আজকাল প্রায় সমস্ত মহিলাই নিজের ত্বককে চিরতরুণ রাখতে চান। বয়স বাড়লেও যাতে ত্বকে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব না পড়ে, তাই আধুনিক পদ্ধতির সাহায্য নিতে সকলেই প্রস্তুত। সৌন্দর্যের দুনিয়ায় নবতম জনপ্রিয়তার কারণ হয়েছে হাইড্রা ফেসিয়াল। তাই যারা এতদিন বহুবিধ প্রসাধনী বা ব্লিচ ব্যবহার করেও সুফল পাননি, তারাও সাহায্য নিচ্ছেন এই বিশেষ ধরনের ফেসিয়ালের।

নিজেকে সুন্দর করে তোলার প্রতিযোগিতায় নামেন মহিলারা। কিন্তু তার আগে নিজের ত্বকের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। হাইড্রা ফেসিয়ালের মাধ্যমে স্কিনের ডিপ এক্সফলিয়েশন সম্ভব। এর ফলে স্কিনের টেক্সচার এবং টোন— দুটোই উন্নত হবে।

হাইড্রা ফেসিয়াল কী?

এটি এক ধরনের কসমেটিক প্রক্রিয়া, যা ত্বককে ডিপ ক্লিন করার সঙ্গে সঙ্গে, হাইড্রেটও করে। একটি বিশেষ ডিভাইস-এর সাহায্যে, ত্বকের পোরস থেকে ডেড স্কিন বের করে দেওয়া হয়। এরপর ত্বকে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট-যুক্ত সিরাম প্রবেশ করানো হয়। এর ফলে ত্বক হাইড্রেটেড হয় এবং অ্যান্টি এজিং ব্যারিয়ার সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগে ৩০ মিনিট। কিন্তু এই ফেসিয়ালে স্কিন এতটাই নারিশড হয় যে, ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। স্ট্রেস দূর হয়ে ত্বক ঝলমলিয়ে ওঠে।

অ্যাকনে নিকেশ করে

যখন ত্বক ডিপ ক্লিন করার সুযোগ থাকে না এবং এক্সফলিয়েশন ঠিকমতো হয় না— সে সব ক্ষেত্রে অ্যারে-র প্রকোপ দেখা যায়। স্কিন ম্লান লাগে। কিন্তু এই সমস্যা দূর করা সম্ভব হয় যখন ত্বকের উপর মাইক্রোডার্মাব্রেশন টেকনিক ব্যবহার করা হয়। এটার সাহায্যে বন্ধ পোরসগুলি খুলে, ডেড সেলস পুনরুজ্জীবিত করে তোলা হয়। এর ফলে অ্যাকনে-সহ নানা দাগছোপ দূর হয়ে যায়।

ব্ল্যাক হেডস তাড়ানোর উপায়

ত্বকে যখন অতিরিক্ত পরিমাণে ডেড সেল্স জমা হয়, তখন ব্ল্যাক হেড্‌ড্স দেখা দিতে থাকে। এগুলি দেখতে যেমন খারাপ লাগে, তেমনই ত্বকে নানারকম সংক্রমণের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। হাইড্রা ফেসিয়াল, এক্সফলিয়েটিং এবং এক্সট্র্যাক্টিং পদ্ধতির দ্বারা অ্যাকনে কন্ট্রোল করা সম্ভব। ব্ল্যাকহেড্সও কমে এই প্রক্রিয়ায়। ফলে ত্বক অনেক পরিচ্ছন্ন দেখতে লাগে।

স্কিন এজিং রোধ করতে

কেউ-ই চায় না মুখের রেখায় বয়সের ছাপ পড়ুক। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে-মহিলারা নিয়মিত হাইড্রাফেসিয়াল করান, তাদের মুখে সহজে বয়স ছাপ ফেলতে পারে না। এই ফেসিয়াল ডিপ ক্লিনিং-এ সহায়কই শুধু নয়, পোরসগুলি সংকুচিত করে এবং হাইপার পিগমেন্টেশন ও ফাইনলাইন্স হ্রাস করতেও সক্ষম।

কীভাবে হয় এই ফেসিয়াল

স্টেপ ১: ক্লিনিং: সবচেয়ে আগে স্কিন মসৃণ করা প্রয়োজন। তাই স্কিন টাইপ অনুযায়ী ত্বকের উপর ক্লিনিং প্রোডাক্ট-এর সাহায্যে ক্লিনিং করা হয়। ত্বক যত পরিচ্ছন্ন করা হবে, তত ভালো রেজাল্ট দেবে এই ফেসিয়াল। স্কিন এক্সফলিয়েশন এই ক্লিনিং-এর অঙ্গ। এতে পোরস সংকোচন হয় এবং ডেড স্কিন রিমুভ করাও হয়।

স্টেপ ২: কেমিক্যাল পিলিং: এই পদ্ধতিতে স্যালিসিলিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ও সিরাম ব্যবহারের মাধ্যমে আরও গভীর ভাবে ত্বক পরিষ্কার করা হয়। ত্বকের ভিতরে এই সিরাম প্রবেশ করানো হয়, যাতে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে।

স্টেপ ৩: এক্সট্র্যাকশন: এই স্টেপ-এ ব্যবহৃত হয় ভ্যাকুয়াম এক্সট্র্যাকশন টুল। এর সাহায্যে পোরস-এর মধ্যে জমে থাকা ময়লা বের করে আনা হয়। ত্বকের লেয়ারগুলো ক্লিন করার এ এক অব্যর্থ পদ্ধতি।

স্টেপ ৪: হাইড্রেটিং সিরাম : সব শেষে স্কিনে হাইড্রেটিং সিরাম প্রয়োগ করা হয়। এর ফলে ত্বক ভিতর থেকে হাইড্রেটেড থাকে। ত্বকের টেক্সচারে সামঞ্জস্য আনার এ এক আধুনিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করার পর, আপনি নিজেই স্কিন টোনের বদলটা লক্ষ্য করবেন।

সব ত্বকের জন্যই উপযুক্ত

সবচেয়ে জরুরি বিষয়টি হল— এই হাইড্রা ফেসিয়াল সমস্ত স্কিন টাইপস-এর জন্যই উপযুক্ত। পিম্পল, অ্যাকনে, দাগছোপ ছাড়াও হাইপার পিগমেন্টেশন-এর সমস্যা থেকে মুক্ত করে। টিন এজার বা তরুণি থেকে চল্লিশোর্ধ মহিলারা— সকলেই সুফল পেতে পারেন এই বিউটি ট্রিটমেন্ট-এ। আসন্ন উৎসবে আপনিও ভেবে দেখতে পারেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...