সেবার আমরা কয়েকজন মিলে বেড়াতে গেছি পাহাড়ে। আমাদের নিজেদের ফ্যামিলি ছাড়াও সঙ্গে আরও দুটি পরিবার ছিল। এমনকী একটি পরিবারে তো ১০ মাসের এক দুগ্ধপোষ্য শিশুও ছিল। সাইড সিয়িং-এ যাওয়ার সময় পইপই করে বারণ করা সত্ত্বেও, শিশুটির মা জোর করে বাচ্চাটিকে পেট ভরে দুধ খাইয়ে সঙ্গে করে নিয়ে বেরোল। এর ফলে গাড়িতে যাওয়ার সময় বাচ্চাটির শরীর এতটাই খারাপ হয়ে পড়েছিল যে, অগত্যা তাকে নিয়ে আমাদের ডাক্তারের কাছে ছুটতে হয়েছিল। এটা চোখের সামনে হওয়া একটা ঘটনা।
এমন ঘটনাও কানে এসেছে যে, সন্তানকে জোর করে খাওয়াতে গিয়ে কোনও কোনও মায়ের হাতে সন্তানের মৃত্যু পর্যন্তও ঘটেছে।
অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসাগত কারণে ডাক্তাররাই বলে দেন বাচ্চার খাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও তাকে জোর করে খাবার খাওয়ানো দরকার। কিন্তু অন্যান্য সাধারণ অবস্থায় শিশুর ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে খাওয়ানোটা অনুচিত।
সারা পৃথিবীতে বাচ্চাদের Force Feed করানো হয়। ভারতও বাদ যায় না। বাচ্চা দুর্বল হলে তো কথাই নেই, অনেক সময় হেলদি বাচ্চাদেরও অভিভাবকেরা জোর করে খাওয়াবার চেষ্টা করেন। অনেক সময় বাচ্চাদের ভয় দেখিয়ে, পছন্দের জিনিস কিনে দেওয়ার প্রমিস করে অথবা গায়ের জোরেও খাওয়ানো হয়ে থাকে। বাচ্চাদের জোর করে খাওয়াবার একটা পদ্ধতি খুব পরিচিত। বাচ্চার নাক চেপে ধরে খাওয়ানো। বাচ্চার নাক চেপে ধরলে শ্বাস নিতে বাচ্চা মুখ খুলবেই আর সেই সুযোগে বাচ্চাকে জলীয় খাবার জোর করে পান করানো হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে বাচ্চা দমবন্ধ হয়ে মারা যেতে পারে অথবা ফুসফুসে সংক্রমণও ঘটতে পারে। এই ধরনের ফোর্স ফিড করার কী অর্থ বলতে পারেন, যেখানে শিশুর জীবনের সংশয় পর্যন্ত ঘটতে পারে!
খিদে পাওয়াটা বাচ্চার স্বাভাবিক আচরণ এবং খিদে পেলে বাচ্চা নিজে থেকেই কেঁদে উঠবে। ১ বছরের পর বাচ্চার মুখের স্বাদ যখন ডেভেলপ করে, তখন বাচ্চাকে যে-কোনও খাবার খাওয়ানোটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে। ফলত ধৈর্য রাখতে না পেরে মা-বাবারা জোর করে বাচ্চাকে খাওয়াতে আরম্ভ করেন।