অটিজম, সেরিব্রাল পালসি বা অন্যান্য প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশুরা অনেক সময় কথা বলতে বা নিজেদের ভাবের আদান-প্রদান করতে পারে না।
কী বলতে চাইছে তা বুঝতে পারলেও, বোঝাতে পারে না অনেক শিশু। যারা হয়তো কথা বলতে পারছে না বা পারবে না, এই ধরনের শিশু বা যুবক-যুবতিদের কীভাবে অল্টারনেটিভ বা অগমেনটেটিভ কমিউনিকেশনের মাধ্যমে তারা তাদের ভাব প্রকাশ করতে পারে, তা নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হল কলকাতার লেকটাউনে। যেখানে কথা বলতে না পারা এবং স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ ডিসওর্ডারে আক্রান্ত শিশু এবং তাদের বাবা-মায়েরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় বিশিষ্ট বাক ও শ্রবণ বিশেষজ্ঞ ও কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজিস্ট মঃ শাহিদুল আরেফিন জানিয়েছেন, ‘অল্টারনেটিভ বা অগমেনটেটিভ কমিউনিকেশনের মাধ্যমে যদি একটি শিশুর স্পিচ ও ল্যাঙ্গুয়েজ স্টিমুলেশন সঠিক ভাবে করা যায়, তাহলে কথা বলা বা কমিউনিকেশনের সমস্যা খুব দ্রুত মিটে যাবে।’ এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আমাদের দেশে অনেক অটিস্টিক শিশু রয়েছেন যারা এই ধরনের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসেন। তাদের মধ্যে এখনও অনেক সচেতনতার অভাব রয়েছে।’ এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে এরকম কর্মশালা আরও করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন।
যদি কোনও শিশুর স্পিচ বা ল্যাঙ্গুয়েজ এর সমস্যা থাকে, তাহলে প্রথমেই তার বাবা-মায়ের উচিত কোনও স্পিচ ও ল্যাংগুয়েজ প্যাথলজিস্টের কাছে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া যে, তার সমস্যা কতটা এবং সেইসঙ্গে অল্টারনেটিভ বা অগমেনটেটিভ কমিউনিকেশন কখন কীভাবে করতে হবে সেই ব্যাপারে ধারণা তৈরি করা।
অনেকের ভুল ধারণা আছে যে, এই কমিউনিকেশনের মাধ্যমে শিশু হয়তো কথাই বলতে পারবে না। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়। উল্টে শিশুকে দ্রুত কথা বলানো এবং তার মনের ভাব প্রকাশ করতে সাহায্য করে এই অল্টারনেটিভ কমিউনিকেশন। এটিই একমাত্র বিকল্প ব্যবস্থা বলে মনে করেন মঃ শাহিদুল আরেফিন।
তাঁর মতে, সমস্যা কতটা তা বুঝে লো-টেক, হাই-টেক বা মিড-টেক পদ্ধতিতে কমিউনিকেশন বোর্ড, অ্যাপ বা অন্যান্য যান্ত্রিক ব্যাবস্থাপনায় ওই শিশু তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারবে আধুনিক টেকনোলজির মাধ্যমে। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী স্টিফেন্স হকিং যে ভাবে যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজের ক্লাস নেওয়া থেকে শুরু করে গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন, সেই পদ্ধতি আজকে সর্বত্র অনুধাবন করা উচিত বলেও জানিয়েছে মঃ শাহিদুল আরেফিন।