যে-সমস্ত ই-কমার্স সংস্থা নকল ব্র্যান্ড-এর জিনিস বিক্রি করে না, তাদের থেকে কেনা জিনিসও অনেক সময় ফেরত দেবার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ, ছেঁড়া কিংবা মাপে ছোটো জামাকাপড়, ত্রুটিযুক্ত কোনও ইলেক্ট্রনিক্স জিনিসপত্র প্রভৃতি অনেক সময় বদলে ঠিকঠাক জিনিস নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু অনলাইন কেনাকাটায় একবার যদি কোনও জিনিস ত্রুটিযুক্ত বেরোয়, তাহলে বিশাল ঝামেলার ব্যাপার। প্রথমে চিঠি লিখতে হবে, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সেই অভিযোগ-পত্র পাঠাতে হবে ই-কমার্স সংস্থার কাছে এবং এরপর ধৈর্য নিয়ে কার্যসিদ্ধির অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে। আর দামি জিনিস সহজে যদি বদলে না নেওয়া যায়, তাহলে আইনি সাহায্য নিয়ে সেই জিনিস আদায় করাও খুব কঠিন কাজ। অর্থাৎ, অনলাইন কেনাকাটায় যেমন বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, ঠিক তেমনই সতর্কতা অবলম্বনও জরুরি।
বিশেষ পরামর্শ
যখনই কোনও জিনিস কেনার কথা মনে হবে সেটি একটি ফর্দ-তে আপডেট করতে থাকুন। সময়ের আগেই কি আপনার সব টাকা খরচ হয়ে যায়? এখনও পর্যন্ত আপনি কোনও টাকা বাঁচাতে পারেননি? তাহলে আমাদের দেওয়া এই সাধারণ টিপসগুলি আপনার দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলুন। দেখবেন কিছু না কিছু আপনি বাঁচাতে পারছেন।
১) ভালো একটি প্ল্যান বানান
কি খুব আশ্চর্য হচ্ছেন তো? জেনে রাখুন, শপিং করতে যাওয়ার ঠিক আগেই কখনও ডিসাইড করবেন না কী কিনবেন দোকান থেকে। বরং যখনই কিছু কেনার কথা মনে হবে, একটি ফর্দ-তে সেটি আপডেট করতে থাকুন। দোকানে গিয়ে সেটি চোখে পড়লেই কিনে ফেলুন প্রয়োজন অনুযায়ী এবং সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচান।
২) কেনার কী কী আছে সেই হিসেব মতো লিস্ট বানান
যা যা কেনার আছে সেগুলি গ্রুপে ভাগ করে নিন। এতে বুঝতে পারবেন কোন দোকানে গেলে কোন জিনিস পাবেন এবং মোট ক’টা আলাদা আলাদা দোকানে আপনাকে যেতে হবে। এই প্ল্যানিং করা থাকলে আপনার টাকা ও সময় দুটোই বাঁচবে। যেমন মুদির দোকানের আলাদা, সবজির দোকানের আলাদা লিস্ট— এইভাবে চাহিদাটাকে গুছিয়ে নিন।
৩) লিস্ট–টাকে এড়িয়ে যাবেন না
বিশেষ কারণের জন্য আপনি লিস্ট-টা বানিয়েছেন, সুতরাং সেটাই ফলো করুন। ফর্দ অনুযায়ী চললে আজেবাজে জিনিস কেনা আটকাতে পারবেন এবং অর্থেরও সাশ্রয় হবে।
৪) একমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসই একসঙ্গে অনেকটা কিনুন
বেশিরভাগই আমরা নানা অফার্স, ফ্রি গিফট বা একটার সঙ্গে আরেকটি ফ্রি ইত্যাদি লোভনীয় প্রস্তাব দেখে, কেনার সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কিনে ফেলি। বরং ভ্যারাইটি জিনিস কিনুন যাতে দু’দিন পরেই জিনিসটির প্রতি আপনার বিতৃষ্ণা না আসে। সেইসঙ্গে, একসঙ্গে একই জিনিস একগাদা কেনার ফলে জিনিসটির অপচয়ও হয় এবং বাজে টাকা খরচও হয়।
৫) এক সপ্তাহের প্রয়োজনের লিস্ট তৈরি করুন
রোজ কিছু না কিছু কিনতে দোকানে যাওয়ার বদলে আপনি পুরো সপ্তাহে কী কী লাগবে তার একটা লিস্ট তৈরি করুন এবং সেইমতো জিনিস কিনুন। নেক্সট কবে আবার শপিং করবেন সেটাও ঠিক করে নিন। এর ফলে বাড়িতে হঠাৎ কোনও জিনিস ফুরিয়ে যাওয়ার সমস্যায় আপনাকে পড়তে হবে না এবং একসঙ্গে বেশি জিনিস কিনলে কিছুটা সস্তায়ও জিনিস পাওয়া যায়।
৬) পিক আওয়ার্স–এ শপিং করবেন না
যখন ভিড়ভাট্টা কম হয়ে যায়, তখনই শপিং করতে যান। এতে পেমেন্ট করার সময়ও সুবিধা হবে, ছোটো লাইনে দাঁড়াতে হবে। সাধারণত সন্ধের পর থেকে কিংবা রবিবারের দুপুরে শপিং করাটা এড়াতে পারলেই ভালো হয়। এই সময় বেশিরভাগ মানুষই দোকান বাজার করতে বেরোয় এবং ভিড়ের মধ্যে হামেশাই প্রয়োজনীয় জিনিসটাই আমরা কিনতে ভুলে যাই এবং ঠিকমতো দামাদামি না করে কেনার ফলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়ে যায়।
৭) শপিং–এর লিস্ট সবসময় কাছে রাখুন
দোকানে পৌঁছে যাবার পর আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি লিস্ট-টা বাড়িতেই ফেলে এসেছি। তাই শপিং করতে যাওয়ার আগে মনে করে লিস্ট-টা সঙ্গে রাখুন। যখন আপনার হাতে শপিং-এর জন্য সময় কম থাকবে তখন দেখবেন লিস্ট-টার থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। আর লিস্ট থাকলে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বাজে খরচও হবে না।
(সমাপ্ত )