সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ দেখে সোহা অর্থাৎ সোহিনী। অনলাইন ছিল। ফোন করে।

—কার সাথে দেখা হয়েছে রে? বল না।

—অতই সহজ। আগে তুই বল?

—পার্থ?

—না।

—তাহলে নিত্যা আর না হলে স্মিতা।

—না, কোনও মেয়ে নয়।

—ওহঃ এবার বুঝেছি, পলাশ। কেমন আছে? ওর বউ কেমন দেখতে রে! বুকের ভেতরটা কেমন চিনচিন করে উঠল। আমার কথা কিছু জিজ্ঞেস করল?

—না, তোর পলাশও নয়।

—তাহলে আমি পারব না। বলবি তো বল, নয়তো ফোন রাখছি। কাজ আছে।

—নির্মল !

—মানে? নির্মল স্যার?

—হ্যাঁ। তবে আমাকে নির্মল নাম ধরে ডাকতে বলেছে। একসাথে লাঞ্চ করলাম রেস্টুরেন্টে। ফোন নম্বরও নিয়েছে। আপনি না বলে তুমি

বললে খুশি হবে তাও বলেছে। বাড়িতেও ইনভাইট করেছে। সবচেয়ে বড়ো কথা আমার অপেক্ষায় আছে।

—সত্যি! এ তো অবিশ্বাস্য। স্যার যে এত রোমান্টিক কখনও বোঝা যায়নি। কেমন লাগছে দেখতে!

—আমার তো ভালো লাগে নির্মলকে। এখন আরও ভালো লাগল এত বছর পর দেখলাম যখন।

—এত বছর পর তাহলে তোর বিয়ের সময় হল বল! আমি তো দুই পক্ষে আছি। দুই বাড়িতে যাব, আগে থেকেই বলে দিচ্ছি।

—কয়েকটা মাস একটু প্রেম করতে চাই। তারপর বিয়ে।

—একদম। প্রচুর দুঃখে তোর দিন কেটেছে ভগবান এতদিন পর খুশির ঝাঁপি খুলেছেন। জীবনে সবকিছু মাপা। সুখ-দুঃখের হিসাবও সমান সমান। ভালো কাটুক ভবিষ্যৎ জীবন। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল। আর হ্যাঁ দু’জনের একসাথে ছবি তুলে পাঠাবি অবশ্যই।

—এখনও কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ইনভিটেশন পাইনিরে! পাই আগে।

—পাবি। পাবি। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড সি। এই রাখি এবার। অবশ্যই আপডেট দিবি।

—আচ্ছা, বাই।

মন কী ভীষণ ফুরফুরে! এত আনন্দ মনে। ফোন এসেছে। রিসিভ করে।

—কী করছ প্রিয়া?

—এই তো সোহার সাথে কথা বলছিলাম।

—তোমার সাথে যে থাকত সেই মেয়েটি?

—হ্যাঁ।

—কী বললে? আমার কথা?

—তা একটু বললাম।

—আমার কথা ভাবছিলে এতক্ষণ। খুব ভালো।

—কাল শনিবার। তোমার অফিস ছুটি। আমারও অফ ডে। তাহলে আগামীকাল লং ড্রাইভে। সারাদিন আমার সঙ্গে। তোমাকে তোমার বাড়ি থেকে তুলে নেব। মায়ের পারমিশন নিয়ে তবে নিয়ে যাব। সোমা যাবে তবে সুকন্যার সঙ্গে খেলবে।

—কাল দেখা হচ্ছে। আমাদের ফার্স্ট ডেট।

—যদি না যাই।

—জোর করব। আর ছাড়ছি না। আগেই তো বলে দিয়েছি।

নির্মলের প্রতিটি কথা যেন হৃদয়ে দোলা দিচ্ছে। কী যে ভালো লাগছে। কাল দেখা হবে ভেবেই পুলকিত, রোমাঞ্চিত। মনে হচ্ছে এখনই যেন পেরিয়ে যায় আজকের দিন!

রাতে আবার ফোন করেছে নির্মল। রাতেই সুকন্যা ও মাকে ব্যাপারটা বলে রাখে। মা ভীষণ খুশি।

কতদিন পর সাজল প্রিয়া, নির্মল হাঁ করে তাকিয়ে! সুকন্যাকে বলে নির্মল—

—মামিমাকে খুব সুন্দর লাগছে বল। লজ্জায় লাল হয়ে গেছে প্রিয়া!

সিট বেল্ট লাগিয়ে দেওয়ার অছিলায় প্রিয়াকে প্রথম ছোঁয়া নির্মলের। ফিসফিস করে বলে এই তো সবে শুরু। ভালোবাসায় ভরিয়ে দেব। অনেক অনেক দিনের প্রার্থনা ভগবান শুনেছেন। বিয়ের আগে এমন সুন্দর কিছু মুহূর্ত শুধু তোমার সাথে কাটাতে চাই। গাড়ি স্টার্ট দিয়েছে। প্রেমের জোয়ারে ভাসছে দু’জনে।

নির্মলের অনুরোধে গান শুরু করতেই হল প্রিয়াকে। প্রিয়া গাইছে— আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ, সুরেরও বাঁধনে…   

(সমাপ্ত)

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...