ওহ। এক্সট্রিমলি সরি।
—সোমার কোন ক্লাস?
—ক্লাস এইট।
—ম্যাম যে ভীষণ সুন্দরী মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছে।
—হ্যাঁ ঠিকই বলেছ। মামার মতো ভাগ্যিস হয়নি। হলে আর বিয়ে হতো না। হো হো করে হাসেন।
এত বছর পর স্যারের ব্যবহার কেমন যেন বন্ধুর মতো মনে হয় প্রিয়ার।
—চলো প্রিয়া অনেক বছর পর দেখা হল, কাছেই একটা ভালো রেস্টুরেন্ট আছে। আমরা মামা-ভাগ্নি মাঝে মাঝে যাই। লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে। খেতে খেতে গল্প করা যাবে।
—আজকের লাঞ্চ আমার তরফ থেকে।
—এমনিতে অসুবিধা নেই, তবে মাকে একটা ফোন করে দিই।
—হ্যাঁ। আমিও দিদিকে ফোন করে দিই। দাঁড়াও গাড়ি নিয়ে আসি।
সুকন্যা, সোমা নিজেদের মধ্যে গল্পে মেতে গেছে। নির্মল স্যার গাড়ি নিয়ে এসেছে।
—আন্টি আপনি সামনে বসবেন প্লিজ। আমি আর সুকন্যা পিছনের সিটে তাহলে বসব।
দরজা খুলে স্যার দাঁড়িয়ে আছেন। স্যারের কাছে গিয়ে গাড়িতে উঠতে গেলে আবার সেই বুকের ভেতর উথালপাথাল শুরু হয়ে যায়। বছর বারো আগের স্মৃতি মনে পড়ে যায়। এতদিন পর আবার এইভাবে দেখা হবে স্বপ্নেও ভাবেনি কখনও প্রিয়া।
সুকন্যা স্কুল বাসে যাতায়াত করে। দাদা বউদির অ্যাক্সিডেন্টের পর মিঠিকে নিয়ে কোথাও যায়নি প্রিয়া। বাইরে বেড়াতে নিয়ে যেতে প্রচুর ভয় হয়। চোখের সামনে ভেসে ওঠে দাদা বউদির মুখ।
—তারপর, কী করো এখন?
—চাকরি। দশটা পাঁচটার ডিউটি। শনি রবিবার ছুটি।
—আচ্ছা সরকারি চাকরি।
—একদিন এসো আমাদের বাড়ি। দিদি খুব খুশি হবে। তোমার গল্প খুব করতাম একসময়। দিদি আমার বন্ধু।
—আমার গল্প, কেন?
—বাহ রে, কেন নয়! আমার ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট, সুন্দর গান গাইতে পারে এবং আমার প্রতি যে-অনুরক্ত সেটা বোঝা যেত। বুঝতে যখন পেরেছিলেন তখন বলেননি কেন?
—কী করে বলি! আমার বয়স যে তেমার থেকে অনেকটাই বেশি। সুন্দরী ছাত্রী শেষে স্যারকে প্রত্যাখ্যান করবে মেনে নিতে পারতাম না। এমনিতে যা দেখতে আমায়! বুঝতেই পারছ! হেসে ফেলে প্রিয়া।
—আজকে মনে হচ্ছে খুব মুডে আছেন।