চলছে বর্ষাকাল। বর্ষার বারিধারা  গ্রীষ্মের তপ্ত ধরনির বুকে শীতলতার যেমন  প্রলেপ লাগায়, ঠিক তেমনই সবুজ গাছগাছালি,  প্রাণীজগত, এমনকী মানুষও শীতল প্রলেপে নতুন করে সজীবতা লাভ করে। তবে মেঘমেদুর বর্ষাদিনে অনেক সময়  মন  খানিকটা মেঘলা  হয়ে থাকে।  আর এই মনের মেঘ কাটাতে মুখ্য ভূমিকা নেয়  সংগীত তথা শিল্পের সমস্ত মাধ্যম। কারণ, বর্ষার সঙ্গে সংগীত এবং শিল্পের রয়েছে নিবিড় যোগ। আর এই বর্ষা-সুন্দরীর জন্যই এবার অভিনব মেলবন্ধন ঘটবে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার দুই শিল্পমাধ্যমের। উপলক্ষ্য শুধু অঝোর বৃষ্টিধারা!

আগামী ১৪ আগস্ট বিড়লা আকাদেমিতে সন্ধ্যায় ঘটবে এই অভূতপূর্ব মিলন-পর্বটি। সেতার এবং চিত্রকলার যুগলবন্দিতে বর্ণময় হয়ে উঠবে ‘শ্রাবণ’। বর্ষামুখর সন্ধ্যায় এইভাবে দুই ভিন্ন শিল্পের মিলে যাওয়া নিঃসন্দেহে এক অভিনব প্রয়াস। কলকাতা সাক্ষী থাকবে এমন এক অনন্য সান্ধ্য মিলন উৎসবে!  শহরের দুই উজ্জ্বল সৃজনশীল শিল্পীর হাত ধরেই ঘটবে এই মহামিলন। সেতারে থাকবেন বিশিষ্ট সেতারবাদক দীপাঞ্জন গুহ এবং চিত্রকলায় (পেন্টিং) থাকবেন শহরের অন্যতম গুণী চিত্রকর শুভাশিস সাহা।

সেতারবাদক দীপাঞ্জন গুহ পণ্ডিত কুশল দাসের সুযোগ্য শিষ্য। ইউরোপ আমেরিকা-সহ দেশ-বিদেশের বহু অনুষ্ঠানে দীপাঞ্জনের সেতারবাদন শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে একাধিকবার বাজিয়েছেন দেশের বিভিন্ন মঞ্চে। আমেরিকায় তাঁকে ‘দি মাস্টার অফ ক্রিয়েটিং মুডস থ্রু মেলোডিজ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। সেতারবাদন ছাড়াও দীপাঞ্জন লেখক ও পর্বতারোহী। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক দীপাঞ্জন তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন ‘বেস্ট অল-রাউন্ড গ্রাজুয়েট’-এর সম্মান। অন্যদিকে,  শুভাশিস সাহা এই সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান একজন চিত্রশিল্পী। কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ এবং শান্তিনিকেতনের কলাভবন থেকে তিনি শিক্ষাপ্রাপ্ত। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর আঁকা ছবি প্রদর্শিত হয়েছে।

দীপাঞ্জন গুহ-র সেতারের ঝংকারকে সঙ্গী করে ক্যানভাসে তুলির আঁচড়ে শুভাশিস সাহা জন্ম দেবেন এক নতুন ‘শ্রাবণ’। এমন শ্রাবণ সত্যিই বিরল। দীপাঞ্জন গুহ-র কথায়, “আমাদের এই যুগলবন্দী ‘শ্রাবণ’ একটি অন্য রকমের প্রচেষ্টা। সংগীত ও চিত্রকলা, মানুষের ইতিহাসের এই প্রাচীন এবং অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুই শিল্পমাধ্যমের মেলবন্ধনে, বর্ষার আবহে, একটি যৌথ ভাষ্য গড়ে তোলা – এটিই আমাদের এই যুগলবন্দীর উদ্দেশ্য। শ্রাবণসন্ধ্যায়, সংগীতের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে মঞ্চের উপর একটি বড়ো ক্যানভাস ধীরে ধীরে পূর্ণ হয়ে উঠছে, এই অভিজ্ঞতা আমাদের বেশি হয় না। এর আগেও আমরা বসন্তের আবহে একটি যুগলবন্দী করেছিলাম।”

এমনই এক ‘শ্রাবণ’ সন্ধ্যায় ভেজার অপেক্ষায় থাকুক গোটা কলকাতা।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...