প্রঃ আমি পঞ্চাশ বছরের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে৷ মেনোপজ-এর এই পর্বে আমি মানসিক ভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছি৷ সুন্দরী বলে আমার বন্ধুমহলে বেশ খ্যাতি আছে৷ কিন্তু এখন বেশ বুঝতে পারছি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার সৌন্দর্যের ধার কমছে৷ ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ছে৷ বলিরেখার সমস্যা শুরু হয়েছে৷ চোখের কোলে ব্যাগস হচ্ছে, যা কোনওদিন ছিল না৷
এই পরিস্থিতিতে আমি ভীষণ ভেঙে পড়ছি আমাকে দেখতে খারাপ হয়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরে৷ আজকাল আমি পার্টিতে গেলে একটু হেভি মেক-আপ করে খুঁতগুলো ঢাকার চেষ্টা করি৷ কিন্তু ক’দিন আগে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে হালকা সেজে গিয়ে হল বিপত্তি৷ সকলেই প্রায় হই হই করে উঠল আমার বয়সের ছাপ নিয়ে৷
মেনোপজ কি তাহলে আমাকে শ্রীহীন করে তুলবে? আমি ভীষণ মানসিক কষ্টে ভুগছি৷ দয়া করে বলুন এই পর্যায়ে নিজেকে মেনটেইন করব কী করে?
উঃ মেনোপজের সময়ে ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন ব্যাহত হয়। ত্বকের নীচে ফ্যাট কমতে শুরু করে। এছাড়া হরমোনগত পরিবর্তনও ত্বকে বদল আনে। তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় করণীয় কী?
বয়স বাড়লে বলিরেখা দেখা দিতে আরম্ভ করে। আপনি অবশ্যই বলিরেখা বাদ দিতে পারবেন না। তবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। ত্বকে স্পট দেখা দিতে শুরু করে মেনোপজের সময়ে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন স্পট দূর করতে।
ত্বক হাইড্রেটেড রাখাও এই পর্বে ভীষণ জরুরি। ঘন ক্রিম ব্যবহারে ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে হবে। আপনার ত্বকের অয়েল গ্ল্যান্ডগুলো কার্যকর থাকে না। তাই ঘন ক্রিম ব্যবহার করার অভ্যাস করুন।
এছাড়া জেট পিল বিউটি ট্রিটমেন্ট-এর সাহায্য নিতে পারেন৷ ‘জেট পিল’ হল এমন একটি পেনলেস ট্রিটমেন্ট, যেটি কেবলমাত্র ত্বকের উপরিভাগেই নয়, এয়ারসোল স্প্রে-র মাধ্যমে ত্বকের গভীরে ঢুকে অক্সিজেন, জল এবং অ্যাকটিভ সিরামের সাহায্যে স্কিন রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। যার ফলে স্কিনে আল্ট্রা হাইড্রোজেনের ঘাটতি পূরণ হয়। রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে ত্বক হয় ঝকঝকে পরিষ্কার, মরা কোশবিহীন এবং আর্দ্রতা সম্পন্ন। এটি বলিরেখা ও অবাঞ্ছিত দাগছোপ দূর করার জন্য ভীষণ ভাবে কার্যকরী। এছাড়া মাসে একবার করে ফেসিয়াল করান৷ এতেও স্কিনের গ্লো বজায় থাকবে৷
প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এমন খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অনেক খাবারেই কোলাজেন পাওয়া যায়৷ বিশেষত গাজর, পুঁইশাকে কোলাজেন পাওয়া যায়। তাই সবজি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল-ফলাদি গ্রহণ করুন।
স্ট্রেস হরমোন বিভিন্ন ভাবে ত্বকে প্রভাব ফেলে। তাই স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। আপনি যোগ ব্যায়াম কিংবা এক্সারসাইজের মাধ্যমে স্ট্রেস কমাতে পারেন। রাত জেগে থাকাটা একটি বাজে অভ্যাস। নিয়মিত ঘুম এবং পরিমিত বিশ্রামের মাধ্যমে শরীর ও মনের সুস্থতা নিশ্চিত করুন।আর অযথা সৌন্দর্য কমে যাচ্ছে এই ভয়ে স্ট্রেস বাড়িয়ে তুলবেন না৷ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় পরিবর্তন আসবেই৷ সেটা মেনে নিতে চেষ্টা করুন৷ বরং আপনি আপনার ব্যক্তিত্ব ও কাজের মধ্যে দিয়ে সকলের প্রশংসার যোগ্য হয়ে উঠুন৷ সমাজসেবামূলক কাজ করুন বা সাংস্কৃতিক কাজে মনোনিবেশ করুন৷ এর ফলে বাজে চিন্তায় আপনার মানসিক সমস্যা হবে না৷