নতুন মাতৃত্বের স্বাদ যেমন মিঠে তার সঙ্গে থাকে তেমনি দায়িত্ব। সন্তানের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নানাজনের নানা পরামর্শ নতুন মায়েদের দেওয়া হয়। এভাবে মালিশ করবে, এই প্রোডাক্ট ছাড়া অন্যকিছু ব্যবহার করবে না, এই তেল বাচ্চার মালিশের জন্য সবথেকে ভালো, বাচ্চাকে এইভাবে ধরা উচিত— এমনই আরও নানা পরামর্শ। এতে নতুন মা ধন্দে পড়ে গেলেও চেষ্টা করেন নিজের সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে সকলের নির্দেশই মেনে চলার। কিন্তু একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, মায়ের থেকে নিজের Child Care-এর অন্য আর কেউ বেশি করতে পারে না। শীতকালে শিশুর কীভাবে যত্ন নিতে পারবেন তারই কিছু টিপ্‌স এখানে দেওয়া হল –

শিশুর জামাকাপড় হওয়া উচিত আরামদায়ক

নবজাতককে অভ্যর্থনা জানাতে বাড়ির প্রতিটি সদস্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। শিশুকে আরামে রাখতে সম্ভাব্য সবরকম প্রচেষ্টা তারা করে থাকেন। শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে শিশুর যাতে কোনওরকম কষ্ট না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় জামাকাপড় কিনে আগে থেকেই বাড়িতে মজুত রাখা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই ভুল করে বসে, বাচ্চাকে ঠান্ডায় ওয়ার্ম রাখতে গিয়ে কমফর্ট-এর ব্যাপারটা খেয়াল করতে ভুলে যান। বাচ্চা যদি আন-কমফর্টেবল ফিল করে, তাহলে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারবে না এবং বাচ্চাকে দেখেই বুঝতে পারবেন, কোনও কারণে বাচ্চা অস্বস্তি বোধ করছে।

সেজন্য শীতের জন্য বাচ্চার পোশাক বাছার সময় মোটা উলের পোশাক কেনা বাঞ্ছনীয় নয়, বরং সফট ফেব্রিক-এর তৈরি পোশাক বাছুন। হাতে-পায়ে সবসময় মোজা বা মোটা গ্লাভস পরিয়ে রাখবেন না। হালকা ফ্যাব্রিক-এর তৈরি পোশাকই বাছুন নয়তো ডিসকমফর্ট-এর সঙ্গে বাচ্চার মুভমেন্টও বাধাপ্রাপ্ত হবে।

ভারী উলের পোশাক তখনই বাছুন যখন বাড়ির বাইরে বাচ্চাকে নিয়ে কোথাও যেতে হবে। রুম টেম্পারেচার-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাচ্চাকে জামাকাপড় পরান।

বাচ্চার অসুবিধা বুঝবেন কী করে?

যদি খেয়াল করেন বাচ্চার মুখ লাল হয়ে উঠছে এবং শরীরের তাপমাত্রা প্রয়োজনের থেকে বেশি মনে হয়, তাহলে বুঝতে হবে বাচ্চা অসুবিধায় আছে। এছাড়াও প্রিয়জনের স্পর্শেও যখন বাচ্চা কান্না থামাতে চায় না, তাহলে বুঝতে হবে বাচ্চাকে অতিরিক্ত পোশাকে ঢেকে রাখা হয়েছে, যেটার জন্য বাচ্চা অস্বস্তি বোধ করছে।

হালকা কম্বলই বাচ্চাকে আরাম দেবে

একেই শীতকাল তার উপর বাচ্চার জন্য তার জীবনের প্রথম শীতের মরশুম, সুতরাং সাবধান হওয়াটা খুবই দরকার। বড়োদের কাছে প্রথম প্রায়োরিটি হল বাচ্চাকে ঠান্ডা থেকে প্রোটেক্ট করা এবং যাতে সে নিশ্চিন্তে নিদ্রা যেতে পারে তার সুব্যবস্থা রাখা। কাজেই শিশুকে ভারী কম্বলে ঢেকে রাখতে চেষ্টা করেন বেশিরভাগ অভিভাবকেরাই।

অথচ এটা খেয়াল করা উচিত, নবজাতক শিশুটির ভারী কম্বল বহন করার শক্তি নেই বললেই চলে। এতে বাচ্চা আরাম তো পাবেই না, উলটে সুরক্ষার দিক থেকেও এটা উচিত সমাধান নয়। এত ছোটো বাচ্চা বেশি হাত-পা ছুড়তেও অসমর্থ সুতরাং ভুলবশত ভারী কম্বলে বাচ্চার মুখ যদি ঢাকা পড়ে যায় তাহলে অবস্থা সঙ্গীন হয়ে ওঠারও একটা ভয় থেকে যাবে।

মালিশ দরকার বাচ্চাকে স্ট্রং করতে

নবজাতকের শরীর খুবই স্পর্শকাতর হয় তাই তার দরকার বিশেষ দেখভালের। শীতকালে বাচ্চাকে ওয়ার্ম রাখার সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্ট্রং করে তোলাটাও দরকার। বাচ্চাকে শক্তপোক্ত করে তুলতে মাসাজের একটা বড়ো ভূমিকা রয়েছে। এতে বাচ্চার হাড় শক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চার শারীরিক কাঠামোরও উন্নতি হয়। মাসাজ বাচ্চার ব্লাড সার্কুলেশন উন্নত করে গ্যাস, অ্যাসিডিটির কারণে হওয়া ডিসকমফর্ট-ও দূর করতে সাহায্য করে।\

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...