নি-রিপ্লেসমেন্ট বা হাঁটু প্রতিস্থাপন একটি অস্ত্রপ্রচার পদ্ধতি যেখানে হাঁটুর হাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অপসারণ করা হয় এবং একটি প্রস্থেসিস দিয়ে পুনরুত্থিত করা হয়। সার্জন তখনই হাঁটু প্রতিস্থাপনের অস্ত্রপ্রচারের পরামর্শ দেন যখন ওষুধ এবং ফিজিওথেরাপি হাঁটুর ব্যথার উপশম ঘটাতে ব্যর্থ হয়।
প্রশ্ন: আমার শাশুড়ির বয়স ৬৩ বছর। ডাক্তার ওনাকে নি-রিপ্লেসমেন্ট-এর পরামর্শ দিয়েছে। আমি রোবোটিক নি-রিপ্লেসমেন্ট সম্পর্কে শুনেছি। আমি জানতে চাই যে, নর্মাল প্রসিডিওর থেকে এই পদ্ধতি কি বেশি সুবিধাজনক?
উত্তর: নর্মাল সার্জারির তুলনায় রোবোটিক সার্জারি অনেক বেশি অ্যাকুয়ারেট এবং সঠিক। সার্জারির ফলাফলও খুব উন্নতমানের এবং সেরে উঠতেও বেশি সময় লাগে না। হাঁটু প্রতিস্থাপন করার নর্মাল পদ্ধতিতে ইমপ্লান্ট ঠিকমতো সেট করার জন্য হাঁটুকে ম্যানুয়ালি ঘষা হয়। কিন্তু রোবোটিক-এর ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর সহায়তায় অসুস্থ ব্যক্তির হাঁটুর থ্রি-ডি স্ক্যান করা হয়। প্রথম থেকেই ইমপ্লান্ট ঠিকমতো যাতে ফিট করা হয় তার একটা পরিকল্পনা করা হয়, যাতে অ্যালাইনমেন্ট পারফেক্ট হয়। এতে সুস্থ হাড়গুলি কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পেশিও খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। অ্যালাইনমেন্ট-ও খুব ভালো হয়। সেজন্য রোবোটিক সার্জারি পারম্পরিক হাঁটু প্রতিস্থাপনের থেকে অনেক বেশি ভালো মনে করা হয়।
প্রশ্ন: আমার মা এবং দিদা, দু’জনেরই নি-রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি করাতে হয়েছিল বাতের জন্য। আমারও দুটো হাঁটুতেই আর্থরাইটিস রয়েছে। আমার বয়স ৪৮ বছর। আমাকেও কি নি-রিপ্লেসমেন্ট করাতে হতে পারে?
উত্তর: আর্থরাইটিস রোগটা বংশগত। বংশে কারও থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। প্রাথমিক স্তরে এই রোগে ওষুধ আর এক্সারসাইজ দিয়ে কাজ চলে, ইনজেকশনও প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এতেই অনেকটা আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু এসব করার পরেও আরাম না হলে, বিকল্প হিসেবে সার্জারি বেছে নেওয়া হয়। অর্থোপেডিক সার্জেন ৪৮ বছর বয়স্কদের সাধারণত নি-রিপ্লেসমেন্ট করার পরামর্শ দেন না। এর বদলে অ্যালাইনমেন্ট সঠিক করার সার্জারি করা হয়।
সাধারণত হাঁটুর জোড় একদিক খারাপ হয়, অন্যদিকটা ঠিক থাকে। অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করা হলে হাঁটুর স্বাভাবিক জোড় বজায় থাকে এবং ব্যথারও উপশম ঘটে। এছাড়াও অল্প বয়সিদের জন্য আংশিক হাঁটু প্রতিস্থাপন-এর বিকল্পও বাছা হয়। এতে পুরো জোড়-এর বদলে কেবল ক্ষতিগ্রস্ত অংশই বদলানো হয়ে থাকে। এর ফলে অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠা যায়।
ডা. শেখর শ্রীবাস্তব, সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং এইচওডি অর্থোপেডিক ডিপার্টমেন্ট
সন্ত পরমানন্দ হাসপাতাল, দিল্লি