শহরের দূষিত পরিবেশ এবং অতিরিক্ত চাপযুক্ত জীবন আমাদের শরীরে কোষের গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন করে দিচ্ছে৷ বিপত্তি বাড়ছে তাতেই৷কঠিন শারীরিক রোগ আপনার জীবনের সব দিকে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনার সম্পর্ক,কাজকর্ম, শখ আহ্লাদ এবং আপনার সামাজিক মেলামেশা সবই প্রভাবিত হতে পারে। কঠিন অসুখ আপনাকে বিষণ্ন, চিন্তিত, ভীত বা ক্রুদ্ধ করে তুলতে পারে। আসুন একবার দেখে নেওয়া যাক, কোন দুটি অসুখে মেয়েরা সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হচ্ছেন৷
হৃদ রোগ বাড়ছে মেয়েদের
বর্তমান সময়ে নারী-পুরুষ উভয়েরই জীবনশৈলী একই খাতে বইছে। সুতরাং হৃদরোগও আর শুধুমাত্র পুরুষদের একচেটিয়া নয়। আগের তুলনায় ক্রমশ বাড়ছে মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের সমস্যা।
টোব্যাকো স্মোকিং বা ধূমপানর মাত্রা বেড়ে যাওযার ফলে, আশঙ্কা করা হচ্ছে
মহিলাদের ক্রমবর্ধমান হৃদরোগের এটা অন্যতম কারণ। ধূমপানের জন্যই মহিলাদের
শরীরে নিঃসৃত ইস্ট্রোজেন ও হাই ডেনসিটি লাইপো প্রোটিনের মাত্রা হ্রাস পায়। এগুলিই বস্তুত হৃদযন্ত্রের রক্ষাকবচ। নিঃসরণের মাত্রা কমার ফলে, হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে।
অ্যাক্টিভ স্মোকারদের ক্ষেত্রে তো ঝুঁকি আছেই, সেই সঙ্গে অন্য কারও সিগারেটের
ধোঁযার কারণেও মহিলারা পরোক্ষ ভাবে এই ক্ষতির শিকার হন।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
গ্যাসের ব্যথার মতো কষ্ট শুরু হবে
বমি হতে পারে
কাঁধের মাঝখানে চিনচিনে ব্যথা
বুক ধড়ফড় করা
শরীরে অবশভাব।
ইস্ট্রোজেন-এর ঘাটতি ডেকে আনছে বিপত্তি
জানেন কী, মেয়েদের শরীরে কেন ইস্ট্রোজেন জরুরি?
বড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, মেয়েদের শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। এর বেশির ভাগটাই ঘটে
বয়:সন্ধি সময়ে এই পর্যায়ে হয় ঋতুচক্রের সূত্রপাত।বয়:সন্ধির সময় থেকে
মধ্যবয়স পর্যন্ত ওভারি থেকে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামের দুটি হরমোন নিঃসৃত হয়। মধ্যবযসে পৌঁছে ঋতুচক্র, ক্রমশ অনিয়মিত হতে হতে, পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
মেনোপজের সময়টিতে মেয়েদের ওভারিতে থাকা ডিম্বাণু শেষ হয়ে যায়। এটা প্রাকৃতিক কারণ। কিন্তু যাদের ইস্ট্রোজেন কম থাকার জন্য ঋতুচক্র প্রভাবিত হতে শুরু করে সময়ের আগেই, তাদের গাইনিকোলজিস্ট কনসাল্ট করা প্রয়োজন।
আসলে ঋতুচক্র স্বাভাবিক রাখতে, ভ্যাজাইনা এবং ইউটেরাসের কার্যক্ষমতা
অক্ষুণ্ণ রাখতে, ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই হরমোনগুলিকে সেক্স হরমোনও বলা হয়। ইস্ট্রোজেনের অভাবে অনেকেরই বয়স হওয়ার আগেই, ভুলে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়। হাড় ভাঙাও ইস্ট্রোজেন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
ইস্ট্রোজেন বোন ডেনসিটি বজায় রাখে। খাবারের মাধ্যমে যে-ক্যালসিয়াম আমাদের
শরীরে প্রবেশ করে, তার অনেকটাই ইউরিন ও স্টুলের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক সময় আবার হাড়ের মধ্যে জমা হওয়া ক্যালসিয়াম, রক্তে মিশে যায়।বিভিন্ন হরমোন হাড়ের মধ্যে এই ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এই ইস্ট্রোজেন।
এছাড়াও লিভারে কোলেস্ট্রেরল উত্পন্ন হওয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ইস্ট্রোজেন। ফলে
ধমনীতে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে পারে না। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও তাই কম থাকে।মোনোপজের পর বা আগে, শরীরের ইস্ট্রোজেনের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির দ্বারা।