যাদের দৃষ্টিশক্তি আছে, তারা বোঝেন না অন্ধের যন্ত্রণা! কিন্তু চোখের যত্ন না নিলে কিংবা অবহেলা করলে যদি দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যায় কিংবা দৃষ্টিহীন হয়ে যান তখন? অতএব, আজীবন দৃষ্টি সুখের আনন্দ উপভোগ করার জন্য, চোখের যত্ন নেওয়া জরুরি। আর এই যত্ন নিতে হবে ছোটো থেকেই। সন্তানের চোখ ভালো রাখার জন্য গুরুদায়িত্ব নিতে হবে বাবা-মাকেই। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিলেন ডা. সুরভি গুপ্ত।
বর্তমানে বাচ্চাদের চোখের সমস্যা এবং অসুখ বাড়ছে। ক্লাস ওয়ান-টুতে পড়া অনেক বাচ্চার চোখেই এখন চশমা দেখা যায়। আসলে, বাচ্চাদের চোখের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় পিছনে, পুরোনো কারণগুলির সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন কিছু কারণ। আর এই নতুন কারণগুলির মধ্যে রয়েছে বেশি টিভি দেখা এবং কম্পিউটার-এর সামনে দীর্ঘ সময় বসে থাকা।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঘর অন্ধকার করে টিভিতে কার্টুন চ্যানেল দেখছে বাচ্চা। এইভাবে আলোহীন ঘরে বসে দীর্ঘসময় চড়ারঙের কার্টুন ছবি দেখার যে অভ্যাস, তা চোখের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। কারণ, তীব্র গতিযুক্ত এবং নানারকম চড়া রং সমৃদ্ধ আলোর বিচ্ছুরণ চোখের নার্ভের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। কম্পিউটার-এর ক্ষেত্রেও তাই। অনেকটা সময় একনাগাড়ে কম্পিউটার-এ স্ক্রিন-এর উপর দৃষ্টি রেখে ছোটো ছোটো লেখা পড়তে থাকলে, বাচ্চার সফ্ট নার্ভের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে বাধ্য।
অবশ্য শুধু কম্পিউটার কিংবা টিভি দেখার খারাপ প্রভাবই নয়, আরও নানা চিরাচরিত কারণে বাচ্চাদের কচি চোখে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। যেমন, ঘরবাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সবুজ ধবংস করা হচ্ছে। আর চোখ সবুজ যত কম পাবে, ততই বাড়বে চোখের সমস্যা। তাছাড়া, অতিরিক্ত যানবাহন হওয়ার কারণে যে-পরিমাণ তেলযুক্ত বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে মিশে থাকছে, তাও চোখের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে।
এছাড়া, অপুষ্টি তো রয়েছেই। অনেক বাচ্চা ফাস্ট ফুড খেতে যতটা আগ্রহী, শাকসবজিজাতীয় খাবার খেতে চায় না ততটা। তাই, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট-যুক্ত ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং ‘ই’ থেকে বঞ্চিত হয় চোখ। ফলে, ধীরে-ধীরে বাচ্চার চোখের ক্ষতি শুরু হয় এবং শেষপর্যন্ত চোখ গভীর অসুখে আক্রান্ত হয়। তবে বাচ্চাদের চোখের অসুখ আর যাতে না হয় কিংবা চোখের সমস্যা শুরু হলে তা যাতে এড়ানো যায়, তারজন্যই চোখের অসুখের লক্ষণ, ডায়েট, এক্সারসাইজ এবং চিকিৎসার বিষয়ে বিশদে জানিয়েছেন ডা. সুরভি গুপ্ত।