বর্তমান সময়ে প্রায় সমস্ত অনুষ্ঠানেই মেয়েদের মেক-আপ করে আসতে দেখা যায়। যদিও খুব অল্প সময়ের জন্য মেক-আপ করার প্রয়োজন হয়, তবুও এটি সৌন্দর্য এবং আকর্ষণ বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও মুখের যে-কোনও খামতিও মেক-আপের সাহায্যে চট করে ঢেকে ফেলা সম্ভব হয়।
কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য যে-প্রসাধনীগুলি আমরা ব্যবহার করি, সেগুলি সৌন্দর্য না বাড়িয়ে নানা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সুতরাং প্রয়োজন মেক-আপ অ্যালার্জি সম্পর্কে সবকিছু জেনে রাখা এবং প্রোডাক্টগুলির কোন কোন উপাদান আমাদের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা। এতে নিজেকে মেক-আপ অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষিত রাখতে সুবিধা হবে। এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ‘এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস’- এর ডার্মাটোলজিস্ট ডা. অমিত বাংগিয়া-র মতামত।
কোন কোন Makeup থেকে অ্যালার্জি?
অনেক সময়েই দেখা যায় মেক-আপ অ্যাপ্লাই করার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে লাল রঙের চাকা চাকা দাগ, র্যাশ, জ্বালা, চুলকানি, ব্যথা ভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়, যা সহ্য করা মুশকিল হয়ে যায়। সেজন্য কোন কোন প্রেডাক্ট থেকে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে, সেটা আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো।
ফাউন্ডেশন এবং কনসিলার: স্কিন টোন ইমপ্রুভ করার জন্য এবং দাগছোপ লুকোবার জন্য ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এগুলিতে এমন কেমিক্যালস ব্যবহার করা হয়, যেগুলি ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক। রোজ যদি এগুলি ব্যবহার করা হয়, তাহলে ত্বকে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।
সাধারণত এগুলিতে থাকে সুগন্ধী, প্যারাবেনস, প্রিজারভেটিবস, সোডিয়াম লৌরেথ সালফেট, পথহালেটস, সীসা। এইসব উপাদান ফাউন্ডেশন এবং কনসিলারের রং, শেলফ লাইফ এবং মিষ্টি গন্ধ বজায় রাখতে ব্যবহার করা হয়। এগুলি ত্বকের পোরস ক্লগ করে, অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ায়, এমনকী অ্যাকনের সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সার এবং বন্ধ্যাত্বরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সুতরাং ফাউন্ডেশন কেনার সময় সবসময় খেয়াল রাখা উচিত ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য যে-উপাদানগুলি খুবই জরুরি যেমন জিংক অক্সাইড ইত্যাদি, সেটি ফাউন্ডেশনে রয়েছে কিনা। স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য এই উপাদানটি অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়াও জিঙ্ক অক্সাইড, সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রেখে এজিং প্রসেস-কেও স্লো করে।
ব্লাশ এবং হাইলাইটার: Makeup করতে গেলেই প্রয়োজন ব্লাশ এবং হাইলাইটারের। চিকবোনস-এর সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে এবং মুখের গ্লো এবং ফ্রেশ ভাব বাড়িয়ে তুলতে ব্লাশ যেমন সাহায্য করে তেমনি হাইলাইটার, কনটিউরিং এবং শাইন নিয়ে আসে। কিন্তু কখনও কখনও এগুলির প্রভাবে মুখের সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং কোনও ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজারও তখন কোনও কাজ করে না। এর কারণ, এগুলির একটা শেড তৈরি করতে, তিন-চার ধরনের পিগমেন্টস অথবা কেমিক্যালস ব্যবহার করা হয়।
যে-মহিলাদের কালার থেকে অ্যালার্জি হয়, তাদের ত্বক এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুতরাং উচিত হচ্ছে অর্গ্যানিক ব্লাশ ব্যবহার করা। ন্যাচারাল শেড ব্যবহার করা সবথেকে ভালো। ব্লাশ বা হাইলাইটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে খেয়াল রাখা দরকার, যে-ব্রাশটি ব্যবহার করছেন, সেটি পরিষ্কার কিনা। কারণ ব্রাশ-ও অ্যালার্জি হওয়ার অন্যতম কারণ।