গরমে ঘামবেন, এ আর নতুন কী? গায়েও না হয় একটু ঘামের দুর্গন্ধ হলই। এই গরমে কী-ই বা করতে পারেন আপনি? এমন ধারণা থাকলে অবিলম্বে বদলে ফেলুন। ভাবুন তো আপনি ঘর্মাক্ত অবস্থায় অফিসে ঢুকছেন। ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার অফিস কলিগরা নাক সিঁটকোচ্ছেন বা কেউ কেউ নাকে রুমাল চেপে ধরছেন। কেমন লাগবে তখন আপনার? আত্মবিশ্বাস একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। বা ধরুন বয়ফ্রেন্ড-এর সঙ্গে ডেট-এ যাবেন। সেখানে অল্পবিস্তর অন্তরঙ্গতা তো থাকবেই। আপনাকে একটু কাছে টেনে নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রাখার গাঢ় গভীর একটা মুহূর্তে আপনার সঙ্গীটি কাছে এসেও আসতে পারল না। বাধা হয়ে দাঁড়াল ওই ঘামের দুর্গন্ধ। ব্যাপারটা কি মন থেকে মেনে নিতে পারবেন? সারা সপ্তাহে হয়তো একটা দিন-ই সুযোগ হয় দেখা করার। অথচ সেই দিনটিতেই আপনি মনমরা হয়ে বাড়ি ফিরলেন। যাতে এরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি। পরিস্থিতি মানিয়ে নিয়ে এই গরমেও কীভাবে দুর্গন্ধমুক্ত তাজা এবং প্রাণবন্ত থাকা যায় বরং সেটার ব্যাপারে সক্রিয় হোন।
আন্তর্জাতিক হাইপারড্রোসিস সোসাইটির রিসার্চ অনুযায়ী আমাদের পুরো শরীরে ৩ থেকে ৪ মিলিয়ন ঘর্মগ্রন্থি থাকে। এর মধ্যে বেশিরভাগ এন্ডোক্রাইন গ্রন্থিগুলি শরীর থেকে বর্জ্যপদার্থ জলীয় আকারে বের করে দেয় এবং সেই সঙ্গে শরীরের তাপের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। আমাদের শরীরে আর-এক ধরনের ঘর্মগ্রন্থিও লক্ষ্য করা যায়। যেগুলিকে আমরা অ্যাপোক্রাইন বলে থাকি। সাধারণত বাহুর নীচের অংশে এবং শরীরে সংযোগস্থলে এই গ্রন্থির উপস্থিতি সবথেকে বেশি লক্ষ্য করা যায়। এই তরল বর্জ্যপদার্থ যখন ত্বকের উপর জমে থাকা ব্যাক্টেরিয়ার সাথে মেশে, তখনই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
ঘাম এবং ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে –
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন হন - সরাসরি ঘামের সঙ্গে দুর্গন্ধের কোনও সম্পর্ক নেই। ত্বকের পরতে ঘাম বসে বসে ব্যাক্টেরিয়ার সংস্পর্শে এলে তবেই দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। সেই কারণেই স্নানের পরে পরেই আমাদের শরীর থেকে কখনও দুর্গন্ধ বেরোয় না। তাই ঘাম এবং ঘামের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটাও জরুরি। চেষ্টা করুন গায়ে ঘাম না বসতে দিতে। শ্যাম্পু, সাবান দিয়ে নিয়মিত স্নান করুন। দেখবেন ফ্রেশ লাগছে। তবে আবার অনেককেই অতিরিক্ত ঘামতে দেখা যায়। তাদের ক্ষেত্রে স্নানের পরে এক মগ জলে ওডিকোলন মিশিয়ে গোটা গায়ে ঢেলে নিন। এতে ঘাম যেমন কম হবে তেমনি একটা মিষ্টি গন্ধও লেগে থাকবে আপনার গায়ে। পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন এসেন্স-এর ওডিকোলন পেয়ে যাবেন আপনি। জলে গোলাপের পাপড়ি ভিজিয়েও স্নান করতে পারেন। অন্তত আধঘন্টা পাপড়ি জলে রাখার পর ওই জলে স্নান সেরে নিন। দেখবেন এই মরশুমেও কেমন সতেজ থাকেন।