপনাকে শার্প লুক দেবে। গালের হাড়, নাকের দুপাশে কন্ট্যুরিং করলে মুখের ডৌলে খানিকটা কৃশভাব আনা যাবে। নাকের উপরের অংশ, চোখের নীচের অংশ, চিবুক, ভ্রুর নীচের অংশ হাইলাইট করলে, মুখের ডৌল-এ তীক্ষ্ণভাব আনা যায়।
পার্টির পোশাক নির্বাচন করার সময় আপনার বডি অ্যাপল শেপ না পিয়ার শেপ সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি পার্টির পোশাক হিসাবে কোনও শর্ট ড্রেস বাছাই করে থাকেন, তাহলে পায়ে স্টিলেটোস পরুন। স্কিন শেড বা ন্যুড শেডের স্টিলেটোস মানাবে ভালো।
রঙের নির্বাচনের উপরেও আপনার শরীরের গঠনে পরিবর্তন আনা যেতে পারে। একই রঙের টপ ও লোয়ার পরলে স্লিম দেখাবে। কন্ট্রাস্ট শেডের জুতো পরলে সাজটা সম্পূর্ণ হবে। কেপ্রি, লং ব্যাগি শর্টস, নি-লেংথ প্যান্টস এড়িয়ে চলুন। তার বদলে ডার্ক কালার স্ট্রেট জিন্স পরুন যা আপনাকে রোগা দেখাতে সাহায্য করবে। সঙ্গে ডার্ক হিলস্ বা অ্যাংকল বুটস্, ফ্ল্যাট হিল শুজ পরতে পারেন। জুতোটা খুব ঢাকা না হয়ে খানিকটা খোলা ধরনের হলেও আপনাকে স্লিম দেখাবে। এই ধরনের জুতো, স্কার্ট, শর্টস-এর সঙ্গে পরতে পারেন।
লাইফস্টাইলে পরিবর্তন
রেস্তোরাঁয় খাওয়া কমিয়ে দিন। যদি বাইরে খাওয়ার অভ্যাস থাকে সপ্তাহে পাঁচদিন, তাহলে সেটা কমিয়ে সপ্তাহে একদিনই বাইরের খাবার খান। জাংক ফুড খাওয়ার অভ্যাস সরাসরি আপনার ওজনের উপর পড়ে। বাইরের খাবার খাওয়া কমালে, ওজনও কমবে। বাইরে খেলেও তেল মশলা বেশি এমন ডিশ না অর্ডার করে, গ্রিলড্ ডিশ আর স্যালাড অর্ডার করুন। মনে রাখবেন ওজন কমাতে গেলে ফুড হ্যাবিট চেঞ্জ করা প্রয়োজন সর্বাগ্রে। ফ্রিজে রাখা আইসক্রিম, চিপ্স, মাফিস-এর মায়া ত্যাগ করে, কৌটোয় ভরে রাখুন ড্রাই ফ্রুট্স, লো-ক্যালোরি স্ন্যাক্স এবং ফ্রিজে রাখুন, সবুজ পাতা-যুক্ত শাকসবজি, ফল ও স্প্রাউট্স। আপনার লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনতে এক্সারসাইজ করুন। শরীরের অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়ার সহজ রাস্তা হল স্টিম বাথ নেওয়া। আপনার জিম-এ যদি সেই ব্যবস্থা থাকে, সপ্তাহে দুবার স্টিম নিন, আর তারপর কোল্ড শাওয়ার নিন। কিছুদিনের মধ্যেই এতে অনেকটা হালকা অনুভব করবেন।
ব্রেকফাস্ট স্কিপ করবেন না। চেষ্টা করুন ব্রেকফাস্ট ৩০০ ক্যালোরির মধ্যে রাখতে। এতে হোলগ্রেন আর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। স্যান্ডউইচ বা টোস্ট-এ সাধারণ মাখনের বদলে পিনাট বাটার ব্যবহার করুন। এটা খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকবে, বারবার ইন-বিটউইন মিল্স খাবার হ্যাবিট থেকে বেরোতে পারবেন। ফলে বাড়তি ক্যালোরি ইনটেক-ও হবে না।
ওয়ার্কআউট করার ১ ঘন্টা আগে কফি খান। এর ফলে ব্যায়াম করার সময় এক্সট্রা এনার্জি পাবেন আর অল্প আয়াসেই অনেক বেশি ক্যালোরি বার্ন করতে পারবেন। কোনও একটা ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি আপনার দৈনিক জীবনচর্যায় রাখুন। সেটা নাচ, সুইমিং, ভলিবল, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, টেনিস— যাই হোক না কেন।
ওয়ার্কআউট ব্লান্ডার
মর্নিংওয়াক-এর চেয়ে ভালো এক্সারসাইজ আর হয় না। পারলে ২০ মিনিট জগিং করুন, সেই সঙ্গে ১০টা পুশ-আপ ও ২০টা স্কোয়াট। কিছুদিনের মধ্যে নিজেই ওজনের তফাতটা অনুভব করবেন।
ওভার ওয়ার্কআউট এড়িয়ে চলুন। এর ফলে চোট আঘাত লাগতে পারে। এছাড়া আপনার শরীরের ব্যায়ামেরও যেমন প্রয়োজন আছে, বিশ্রামেরও ঠিক ততটাই দরকার।
খালি পেটে ব্যায়াম করবেন না। ব্যায়ামের জন্যও শরীরের পুষ্টি দরকার, তবেই প্রয়োজনীয় এনার্জি পাবেন ওয়ার্কআউট করার জন্য। পেটে যদি একেবারেই খাবার না থাকে এবং সেই অবস্থায় এক্সারসাইজ চালিয়ে যান, তাহলে শরীরে অচিরেই পুষ্টির ঘাটতি তৈরি হবে।
এক্সারসাইজ করার ক্ষেত্রে একই এক্সারসাইজ দীর্ঘদিন করে যাবেন না। এর ফলে শরীর একই ফর্ম-এ অভ্যস্ত হয়ে যাবে। তখন আর সেটা কার্যকরী হবে না। ওয়ার্কআউট শেষ করার আগে, অবশ্যই কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ রাখুন। এর ফলে শরীর ধাতস্থ হবার সুযোগ পাবে। পোস্ট এক্সারসাইজ আপনার হার্টবিট-ও স্বাভাবিক গতিতে ফিরবে, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে এবং মাসগুলি আগের অবস্থায় ফিরে এসে রিল্যাক্সড্ হবে।