ঋতু পরিবর্তনের সময় বাতাসে নানারকম জীবাণু ভেসে বেড়ায়। তাই এই সময়টা সবাইকে, বিশেষকরে শিশুদের বেশি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আপনার সন্তানকে রোগ থেকে নিরাপদে রাখতে সবচেয়ে সস্তা, সহজ এবং  গুরুত্বপূর্ণ উপায়গুলির মধ্যে একটি হল  ঘনঘন হাত ধোয়ানোর অভ্যাস।কারণ,হাত ধোয়ার অভ্যাস জীবাণুর বিস্তার রোধ করতে পারে।

জীবাণুর বিস্তার সম্পর্কে মৌলিক ধারণার অভাব থাকতে পারে বাচ্চাদের মধ্যে। হাত ধোয়া একটি  তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। হাত ধোয়া এবং শৈশবের অসুস্থতা প্রতিরোধও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) উভয়ই সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে হাত ধোয়ার মতো অ-ফার্মাসিউটিক্যাল উপায় অবলম্বনের পরামর্শ দেয়। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে, আগে হাত ধোয়ার শিক্ষা কম ছিল। বিশ্বব্যাপী করোনা-মহামারীর পর মানুষের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস বেড়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধের এটি অন্যতম উপায় অবশ্যই। সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার, শচিন তেণ্ডুলকরকে বিশ্বের প্রথম ‘হ্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ ঘোষণা করেছে স্যাভলন স্বাস্থ্য ইন্ডিয়া মিশন। একজন হ্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অনুশীলনে অনুপ্রাণিত করার জন্য যুক্ত হয়েছেন তিনি৷ এ বিষয়ে তাঁর পরামর্শ, নিয়মিত হাত ধোয়া`র অভ্যাস বজায় রাখতে পারলে,সংক্ৰমক রোগের বিস্তার বন্ধ করা অনেক সহজ হতে পারে।

আপনার সন্তানকে জানান যে, হাত ধোয়া তাকে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখতে পারে, যা তাকে এবং তার আশেপাশের অন্যদেরও সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। কীভাবে জীবাণু অদৃশ্য হওয়া সত্ত্বেও তারা আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে, সে সম্পর্কে শেখান ছোটোদের। তাদের বুঝিয়ে বলুন যে, নিয়মিত হাত ধোয়া, দাঁত ব্রাশ করা বা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাখ্যা করুন যে,  হাতের সংক্রমণ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলির কু-প্রভাব এড়াতে,বারবার হাত ধোয়া উচিত।

হাত ধোয়ার সঠিক উপায়ঃ

বহমান জল দিয়ে হাত ধুতে বলুন প্রথমে। তারপর পর্যাপ্ত সাবান লাগাতে বলুন। হাতের সমস্ত পৃষ্ঠতল, আঙুলের মধ্যে এবং নখের নীচে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য স্ক্রাব করার পরামর্শ দিন। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় বা একক ব্যবহার করা তোয়ালে দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে বলুন।

হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরামর্শও দিতে পারেন। তবে সুযোগ থাকলে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার উপায় বেছে নেওয়া ভালো। আইটিসি লিমিটেডের পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্টস বিজনেসের ডিভিশনাল চিফ এক্সিকিউটিভ সমীর শতপথী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়া দৈনন্দিন স্বাস্থ্যবিধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বৃহত্তর সমাজের বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এই অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য ক্রমাগত জোর দেওয়া প্রয়োজন। স্যাভলন স্বাস্থ্য ইন্ডিয়া মিশন হাতের পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে এই আচরণগত পরিবর্তনকে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। শচিনকে আমাদের সঙ্গে পেয়ে আমরা খুব খুশি। তিনি নিজে স্যাভলন স্বাস্থ্য ইন্ডিয়া মিশনের ‘হ্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ হিসাবে এই অভ্যাস গড়ে তোলার বিষয়ে একজন শক্তিশালী প্রচারক৷’ আর ছোটোরা যেন প্রতিবার খাবার গ্রহণ করার আগে নিজের হাত ধুয়ে নেয় ভালো ভাবে এই সু-অভ্যাস শেখান। শুধু তাই নয়, টয়লেট ব্যবহারের পরও যেন ভালো ভাবে হাত ধোয়, সেই অভ্যাস শেখান শিশুদের। বাড়িতে রাখা কুকুর, বিড়াল ধরলেও যেন ভালো ভাবে হাত ধোয় বাচ্চারা, সেই পরামর্শ দিন। কাশি কিংবা হাঁচির পরও যদি হাত ধুয়ে নেয় কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে তাহলে আরও ভালো।

মনে রাখবেন, বাচ্চারা সবচেয়ে বেশি ভোগে কৃমির সমস্যায়। আর ওদের পেটে কৃমি জন্মায় হাত দিয়ে নোংরা পেটে যাওয়ার কারণে। তাই খাওয়ার আগে বাচ্চারা যাতে অবশ্যই হাত ধোয়, সেই বিষয়ে সচেতন থাকুন। এছাড়া, অসুস্থ ব্যক্তিকে ধরার পরও বাচ্চারা যাতে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করে নেয়, সেই বিষয়ে খেয়াল রাখুন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...