গরমের ছুটি বলুন অথবা খ্রিসমাসের সময়, বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ থাকলেও দেওয়া হয় প্রচুর হোমওয়ার্ক, প্রোজেক্ট ওয়ার্ক, এছাড়াও স্কুল খুললেই পরীক্ষার চাপ তো থাকেই। সঙ্গে সঙ্গে চলে নানা অ্যাক্টিভিটির ক্লাসও। যেমন সুইমিং, ডান্সিং, ক্যারাটে ইত্যাদি নানা ধরনের অ্যাক্টিভিটি করার সুযোগ রয়েছে বাচ্চাদের।

কিন্তু দেশজুড়ে যখন ভয়েতে মানুষ বাধ্য হচ্ছে বাড়িতে থাকতে, যেখানে দেশে অতিমারির ভয়ে শহরে গ্রামে লকডাউনের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি, স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বড়োরা যেখানে দিশাহারা, ঘুমিয়ে খেয়ে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করেও যেখানে মানসিক চাপমুক্ত থাকা যাচ্ছে না, সেখানে বাচ্চাদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। স্কুল হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া, পরীক্ষা উঠে যাওয়া, বাড়ি থেকে বেরোতে না পারার স্ট্রেস তাদের কাছে অবাঞ্ছিত হয়ে উঠেছে।

আশেপাশের পরিবেশ বোঝা বা খোলা জানলাগুলো হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার তাৎপর্য বোঝার হয়তো অনেকেরই বয়স হয়নি। তত্সত্ত্বেও অলস আগামী দিনগুলো ভারী পাথরের মতো শিশুর মনের ছোট্ট পরিসরে ভার হয়ে বসতে চলেছে।

বাইরে পাড়ার পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে খেলে বেড়ানো, মায়ের হাত ধরে সাঁতারে যাওয়া বা ক্যারাটে ক্লাসে গিয়ে বন্ধুকে নিজের শক্তি প্রদর্শন করে দু-ঘা লাগিয়ে দেওয়া সব বন্ধ। সারা সপ্তাহ স্কুল করে সপ্তাহের শেষে দুটো দিন প্রিয়, নাচের টিচারের কাছে নিজের মনের একান্ত ইচ্ছেটাকে, সুপ্ত বাসনাটাকে ঝালিয়ে নেওয়া, সেটাও নির্মম ভাবে বন্ধ।

যেখানে বাড়িতে বন্ধ থাকার এই একঘেয়ে জীবনটা থেকে শৈশব হঠাৎ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে, সেখানে বদ্ধ জীবনে শৈশব ফিরিয়ে আনার উপায় হল বিভিন্ন খেলা এবং নিজস্ব সৃষ্টির নেশায় তাদের ব্যস্ত রাখা।

  • সকালে ঘুম থেকে উঠলে ছোটো ছোটো সহজ ব্যায়াম শেখান বাচ্চাকে এবং নিজেও সেটা বাচ্চার সঙ্গে করুন। নতুন জিনিস শিখলে বাচ্চার আগ্রহ বাড়বে
  • বাড়িতে রাখা টবের গাছগুলোতে মগে করে জল দিতে বলুন, বড়োদের সামনে থাকাটা জরুরি। এতে বাচ্চার প্রকৃতির সঙ্গে সখ্যতা বাড়বে
  • রান্নার সময় সবজিগুলো বড়োদের হাতের কাছে এগিয়ে দিতে বলুন। এতে বিভিন্ন সবজি চেনাও হবে আবার বড়োদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে মনে স্বস্তি অনুভব করবে। এতে বাচ্চার মনে হবে ছোটো হলেও বাড়িতে ওর একটা গুরুত্ব রয়েছে
  • পড়াশোনা করার সময়টুকু বাদ দিয়ে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে ইনডোর গেমস খেলুন। ক্যারাম, লুডো, তাস, দাবা, বাগাডুলি একসঙ্গে বসে খেলে দেখুন। এই মজা অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না এবং ফ্যামিলি বন্ডিং-টাও বাড়বে
  • বিভিন্ন ক্রসওয়ার্ড, ধাঁধা, সুদোকু ইত্যাদি খেলতে বাচ্চাকে সাহায্য করুন, কীভাবে খেলতে হয় বুঝিয়ে বলুন। এগুলো মস্তিষ্ক সচল রাখতে সাহায্য করবে এবং শিশুমনকে স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি থেকেও দূরে রাখবে। বাইরে বেরোতে না পারার কষ্টকে ভুলে থাকতে অনেকটাই হেল্প করবে
  • সারা দিনের শেষে একটি নির্দিষ্ট খাতায় বাচ্চাকে বলুন সারাদিনে যা যা করেছে সেটা লিখতে। সারাদিনটা কেমন কেটেছে, কী কী ভালো কাজ করেছে মনে করে খাতায় সেটা লিখে রাখতে বলুন। এতে ডায়ারি লেখার অভ্যাস হবে এবং একঘেয়েমি কেটে নতুন কিছু করার আনন্দে বাচ্চা মেতে উঠবে
  • বাচ্চাকে বলুন, ডায়ারিটা ওর নিজস্ব সম্পত্তি এবং ওতে ও যা যা লিখছে সেটা একমাত্র ওই জানবে। বড়োরা ওর এই ডায়ারিতে হাত দেবে না। এতে বাচ্চার আত্মবিশ্বাস বাড়বে
  • বাড়িতে বন্ধ হয়ে থাকার অস্বস্তি বাচ্চার মন থেকে দূর করতে নতুন নতুন কনস্ট্রাকটিভ অ্যাক্টিভিটিতে বাচ্চাকে ব্যস্ত রাখুন। বাচ্চার কাছে কাগজ, পেনসিল, রং, রঙিন কাগজ ইত্যাদি থাকেই। সেগুলোর সাহায্যে ড্রযিং করে অথবা নেটের সাহায্য নিয়ে নানারকম ক্রাফট বানাতে বাচ্চাকে সাহায্য করুন। পিকচার পোস্টকার্ড, ওয়াল হ্যাঙ্গিং ইত্যাদি বাচ্চা নিজেই বানাতে পারে। নিজস্ব তৈরি জিনিসে বাড়ি সেজে উঠতে দেখলে বাচ্চা আনন্দ পাবে।

এরকমই নানা ইনোভেটিভ অ্যাক্টিভিটিতে বাচ্চাকে ব্যস্ত রেখে বাচ্চার একঘেয়েমি কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারেন বাচ্চার অভিভাবকেরা। এই সমস্যা আজ শুধু দেশের নয় গোটা বিশ্বের। গৃহবন্দি জীবনই আশীর্বাদ হয়ে উঠুক একটি শিশুর জীবনে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...