করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্বেগ, আতঙ্কে রয়েছেন সবাই। তার উপর কমেছে হাঁটাচলা, পরিশ্রম। সাবধান! করোনা থেকে বাঁচলেও, এই সময় হতে পারে স্ট্রোক। বিশেষ করে যাদের ব্লাড প্রেসার হাই কিংবা যারা ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত, সেইসব মানুষের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য, স্ট্রোক-এর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ দিলেন ডা. অমিত হালদার।
স্ট্রোকের বেশ কয়েকটি আগাম লক্ষ্মণ
- কথা জড়িয়ে যাওয়া
- হাত বা পা দুর্বল হওয়া
- অস্থিরতা বা কম্পন
- দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া বা দ্বিগুণ দর্শন।
কেমন করে জানতে পারব যে আমি অথবা আসপাশের কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত কী না?
স্ট্রোকের আগাম লক্ষ্মণগুলি হলঃ
- কথা জড়িয়ে যাওয়া
- হাত বা পা দুর্বল হওয়া
- অস্থিরতা বা কম্পন
- দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া বা দ্বিগুণ দর্শন
এই লক্ষণগুলি হঠাত্ই শুরু হয়। এগুলির কয়েকটি বৈশিষ্ট্যগত সূচক হলঃ
- মুখের বৈসাদৃশ্য
- অঙ্গশক্তি হ্রাস
- অসংলগ্ন চক্ষু সঞ্চালন বা ঢোক গেলা
স্ট্রোকের কারণ বা রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো কী কী?
স্ট্রোকের প্রধান রিস্ক ফ্যাক্টরসমূহ হলঃ
- পারিবারিক ইতিহাস
- বয়স
- ডায়াবেটিস মেলিটাস
- ডিস্লিপিডেমিয়া বা রক্তে অস্বাভাবিক পরিমাণ লিপিডের উপস্থিতি
- হাইপারটেনশন
- ধূমপান
- স্থুলতা
প্রথম দুটি ফ্যাক্টর অশোধনযোগ্য হলেও ঝুঁকি হ্রাসের জন্য বাকিগুলি সংশোধন করা যেতে পারে।
আসপাশের কাউকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে দেখলে কী করা উচিত?
প্রথম পদক্ষেপ হল, ওই রোগীকে যথাসম্ভব দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে প্রেরণ করা। যথোপযুক্ত (ওয়ে ইকু্ইপড) অর্থে আমরা বলতে চাইছি যে, হাসপাতালটিতে যেন সিটি স্ক্যানার ও নিউরোলজিস্ট-সহ আইসিইউ থাকে, যিনি অ্যাকিউট স্ট্রোক মোকাবিলা করতে সক্ষম।
সময় কেন গুরুত্বপূর্ণ? স্ট্রোকের পর প্রতি মিনিটে ২ মিলিয়ন নিউরনের মৃত্যু ঘটে! সেই কারণে টাইম ইজ ব্রেন।
স্ট্রোক কি শুধু বৃদ্ধ বয়সে ঘটে?
স্ট্রোক যে-কোনও বয়সে হতে পারে। কমবয়সে এটা হয় হৃদরোগ বা ভাস্কুলাইটিস বা থ্রম্বোফিলিক ডিসঅর্ডারের কারণে। ৪৫-এর পর, এটা বেশিরভাগ সময়ে হয় চিরাচরিত রিস্ক ফ্যাক্টর সমূহের কারণে।
কারও কি একাধিকবার স্ট্রোক হতে পারে?
হ্যাঁ পারে। রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি সংশোধন করা না হলে স্ট্রোক বারবার হতে পারে। কি ধরনের চিকিত্সা হয়েছে তার উপর এটা নির্ভর করে।
দুটি মুখ্য টাইপের স্ট্রোক রয়েছে ইস্কেমিক স্ট্রোক ও হেমারেজ। ইস্কেমিক স্ট্রোক বা ইনফার্ক্ট-এর জন্য একটি ক্লট লিটিক এজেন্ট পাওয়া যায়। স্ট্রোকের প্রথম সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে দেওয়া হলে এটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে। এই কারণে যত দ্রুত সম্ভব ইকু্ইপড এমার্জেন্সি-তে যেতে হবে রোগীকে।
ডা. অমিত হালদার
কনসালটেন্ট নিউরোলজিস্ট অ্যান্ড এপিলেপ্টোলজিস্ট
ফর্টিস হসপিটাল, আনন্দপুর, কলকাতা