এক কথায় বলতে গেলে, অতিমারির পর বদলে গেছে আমাদের জীবনশৈলী।অনেকদিন গৃহবন্দি থাকার পর মুক্ত হয়ে ইদানীং তেলঝাল-যুক্ত মুখরোচক খাবার হয়তো বেশি খেযে নিচ্ছি আমরা। ফলে, অনেক সময় প্রকট হচ্ছে বদহজমের সমস্যা। এরই পাশাপাশি, বেশি খাওয়া এবং তুলনায় কম পরিশ্রমের জন্য, বাড়ছে দেহের ওজনও। আর এই ওজন বৃদ্ধি এবং বদহজম মানেই হার্ট এবং লিভারের উপর চাপ পড়া। ফলে, যে-কোনও সময হার্ট অ্যাটাক কিংবা লিভারের বড়ো অসুখে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে৷ এই সব শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে বিপদের ঝুঁকি বেড়ে যাবে অনেকটাই। অতএব, সতর্কতা এবং সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
প্রথমেই বুঝতে হবে, একেক জনের মেটাবলিজিম বা হজমশক্তি একেক রকম হয়। অনেক সময় দেখা যায় যে, একই রকম খাবার খেয়েও একজন মোটা হয় কিন্তু আরেক জন হয় না।অনেকের ল্যাকটো বা দুধ হজম করতে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে দুধ বা দুগ্ধ জাতীয় খাবার একেবারে বাদ না দিয়ে, ধীরে ধীরে সেটার সহ্য ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ দুধ হজমে দরকারি ল্যাকটোজ নামে এক ধরনের এনজাইম শরীরে নিঃসরণ বন্ধ হয়ে গেলেও, তা আবার নিঃসরণ শুরু করা সম্ভব। আর এ জন্যই কোন খাবারে হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় বা সমস্যা হয় সেটি জানাটা জরুরি।এছাড়া অনেক সময় নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের অভাবেও হজমশক্তি দুর্বল হয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিলে তা শক্তিশালী করা সম্ভব।
সমস্যামুক্ত হওয়ার উপায়
- প্রথমে, নিজেকে সুস্থ রাখার মানসিক প্রস্তুতি নিন। আগের মতো নিয়ম-নিষ্ঠার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করুন।
- ভোরবেলা বিছানা ছাড়ুন, যোগাসন করুন অথবা হাঁটুন অন্তত তিরিশ মিনিট। এর ফলে শরীর সুস্থ থাকবে এবং মানসিক চাপ কমবে।
- এর পর হালকা গরম জলে এক চা-চামচ পাতিলেবুর রস মিশিযে পান করুন। এতে শরীরে ভিটামিন সি যুক্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং পেট পরিষ্কার থাকবে।
- দিনের এবং রাতের খাবার খেতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে৷ খাবারের পরিমাণ থাকবে অল্প। বেশী তেলঝাল-যুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। পরিবর্তে শাকসবজি, স্যালাড এবং ফলমূল রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। ডিম, মাছ এবং মাংস, অর্থাত্ প্রেটিন-যুক্ত খাবার খেতে হবে অল্প পরিমাণে।
- এ প্রসঙ্গে মনে রাখবেন, আগের স্বাভাবিক জীবনে (অতিমারির আগে) যে-পরিমাণ খাবার খেতেন, তার থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ খাবার কম খাবেন এখন। কিন্তু প্রোটিন এবং ভিটামিন-এ ব্যালেন্স রাখতে হবে।
- কমাতে হবে কার্বোহাইড্রেট-যুক্ত খাবার। তাই ক্যালোরি বেশি আছে এমন খাবার এবং পানীয়, যেমন চকোলেট, আইসক্রিম, পেস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ, ননভেজ চাউমিন, ঠান্ডা পানীয প্রভতি খাওযা বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে, বন্ধ করতে হবে ধূমপান এবং মদ্যপানের কু-অভ্যাস।