ভালো বাড়ি বানানোটা যেমন খুব সহজ কাজ নয়, ঠিক তেমনই ঘরদোরের মেইন্টেনেন্সও সহজ কাজ নয়। ভারতীয় সংস্কৃতিতে দেখা যায়, বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যেই শুধু ঘরদোর পরিষ্কার করা এবং সাজানোর রীতি আছে। কিন্তু নিয়মিত মেইন্টেন না করে মাঝেমধ্যে করলে, খরচও যেমন বেশি হয়, তেমনই পরিশ্রম করতে হয় অনেক বেশি।
মেইন্টেনেন্সের প্রয়োজনীয়তা
প্রশ্ন হল, মেইন্টেনেন্স জরুরি কেন? এটা জানার জন্য আমরা কথা বলেছিলাম এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নীতা সিন্হার সঙ্গে। গত চার বছর ধরে মেইন্টেনেন্সের বিষয়ে সুপরামর্শ দিয়ে চলেছেন নীতা। বলিউডের অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, অক্ষয়কুমার, জন আব্রাহাম প্রমুখের গৃহসজ্জার সময় নীতা কাজ করেছেন উপদেষ্টা হিসাবে। নীতা জানালেন, প্রত্যেকেরই একটা ম্যাগনেটিক ফিল্ড থাকে, যা পরিবেশের সঙ্গে ম্যাচ না করলে ব্যক্তি স্বচ্ছন্দ বোধ ফিল করে না। অতএব মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য মেইন্টেনেন্স জরুরি।
সঠিক মেইন্টেনেন্স
সঠিক মেইন্টেনেন্সের ফলে ঘরের জমে থাকা ধুলোময়লা দূর হয় এবং ঘরে ওপেন স্পেসে পজিটিভ এনার্জির পরিমাণ বাড়ে। আসলে আমাদের পরিবেশে ভাসমান ধূলিকণার সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে এমন অসংখ্য জীবাণু, যা খালি চোখে দেখা যায় না। তাই জমে থাকা জল, ধুলোময়লা প্রভৃতি ঘর থেকে না সরালে, ঘরে বসবাসকারীদের শরীরে রোগজীবাণু বাসা বাঁধবেই। আর রোগজীবাণু বাসা বাঁধা মানেই, শারীরিক এবং মানসিক কষ্টের শিকার হতে হবে। তাই প্রতিদিন ঘর ঝাড়তে হবে এবং ভালোমানের ফিনাইল দিয়ে ঘরদোর মুছতে হবে। সেইসঙ্গে ঘরের দমবন্ধভাব ও জমে থাকা দুর্গন্ধ সরানোর জন্য, ঘরে সুগন্ধি ধুপ জ্বালাতে হবে। তবে শুধু এটুকুতেই মেইন্টেনেন্স পুরো হয় না। আসলে মেইন্টেনেন্সের দুটো ক্ষেত্র আছে। একটা ভিতরের ক্ষেত্র, অন্যটা বাইরের ক্ষেত্র। ভেতরের ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে ঘরের মেঝে, দেয়াল, ফার্নিচার, কিচেন, বাথরুম প্রভৃতি। আর বাইরের ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে মেন গেট, বারান্দা, আউটসাইড ওয়াল, বাউন্ডারি ওয়াল প্রভৃতি।
ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দরকার নরম কাপড়, ক্লিনিং লিকুইড, মই, টুল, ঝাড়ু, ব্রাশ প্রভৃতি। যেমন, মেঝে পরিষ্কারের জন্য ফুলঝাড়ু, জল এবং ফিনাইল ব্যবহার করতে হয়। স্টিলের বা কাচের আসবাবপত্র পরিষ্কার করার জন্য লাগে ক্লিনিং লিকুইড (কলিন)। কিচেনের তৈলাক্তভাব দূর করার জন্য হালকা ওয়াশেব্ল লিকুইড সোপ এবং স্কচব্রাইট লাগে। আবার কোথাও জল জমে শ্যাওলা পড়লে, ব্রাশ দিয়ে তা তুলতে হবে। মেঝেতে পাতা কার্পেট ধুলোমুক্ত রাখতে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে হবে। তবে ওয়াল টু ওয়াল কার্পেটের পরিবর্তে ছোটো কার্পেট ব্যবহার করলে তা পরিষ্কার করা সহজ হবে।