বাড়িতে অনেকেই পোষ্য রাখেন। তা সে কুকুরই হোক, বিড়াল, খরগোশ, পাখি বা মাছ। ওদের কথা ভেবে তাই শুরু থেকেই স্পেস প্ল্যান করা উচিত। এর ফলে আপনার পোষ্যরা, কমফর্টেবল থাকবে এবং ঘর-ও নোংরা হবে না।

আপনার অ্যাপার্টমেন্ট যদি খুব  বড়ো না হয়,  তাহলে পোষা প্রাণীদের থাকার ব্যবস্থা করুন বুদ্ধি-বিবেচনার সঙ্গে। এমন ভাবে স্পেস প্ল্যান করুন, যাতে বাড়তি জায়গা না লাগে। চাইলে পুরোনো জিনিসকে রি-ইউজ করুন। কিংবা আসবাব এমন ভাবে বানান, যাতে ওটাতেই আপনার পোষ্যকেও অ্যাকোমোডেট করা যায়। অল্প একটু সৃজনশীলতাই হতে পারে পেটস রাখার স্মার্ট সলিউশন।

Keeping space for  pet cats

বিড়ালের জন্য

বিড়াল খুব বড়ো প্রাণী নয়, কিন্তু খেয়াল করবেন এটি অনেকটা জায়গা নিয়ে বিচরণ করে। উঁচু জায়গায় ওঠার একটা স্বাভাবিক প্রবণতা বিড়ালের থাকে। তাই স্পেস প্ল্যান করার সময় বিড়ালের থাকার ও খেলার জায়গার কথা মাথায় রাখুন। বিড়াল যাতে চড়তে পারে সেই রকম ঝোলানো জিনিস বা উঁচু তাকের ব্যবস্থা রাখুন লিভিং রুম-এ। ফ্লোর স্পেস বাঁচিয়ে কাপড় বা কার্ডবোর্ডের হ্যাংগিং বাস্কেট বানিয়ে দিলে, ফ্লোর স্পেস বাঁচবে। ঝোলানোর জায়গাও যদি না থাকে চেয়ার বা টেবিলের নীচে এক ফালি চৌকো কাপড় বেঁধে বিড়ালের শোওয়ার ব্যবস্থা রাখুন। দেয়ালে তাক করে দিন, বিড়াল যাতে চড়তে পারে ওই তাকের ওপর। ব্যালকনিতেও এরকম তাক বানিয়ে দেয়ালে সেট করতে পারেন।

Fish aquarium

মাছেদের জন্য

অনেকেই মাছ ভালোবাসেন। আপনার এই নীরব সঙ্গীটি মুখ ফুটে কিছু চাইতে পারে না। তাই মাছগুলিকে আরামদায়ক ভাবে রাখার ব্যবস্থা আপনাকেই করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি আসবাবকে মাল্টিপল ইউজ করতে পারেন। অর্থাৎ অ্যাকুয়ারিয়াম-টির উপর কাচের টেবিল সেট করে লিভিং রুম-এ রাখতে পারেন। উপরে অ্যাকোয়ারিয়াম, নীচে বন্ধ দেরাজ তৈরি করে জিনিস স্টোর করার কাজে লাগাতে পারেন। দেয়ালের ভিতর দিকেও মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম বানানো যায়।

কুকুর রাখার জন্য

কুকুরদের জন্য একটি পুরোনো ক্যাবিনেট খালি করে দিতে পারেন। সিঁড়ির নীচে জায়গা থাকলে সেটাও কুকুরটির থাকার জায়গা হতে পারে। পুরোনো বাক্স বা তোরঙ্গকে একটু আর্টিসটিক টাচ দিয়ে কুকুরটিকে শোয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। কিচেনে সিলিন্ডার প্রভৃতি রাখা হয় ওয়ার্কিং টেবিলের নীচে। ওখানেই একটা ক্যাবিনেট তৈরি করে করতে পারেন কুকুরের থাকার ব্যবস্থা। টেবিলের নীচে বক্স বানিয়ে সেখানেও রাখতে পারেন পোষ্যটিকে।

খরগোশের জন্য

খরগোশ খুব ভালো পোষ্য হতে পারে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, কুকুর বা বিড়ালের চেয়ে এদের বেশি মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। খরগোশের জন্য বারান্দায় একটি খাঁচা বানান। এই প্রাণীগুলো খায় বেশি। তাই বারবার মলত্যাগ করা, মূত্রত্যাগ করা খুব স্বাভাবিক। নিয়মিত এদের খাঁচা পরিষ্কার করুন। তবে সারাদিন খাঁচায় রাখার দরকার নেই। ওদের ঘরের মধ্যে খেলারও সুযোগ দিন। সাধারণত খরগোশ একই জায়গায় গিয়ে মূত্রত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সক্ষম। ঘরের কোণায় লিটার বিন রেখে সেই অভ্যাস করান।

Keeping pet birds

পাখি পুষতে হলে

এই কংক্রিটের জঙ্গলেও রোজ পাখির কিচিরমিচিরে যদি আপনার ঘুম ভাঙে, এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে পাখি পুষতে হলে, ওদের জন্য স্পেস প্ল্যানিং আপনাকেই করতে হবে। ব্যালকনিতে বা সিঁড়ির নীচে ওদের জন্য খাঁচা বানিয়ে দিন। দেয়াল কেটেও খাঁচা বসাতে পারেন। তবে খাঁচাটা অবশ্যই ম্যাট পেতে, তার উপর রাখুন।

‘ডু ইট ইয়োরসেল্ফ’ (ডিআইওয়াই) আইডিয়া পাবেন ইউটিউ‌ব বা  পিনটারেস্ট-এর মতো সাইট-এ। বাড়িতে বসে নিজেই আপনার পোষ্য রাখার স্পেস ফ্রেন্ডলি ব্যবস্থা করে নিন। এর ফলে পুরোনো ফেলে দেওয়া জিনিসগুলির উপযোগিতাও টের পাবেন আর ওদের জন্য বাড়তি জায়গারও প্রয়োজন হবে না। পুরোনো বাক্স, কৌটো, কাপড়, কার্ডবোর্ড– সবই কাজে লাগতে পারে এই পোষ্যদের বাড়ি বানাতে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...