উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে গেছে। আবহাওয়াও এখন উৎসবের রেশ টেনে আনন্দে ঝলমল করছে। মানুষের ঢল নেমেছে দোকানে বাজা্রে, আসন্ন পূজার কেনাকাটা সারতে। দোকানীরাও তাদের নতুন পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায়। কী বলছেন ক্রেতা থেকে বিক্রেতারা? এ বছরে Festive Fashion নিয়ে তাঁদের মতামতটাই বা কী?
জমজমাট উৎসব মানেই প্রথমেই মনে আসে কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্ম। অবশ্য যুবসমাজকেও উপেক্ষা করা যায় না। এখন সকলেই Fashion নিয়ে খুবই সচেতন। আগে শাড়ি ছাড়া পূজার সাজ কল্পনা করা যেত না কিন্তু এখন প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মিশেল এই নতুন প্রজন্মের কাছে সবথেকে গ্রহণযোগ্য। স্কার্ট সবসময়েই মেয়েরা পছন্দ করে তবে এই বছর মিনি স্কার্ট থেকে একটু লং স্কার্ট-ই বেশি কেনাকাটার লিস্ট-এ রয়েছে। এই লং স্কার্টের সঙ্গে ইন করে ক্যাজুয়াল টপ বা টি-শার্ট তো আছেই সঙ্গে কুর্তিও স্কার্ট-এর সঙ্গে ফ্যাশন এ ভীষণ ভাবে ইন।
ডেনিম সারাবছরই ফ্যাশনে ইন। টাইট ফিটিং জিনস-এর ফ্যাশন প্রতি বছরই থাকে তবে জিনস এর উপর নানা ধরনের কারুকাজ বিশেষ করে মেয়েদের জিনস-এ, প্রতি বছর আলাদা আলাদা সংযোজন হয়। এবারে হালকা ঢিলেঢালা অথবা বেলবটম জিনস খুবই পছন্দের তালিকায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সঙ্গে টি-শার্ট, ক্রপ টপ কিংবা এথনিক কুর্তি বেছে নিচ্ছেন তরুণীরা কুল লুক পেতে। সঙ্গে ট্রাই করতে পারেন ক্যাজুয়াল স্যুট। মেয়েরা এবং একটু বয়স্করা পছন্দমতন পালাজোও কিনছেন উৎসবের পরিবেশ ধরে রাখতে। ফ্লাওয়ার মোটিফ, জ্যামিতিক নকশার জমকালো প্রিন্টের জামা ছেলে মেয়ে সকলেই বেশ পছন্দ করছেন। লেপার্ড প্রিন্ট, জেবরা বা কার্টুন প্রিন্টের পোশাকও খুব হিট এবছর। লেগিংস কিন্তু পূজার কেনাকাটায় মাস্ট আইটেম। যারা জিনস পরতে চান না তারা অনায়াসে কুর্তির নীচে লেগিংস গলিয়ে ইন্সট্যান্ট শারদীয়া লুক তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সঙ্গে অবশ্যই থাকছে Fashion-এর জন্য ঝোলা দুল, কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ।
এথনিক লুক অনেকেরই পছন্দ এখন। এথনিক লুকের কথা যখন উঠলই তখন শাড়ির কথা বলতেই হয়। উৎসবের ফ্যাশন শাড়ি ছাড়া অসম্ভব। তরুণী থেকে বয়স্ক, সকলেই একটা দিন অন্তত শাড়িতে সেজে উঠতে চান। ২০২৩ এ সুতির শাড়ির প্রতি মেয়েদের প্রচণ্ড ক্রেজ দেখা যাচ্ছে। এই বছর নান্দনিক নকশায় সেজে উঠেছে ফুলিয়ার তাঁতের শাড়ির সম্ভার। জামদানির অপূর্ব সব নকশায় বাজার রমরম করছে। ক্রেতাদের কাছে ঢাকাই শাড়ির চাহিদাও তুঙ্গে। বাংলার কাঁথার নকশার সিল্কের শাড়ি বাঙালি, অবাঙালি সকলেই কাছেই প্রিয় এটা দোকানের কেনাকাটাই প্রমাণ করছে। শিল্পীরা প্রতি বছরের মতো এ বছরও শাড়ির নকশায় প্রচুর বৈচিত্র্য এনেছেন ক্রেতার ডিমান্ড বুঝে। অ্যাপলিক, হাতে আঁকা ডিজাইনের শাড়ি, ব্লাউজ এবছরের পূজার বাজার মাত করে রেখেছে।
আধুনিক হোক কিম্বা সাবেকি, মেয়েদের পোশাকে কারুকাজ করা বেল্ট এখন খুবই জনপ্রিয়। শাড়ি, ড্রেস বা কুর্তি, সুতোর কারুকাজ করা বা জরির নকশাদার বেল্ট এই পূজায় আপনার সাজকে পূর্ণতা দিতে পারে। পাথর বা বিডসের নানা রকমের স্টেটমেন্ট গয়না, কস্টিউম জুয়েলারি বা নজর কাড়া অন্য রকম গয়না দিয়ে নিজের সাজ পূরণ করতে পারেন। ডোকরার গয়না আর মাটির গয়না নিয়ে Fashion বহু দিন ধরেই চলছে। এবারে নতুন কিছু করতে চাইলে ডোকরার সঙ্গে মাটির গয়নার মিশেলে যদি তৈরি করতে পারেন কানের দুল বা গলার হার, তা হলে আপনার সাজ হবে একেবারে অন্য রকম।
সাজে আধুনিকা হতে চাইলে অথবা ফিউশন লুক যদি পছন্দ করেন তাহলে ভারী অক্সিডাইজড হার কিংবা বড়ো ভারী দুল, সঙ্গে হাতে কয়েক গাছা ভারী অক্সিডাইজড চুড়ি পরে নিলেই মুহূর্তে আপনার সাজ হয়ে যাবে নজরকাড়া। জেনে রাখতে হবে যে, শুধু শাড়ি বা কুর্তির সঙ্গেই নয়, অক্সিডাইজড জাঙ্ক জুয়েলারি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন সাজের সঙ্গেও। এই ধরনের গয়নায় মিনাকারির কাজও এখন খুব Fashion, সেগুলো দেখতে যেমন দুর্দান্ত, তেমনি সাজেও আনতে পারে নতুন চমক। জাঙ্ক জুয়েলারি মানেই সবসময় ভারী হবে এমনটা কিন্তু নয়। অক্সিডাইজড ছোটো ছোটো দুল, লেয়ার নেকলেস বা হাতের নানা ধরনের গয়না কিনেই পুজোতে তাক লাগাতে পারেন আপনি। শুধু উৎসব তো নয়, অফিস যেতে বা বাড়ির বাইরে এমনিও বেরোতে হলে কুর্তি বা জিনস, শার্টের সঙ্গেও অক্সিডাইজড গয়না কিন্তু সবসময় দারুণ মানানসই।