স্কোলিওসিস হল মেরুদণ্ডের এমন একটি অবস্থা, যেখানে রোগীর শরীর বেঁকে গিয়ে প্রায় ‘S’ বা ‘C’ আকৃতির হয়ে যেতে পারে। টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হাসপাতালের কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক সার্জন ডা. কিরণ শংকর রায়-এর মতে, বেশ কয়েকটি কারণে সৃষ্ট মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বক্রতা বা নিউরোমাসকুলার ব্যাধি হল স্কোলিওসিস। একজন সাধারণ ব্যক্তির মেরুদণ্ড কাঁধের কাছাকাছি এবং নীচে পিছনের অংশে সামান্য বাঁকা থাকে। কিন্তু স্কোলিওসিস-এ আক্রান্ত হলে এই বক্রতা অস্বাভাবিক রূপ নেয়।
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, জিনগত সমস্যার কারণেও স্কোলিওসিস হতে পারে। এছাড়া, একজন ব্যক্তির স্কোলিওসিস হতে পারে যদি একটি পা অন্যটির চেয়ে লম্বা হয়। সিন্ড্রোমিক স্কোলিওসিসকান রোগের একটি বিস্তৃত পরিসরের উপসর্গ হিসাবে দেখা দেয় এটি। যেমন নিউরোফাইব্রোমাটোসিস বা মারফান রোগ। হাড় দুর্বল হলে কিংবা অস্টিওপোরোসিস সেকেন্ডারি স্কোলিওসিসও হতে পারে। মেরুদণ্ডে আঘাত বা সংক্রমণের কারণেও হতে পারে স্কোলিওসিস।
তবে, স্কোলিওসিস রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায় বয়ঃসন্ধির ঠিক আগে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে কিছু হালকা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিন্তু শিশু বড়ো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই বক্রতার সমস্যা গুরুতর বিকৃতির কারণ হতে পারে। এই গুরুতর বিকৃতি রোগীর জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং অনেক সময় শিশুটি শারীরিক ভাবে অক্ষমও হতে পারে।
স্কোলিওসিসের ধরন
ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস: এর সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে ইডিওপ্যাথিক স্কোলিওসিস-কে আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে বয়স অনুযায়ী।
কনজিনিটাল স্কোলিওসিস: এটিকে জন্মগত স্কোলিওসিস বলা হয়ে থাকে। আর ‘জন্মগত' বলতে বোঝায়— জন্ম থেকে বর্তমান অবস্থা। যদি শিশুর বিকাশের সময় মেরুদণ্ডের হাড় সঠিকভাবে বৃদ্ধি না পায়, তবে জন্মগত ত্রুটিতে পরিণত হয়ে স্কোলিওসিস আক্রান্ত হয়।
নিউরোমাসকুলার স্কোলিওসিস: স্নায়ুর অস্বাভাবিকতার ফলে এই ধরণের মেরুদণ্ডের সমস্যা তৈরি হয়। এটি সাধারণত আঘাত, সেরিব্রাল পালসি, স্পাইনা বিফিডা বা পেশীবহুল ডিস্ট্রোফির মতো অবস্থা।
স্কোলিওসিসের লক্ষণগুলি কী কী?
- অসম কাঁধ
- পিঠে ব্যথা
- পাঁজরের সমস্যা
- অস্বাভাবিক কোমর
- একদিকের নিতম্ব অন্যদিকের চেয়ে উঁচু
- মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বক্রতা রোগীর বয়সের উপর নির্ভর করে লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হয়।
শিশুদের মধ্যে লক্ষণ