ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখের এক অত্যাশ্চর্য রোগনির্ণয় পদ্ধতি হল ইনডিউসড স্পুটাম সেল কাউন্ট। যে-সব রোগী গুরুতর অ্যাজমায় ভুগছেন তাদের জন্য এই পরীক্ষা অত্যন্ত উপকারী।
ইনডিউসড স্পুটাম সেল কাউন্ট হল এক বেদনাহীন পরীক্ষা পদ্ধতি, যা প্রাথমিকভাবে গুরুতর অ্যাজমার লক্ষণকে চিহ্নিত করে। ফলে উপযুক্ত চিকিৎসা আরও নির্দিষ্টভাবে করা সম্ভব হয়। স্পুটাম সেল কাউন্ট না পাওয়া গেলে, এয়ারওয়ে প্রদাহের অস্তিত্ব এবং ধরন নির্ণয় করা কঠিন হয়, ফলে যথাযথ চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হতে পারে।
ইনডিউসড স্পুটাম সেল কাউন্ট ফুসফুসের এয়ারওয়েতে প্রদাহের অস্তিত্ব, ধরন এবং মাত্রার মূল্যায়ন করে। এই প্রোসিডিওর সেইসব রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হয়, যাদের নিজে থেকে থুতু তৈরি করতে অসুবিধা হয়। এই প্রোসিডিওরে তাদের কাশির মাধ্যমে থুতু নিঃসরণ করতে সাহায্য করা হয়। এর জন্য ফুসফুসের এয়ারওয়েতে অতিরিক্ত আর্দ্রতা সৃষ্টি করা হয়, যা নিঃসরণ পদার্থকে তরল করে, কাশির মাধ্যমে থুতু বার করা সহজ করে দেয়।
স্পুটাম ইনডাকশন টেস্ট একটা বেদনাহীন প্রোসিডিওর। এতে নানারকম ঘনত্বের স্যালাইন (মৃদু নোনা জল) নেবুলাইজারের মাধ্যমে নিঃশ্বাসের সঙ্গে টেনে নেওয়া হয়। তারপর কাশির মত আচার-আচরণ করা হয়, যাতে থুতুর নমুনা পাওয়া যায়। রোগী যে নেবুলাইজড হাইপারটোনিক স্যালাইন দ্রবণ টানেন, তা ফুসফুসের এয়ারওয়ে থেকে নিঃসৃত বস্তুকে তরল করে, কাশিতে সাহায্য করে এবং রেস্পিরেটরি নিঃসরণকে শ্লেষ্মায় পরিণত করে।
কলকাতা-র অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালস-এর অ্যালার্জি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগের প্রফেসর অ্যান্ড সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শৈবাল মৈত্র, প্রসঙ্গত জানিয়েছেন, ‘ইনডিউসড স্পুটাম সেল কাউন্টের সুবিধা হল, এটা গুরুতর অ্যাজমার রোগীদের প্রদাহের সেলুলার ধরনটা সম্পর্কে তথ্য জোগায়। ফলে চিকিৎসায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কিছুটা সাহায্য পাওয়া যায় এয়ারওয়ে প্যাথোলজির মূল্যায়নে ইনডিউসড স্পুটামের প্রয়োগ দ্রুত বেড়েছে। অ্যাজমা সম্পর্কে এখন যে গাইডলাইন আছে, তাতে স্পুটাম ইওসিনোফিলকে এয়ারওয়ে প্রদাহের মূল্যায়নে একটা প্রমাণভিত্তিক মাধ্যম বলে ধরা হয় সুতরাং এটা কর্টিকোস্টেরয়েড রেসপন্স অনুমান করা এবং মূল্যায়ণ করার অস্ত্রও।’