মা হওয়ার আনন্দ নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলেন কিন্তু আমি আমার কিছু সমস্যার কথা বলতে চাই৷ আমায় ভুল বুঝবেন না কিন্তু শিশুর জন্ম হওয়ার প্রাথমিক আনন্দ যে আমার হয়নি তা নয়৷ কিন্তু কিছুদিন পর থেকে ভীষণ অবসাদ ঘিরে ধরতে শুরু করে৷ এখন আমার আর কিছুই ভালো লাগে না৷ আমি সম্পূর্ণ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছি৷ এর থেকে কীভাবে বের হব বুঝতে পারছি না৷ দয়া করে বলুন আমি কি অস্বাভাবিকতার শিকার? এটা কি কোনও মানসিক রোগের প্রথম পর্যায়ে রয়েছি?

 

সন্তান জন্মানোর পর মহিলাদের মধ্যে এটা দেখা যায়।এটাকে বলে প্রসবোত্তর অবসাদ৷ এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই৷ এরকম বহু মহিলারই হয়৷ আসলে মা হওয়ার পরই মহিলাদের মনে, শরীরে নানান পরিবর্তন আসে। হরমোনের ভারসাম্য থাকে না, যার ফলে তাদের নানান মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, অনেক উদ্ভট চিন্তা আসে। এটাকেই বলা হয় প্রসবোত্তর অবসাদ।

এই অবসাদের কারণেই, মেজাজের পরিবর্তন হয়৷ আচমকাই রেগে যাওয়া, হঠাৎ কষ্ট পাওয়া,  কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে না করা, বিরক্তি, কান্না পাওয়া, একা থাকতে চাওয়া, অনেক সময় নিজের সন্তানকেই সহ্য করতে না পারা – এইসব লক্ষণ দেখা যায়। এই আচরণগুলি এই ডিপ্রেশনেরই অঙ্গ৷

 গবেষণা বলছে ৭০ শতাংশ মহিলার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর এগুলো এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু যে লক্ষণগুলো এই সময় দেখা যায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ না করা হলে সেগুলো থেকেই যায়। এর মধ্যে থাকতে পারে ঘুম না আসা, খিদে না পাওয়া, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রবণতা, শিশু কাঁদলে রাগ হওয়া, ইত্যাদি।

তাই প্রথমেই নিজের কাউন্সেলিং নিজেই করা শুরু করুন৷এটা আপনাকে বুঝতে হবে যে, মা হওয়া মানে অনেকটা দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়া। পরিবার পাশে না থাকলে এটা হয় অনেক সময়। তার মধ্যে আবার শরীর দুর্বল থাকে, মনে নানান চিন্তা চলে। তাই এই অবসাদ ঘিরে ধরে।

এটার মূল চিকিৎসা হল পরিবারের আদর, যত্ন। পরিবার যদি সমর্থন করে এবং ভালোবাসে তাহলে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। স্বামীকে এই সময় স্ত্রীর পাশে থাকতে হবে৷ তাই স্বামীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করুন৷তাঁকেও বুঝতে হবে খাবার আর ওষুধ তো আছেই, তার সঙ্গে স্ত্রীর ছোটোখাটো  খুশির দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। আর যদি অবস্থার আরও অবনতি ঘটে তাহলে কোনও মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...