ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে লিপস্টিকের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে অনেক মহিলাই সঠিক লিপস্টিক বাছতে পারেন না ফলে তার প্রভাব পড়ে তার লুক্স-এর উপর। খুব ভেবে চিন্তে লিপস্টিক বাছা উচিত। পোশাক নির্বাচন করার সময় মহিলারা সাধারণত চোখে কুলিং এফেক্ট দেবে, এমন রং বেছে পরেন। ঠিক সেরকমই লিপস্টিকের শেড এবং ফিনিশ মরশুমের অনুকূল হওয়া উচিত। নিজের স্কিন টোনের বিষয়টা খেয়াল রাখাটা একান্ত জরুরি কারণ লিপস্টিকের শেড স্কিন টোন-কে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। এই মরশুমে গ্লসি-র বদলে ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক-ই ব্যবহার করা উচিত কারণ এটি লাইট এবং সোবার লুক দিতে সাহায্য করে।
কোন স্কিন টোনের জন্য কী রং
স্কিন টোন বোঝার সবথেকে ভালো উপায় হল হাতের কবজিতে যে শিরাগুলি দেখতে পাওয়া যায় তার রং দেখে নেওয়া। শিরার রং যদি নীল হয় তাহলে সেটা কুল স্কিন টোনের প্রতীক এবং শিরার রং যদি সবুজ হয় তাহলে স্কিন টোন ওয়ার্ম হয় সাধারণত। যে-সব মহিলাদের কুল স্কিন টোন হয় তাদের ত্বকের রং পেল হোয়াইট এবং হোয়াইট হয়। কিন্তু ওয়ার্ম স্কিন টোনের মহিলারা হুইটিশ, ডাস্কি অথবা ডিপ ডার্ক কালারের হন। সব রঙের ত্বকের জন্য আলাদা আলাদা রঙের লিপস্টিক লাগানো বাঞ্ছনীয়।
ফরসা অথবা প্রচণ্ড ফরসা (হোয়াইট এবং পেল হোয়াইট) ত্বকে পিংক, কোরাল, নুড এবং বেজ রং খুব ভালো মানাবে
হুইটিশ অর্থাৎ গমরঙা মহিলাদের ত্বকে রোজ রেড, মভ ও বেরি শেড-এর লিপস্টিক খুব ভালো মানায়। এই বর্ণের মহিলাদের কপার এবং ব্রোঞ্জ কালারের লিপস্টিকও খুব ভালো সুট করে
যদি ত্বকের বর্ণ শ্যামলা হয় তাহলে ব্রাউন অথবা পার্পল-এর কোনও শেড-এর লিপস্টিক লাগানো একেবারেই উচিত নয়। অরেঞ্জ রং এই গাত্রবর্ণের সঙ্গে খুবই মানানসই
গাঢ় শ্যামবর্ণের মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্রাউন, প্লাম এবং ওয়াইন কালারের লিপস্টিক খুব ভালো মানায়
লিপস্টিক কেনার সময় খেয়াল রাখুন
ত্বকের রং অনুযায়ী লিপস্টিক কেনার সময়, কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখাটা খুব জরুরি। কোনও কোনও মহিলা চার্ট দেখে অথবা উপর থেকে লিপস্টিকের রং দেখেই লিপস্টিক কিনে নেন। প্রত্যক ব্র্যান্ডেই একটি লিপস্টিকের-ই ২-্৩টি কালার টোন থাকে। কোন রং-টা ঠোঁটের রঙের সঙ্গে ম্যাচ করবে সেটা সবসময় ট্রাই করে তবেই লিপস্টিক কেনা উচিত।
কয়েকটি জিনিসের খেয়াল অবশ্যই রাখা উচিত
নীচের ঠোঁটের রং থেকে ২টো শেড-এর ডার্ক লিপস্টিক বাছা উচিত। রং, ত্বকের রঙের সঙ্গে মানাচ্ছে কিনা পরীক্ষা করার জন্য নীচের ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে রং ভরুন। এবার উপরের ঠোঁটের সঙ্গে মানানসই হচ্ছে কিনা আয়নায় দেখুন। যদি উপর এবং নীচের ঠোঁটের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা ফুটে না ওঠে তাহলে নিশ্চিত হয়ে ওই রঙের লিপস্টিক কিনতে পারেন
লিপস্টিকের আসল কালার এফেক্ট দেখার জন্য, মেক-আপ ছাড়া অরিজিনাল স্কিন টোনের উপর লিপস্টিক লাগিয়ে দেখুন
যদি একসঙ্গে অনেকগুলি লিপস্টিকের শেড কিনতে যান তাহলে প্রথম শেড ঠোঁট থেকে ভালো করে পরিষ্কার করার পরেই পরের শেড-টি ট্রাই করবেন
ম্যাট ফিনিশের জন্য ঠোঁটকে তৈরি করুন
গরমের সময় ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক সবথেকে ভালো বিকল্প কারণ এটি গলে গিয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে না। দেখতেও সুন্দর লাগে কিন্তু এটি লাগাবার কয়েকটি নিয়ম আছে। সেই অনুযায়ী ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক ব্যবহার করা না হলে লুক নষ্ট করে দিতে পারে।
ফাটা ঠোঁটে কখনও ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক লাগানো উচিত নয়। যদি ঠোঁট ফাটা হয় তাহলে ঠোঁট স্ক্রাব করে এক্সফলিয়েট করুন।
ম্যাট ফিনিশ লিপস্টিক ঠোঁট রুক্ষ করে দেয়, সুতরাং এটি লাগাবার আগে বেবি অয়েল দিয়ে ঠোঁট মাসাজ করে নেওয়া উচিত যাতে ঠোঁটের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ফাইন লাইন্স দেখতে না পাওয়া যায়।
ম্যাট লিপস্টিকের ভালো এফেক্ট দেখতে চাইলে, ঠোঁটে প্রথমে কনসিলার লাগান। এতে লিপস্টিকের রং-টা ঠিকমতো ফুটবে
ম্যাট লিপস্টিক লাগাবার সময় ঠোঁটে ২টি কোট লাগানো উচিত এবং ঠোঁট রাব করবেন না।
ম্যাট লিপস্টিক লাগাবার আগে লাইনার ব্যবহার করে ঠোঁট-কে শেপ দিন। গ্লসি লিপস্টিকের মতো ম্যাট লিপস্টিক নিজে নিজে ছড়িয়ে যায় না সুতরাং আউটলাইন এঁকে নিয়ে পুরো ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে নেওয়ার দরকার পড়ে
এই ভুল কখনও করবেন না
পোশাকের রং-কে কমপ্লিমেন্ট করবে, এমন শেডের লিপস্টিক লাগান। তাই বলে পোশাকের রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে কালার বাছবেন না। এই ভুল, পোশাক এবং মেক-আপ, দুটোরই লুক খারাপ করে দেবে
খুব পাতলা ঠোঁটে, গাঢ় রঙের লিপস্টিক কখনও লাগানো উচিত নয়। ঠোঁট আরও বেশি পাতলা মনে হবে
যদি চোখের মেক-আপ হেভি হয় তাহলে ঠোঁট-কে হাইলাইট করার প্রয়োজন হয় না