সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য যে-প্রসাধনীগুলি আমরা ব্যবহার করি, সেগুলি সৌন্দর্য না বাড়িয়ে নানা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এগুলোর থেকে অনেক সময়েই ত্বকে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। যেগুলি আমাদের সৌন্দর্য খর্ব করে।  প্রথম পর্বে আমরা আলোচনা করেছি ফাউন্ডেশন , কনসিলার , ব্লাশ এবং হাইলাইটার নিয়ে।

আই Makeup: চোখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে আমরা আই মেক-আপের সাহায্য নিয়ে থাকি। কাজল, লাইনার, মাসকারা, আইশ্যাডো, আইল্যাশ, কার্লস ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়, আই মেক-আপের জন্য। কিন্তু অনেক সময় এগুলি থেকে চোখের অ্যালার্জি হতে দেখা যায়। এতে থাকে লেড সালফাইড, কার্বন ব্ল্যাক, এথানলমাইন, বেনজ্যাঙ্কোনিয়াম ক্লোরাইড (প্রিজারভেটিভ), প্রাইম ইয়েলো কারনোভা ওয়্যাক্স (ওয়াটার প্রুফ বানাতে সাহায্য করে), ফর্মালডিহাইড রিলিজিং প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এছাড়াও হেভি মেটালস, অ্যালুমিনিয়াম পাউডার, এসমস্ত কিছুই ক্যান্সার, চোখের ড্রাইনেস, অ্যালার্জি, চোখ লাল হয়ে ওঠারও কারণ হয়। সুতরাং উপাদানগুলি দেখে তবেই চোখের মেক-আপ কেনা উচিত। ওয়াটার প্রুফ আই মেক- আপ চোখ ড্রাই হওয়ার অন্যতম কারণ। প্রোডাক্ট-এ যত কম কেমিক্যালস থাকবে, ততই ভালো চোখের পক্ষে।

লিপস্টিক: লিপস্টিক হল Makeup-এর অপরিহার্য অংশ। কিন্তু অনেকেই জানেন না লিপস্টিকে ব্যবহৃত কেমিক্যালস ঠোঁটের ক্ষতি করার সঙ্গে সঙ্গে ঠোঁটের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করেও, মানুষকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। প্রিজারভেটিভস হিসেবে লিপস্টিকে মিথাইলোপ্যারাবেন ব্যবহার করা হয়, যেটি অ্যালার্জি এবং ক্যান্সারেরও কারণ।

এতে সিন্থেটিক ডাই-ও ব্যবহার করা হয়, যেটি কিনা পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্টস থেকে তৈরি হয়। এতে ত্বক জ্বালা এবং ইরিটেশন-এর সমস্যাও শুরু হয়। সেজন্য লিপস্টিক কেনার সময় দেখে নেওয়া বাঞ্ছনীয় যে তাতে ন্যাচারাল প্রিজারভেটিব্স-এর সঙ্গে এসেনশিয়াল অয়েলও পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা।

কপালের টিপ এবং সিঁদুর: ট্র্যাডিশনাল লুক-এর জন্য মেক-আপের সঙ্গে টিপ এবং সিঁদুর অপরিহার্য। কিন্তু দীর্ঘ সময় টিপ এবং সিঁদুর পরে থাকলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেক সময় টিপের পিছনের আঠা ভালো হয় না। আমাদের অভ্যাস একটা টিপ আয়না বা কিছুর গায়ে আটকে রেখে বারবার ব্যবহার করা। এর থেকে স্কিন অ্যালার্জি হওয়ার ভয় থাকে।

সিঁদুরে রেড লেড থাকে যেটা চুল পড়ার প্রধান কারণ। এছাড়াও যে-অংশে সিঁদুর লাগানো হয় সেখানটা ড্রাই হতে থাকে। তার উপর শরীরের জন্যও এটি অপকারী। সুতরাং টিপ এবং সিঁদুর ভালো কোম্পনির ব্যবহার করাই বাঞ্ছনীয়।

নেল পেইন্ট: নেলপলিশ লাগাবার সঙ্গে সঙ্গে এখন নেল আর্টে-রও চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নেলপলিশ এবং নেলরিমুভার ব্যবহার করার পর নখে হলুদ রঙের পরত পড়তে থাকে এবং নখ দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে নখে সবসময় নেলপলিশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও লাগিয়ে রাখতে হয়। এতে থাকে ফর্মালডিহাইড, টলিউন-এর মতো কেমিক্যালস। এগুলি নখকে ভঙ্গুর, হলুদ করে তোলে। এছাড়াও ফার্টিলিটির উপরেও প্রভাব ফেলে।

নেলরিমুভারেও অ্যাসেটোন টলিউন, মেথানলের মতো কেমিক্যালস ব্যবহার করা হয়— যেগুলি ক্যান্সার, স্কিন অ্যালার্জি এবং মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই, কেমিক্যাল-ফ্রি নেলপলিশ এবং রিমুভার ব্যবহার করা উচিত। নেলপলিশ লাগাবার আগে প্রোটেকশন হিসেবে বেস কোট অবশ্যই লাগানো বাঞ্ছনীয়।

ক্রিম এবং লোশন: অনেক ফেস ক্রিম থেকেই অ্যালার্জি হতে পারে কারণ ক্রিমে কেমিক্যালস ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ত্বকের ধরন না জেনেই ক্রিম ব্যবহার করলে সেটা অ্যাকনে, স্কিন ইচিং, পোরস ব্লগ হয়ে যাওয়ার সমস্যা ইত্যাদির কারণ হয়ে ওঠে। অনেক ফেস ক্রিম, লোশনে মিনারেল অয়েল থাকে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক এবং ত্বাকের পোরস ক্লগ করে দেয়। এর ফলে টক্সিক ত্বকের বাইরে বেরোতে পারে না এবং অ্যাকনের মতো সমস্যার সৃষ্টি করে। এতে থাকা প্যারাবেনস অ্যালার্জির সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট করে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...