ছানি বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক অংশ, কিন্তু সময়মতো সচেতনতা এবং চিকিৎসা পরিসেবা দৃষ্টিশক্তি সঠিক রেখে, জীবনের মান উল্লেখযোগ্য ভাবে উন্নত করতে পারে। কিন্তু এমন অনেক রোগী আছেন, যারা জানেন না যে, তাদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়েছে চোখের অযত্নের কারণে। অর্থাৎ, অবহেলার কারণে তিনি নিজের চোখের অনেকটা ক্ষতি করে ফেলেন।
ছানি সম্পর্কে কমবেশি ধারণা আছে অনেকের। তবুও জানাই যে, ছানি হল চোখের প্রাকৃতিক লেন্সের ঝাপসা ভাব, যা আইরিসের ঠিক পিছনে সৃষ্টি হয়। একটি সুস্থ চোখে যে লেন্সটি রেটিনার উপর আলো ফোকাস করে, যা আমাদের স্পষ্ট দেখতে সাহায্য করে, ছানির সমস্যা হলে সেই স্বাভাবিক লেন্সটি অস্বচ্ছ হয়ে যায়। অর্থাৎ, বার্ধক্য কিংবা অন্যান্য কারণে এই লেন্সটি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। যার ফলে দৃষ্টিও ঝাপসা বা ম্লান হয়ে যায়।
মনে রাখবেন, বিশ্বব্যাপী অন্ধত্বের অন্যতম কারণ ছানি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, বিশ্বের প্রায় ৫১ শতাংশ অন্ধত্বের জন্য ছানি দায়ী। যা ৬৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে প্রভাবিত করে।
আসলে, ছানি ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং প্রথমে লক্ষণগুলি প্রকট হয় না। তবে, চোখের অবহেলা কিংবা অযত্নের কারণে যে-সব লক্ষণ প্রকট হয়, তারমধ্যে রয়েছে—
- ঝাপসা বা কুয়াশাচ্ছন্ন দৃষ্টি
- আলো বা ঝলকের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি
- রাতে দেখতে অসুবিধা
- গাঢ় কোনও রং বিবর্ণ বা হলুদ মনে হওয়া
- চোখের পাওয়ার-এর ঘন ঘন পরিবর্তন
- আলোর চারপাশে বলয় দেখা
ছানি-র কারণ এবং প্রতিরোধ
যদিও বার্ধক্য ছানি-র প্রাথমিক কারণ, তবে অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে—
- ডায়াবেটিস
- দীর্ঘক্ষণ অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে থাকা
- অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন
- কর্টিকোস্টেরয়েডের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার
- চোখে আঘাত
প্রতিরোধ: UV-প্রতিরক্ষামূলক সানগ্লাস পরুন। ডায়াবেটিস-কে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান ত্যাগ করুন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার (সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি, ফল) খান এবং ৪০ বছর বয়সের পরে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করান।
ছানির চিকিৎসা
ছানির একমাত্র কার্যকর চিকিৎসা হল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ঝাপসা করে রাখা আস্তরণ অপসারণ করা এবং এটি একটি কৃত্রিম লেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপন করা। বর্তমানে সবচেয়ে উন্নত এবং বহুল ব্যবহৃত কৌশল হল— ফ্যাকোইমালসিফিকেশন (ফ্যাকো)।





