আমার পরিবার উচ্চমধ্যবিত্ত। আমার বিয়ের ১২ বছর হয়ে গেছে। আমার বয়স ৩৭ বছর। সন্তান লাভের জন্য সবরকম চেষ্টা করে দেখেছি। আমার Menopause শুরু হয়ে গেছে। আইভিএফ-এর সাহায্য নিতে চাই। এখন আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণ করা কি আমার পক্ষে সম্ভব? কিন্তু শুনেছি এই পদ্ধতি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং খরচাসাপেক্ষ। এটা কি সত্যি?

মাত্র ৩৭ বছর বয়সে মেনোপজ হওয়া খুবই অস্বাভাবিক। এইসব ক্ষেত্রে আগে পরীক্ষা করানো উচিত, Menopause-এর কারণেই রক্তস্রাব বন্ধ হয়েছে নাকি, এর অন্য কারণ রয়েছে? আল্ট্রাসাউন্ড করালে মেনোপজ সম্পর্কিত সব তথ্য আপনি পেয়ে যাবেন। মেনোপজের কারণে ডিম্বাণু তৈরি বন্ধ হয়ে যায়, তাই স্বাভাবিক নিয়মে গর্ভধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মেনোপজ চলাকালীন মহিলাদের জন্য মাতৃত্ব লাভের একমাত্র সুযোগ হল ডোনার ডিম্বাণু বা প্লাটিলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা এফএসএইচ-এর সংমিশ্রণে। এই পরিস্থিতিতে আইভিএফ পদ্ধতি গর্ভধারণ করতে সাহায্য করে। আর যদি অন্য কোনও কারণে আপনার রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে সেই কারণটা জেনে নিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন।

পুরো বিশ্বে ৮০ লক্ষ শিশু আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্মগ্রহণ করেছে। ভারতবর্ষেও বহু দম্পতি এই চিকিৎসায় উপকৃত হয়েছেন। বর্তমান সময়ে অনেক দম্পতিই কেরিয়ার গুছিয়ে সন্তান নেওয়ার কথা যখন চিন্তা করেন তখন তাঁদের বয়স প্রায় ৩৪-৩৫ বছর। এর ফলে জননতন্ত্রে বহু সমস্যা উৎপন্ন হয়। আধুনিক জীবনশৈলী, খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস ইত্যদি কারণেও সন্তানধারণে সমস্যা দেখা দেয়। যে মহিলারা ফাইব্রয়েড, পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোমে বা এন্ডমেট্রিইয়সিস-চ  ভুগছেন তাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বেশি। এই পদ্ধতি একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ নয়। বরং এটি একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত চিকিৎসা পদ্ধতি। মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ মহিলাই ওভেরিয়ান হাইপার স্টিমিউলেশন সিন্ড্রোমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভালো চিকিৎসা এবং যথেষ্ট যত্ন নিলে এই সসম্যাও দূর করে ফেলা সম্ভব। এখন অইভিএফ পদ্ধতির সাফল্য ৪০ শতাংশ। সাফল্য কেবল টেকনিকের উপর নয়, মহিলার বয়স, বন্ধ্যাত্বের কারণ, বায়োলজিকাল এবং হরমোনাল কারণের উপরও নির্ভর করে। তবে এই চিকিৎসা নিশ্চিত ভাবে খুবই খরচাসাপেক্ষ। অবশ্য গত কয়েক বছরে এই চিকিৎসার খরচায় বিশেষ তারতম্য ঘটেনি।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...