থার্ড ডিগ্রির কথা শুনেই তান্ত্রিক যেন কেমন হকচকিয়ে গেল। মনে হল থার্ড ডিগ্রি কী সেটা ভালো ভাবে ও জানে। রাতের অন্ধকারে কথাটা শুনেই বুঝে গেল যে এই অফিসার সম্ভবত এনকাউন্টারের কথা বলছে। তাই হাতজোড় করে গড়গড় করে সব বলে গেল।
সন্দীপের ভাই ছোটোবেলায় যে এলাকায় কিডন্যাপ হয়েছিল সেখানকার কিডন্যাপারদের লিস্ট নিয়ে রাম সিংকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছোল সেই এলাকায়। ফোনে ওই এলাকার এসএইচও-র সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে পৌঁছে গেল সেখানকার থানায়। কিন্তু কথা বলে যা জানতে পারল তাতে একটু হতাশ হল। কারণ সে সময়ে যারা এসব কাজ করত তারা নাকি সবাই এখন জেলে, নয়তো মারা গেছে। তবে বেশ কিছু বাচ্চাকে ওদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ এবং তাদের ওই এলাকার একটা অনাথ আশ্রমে দিয়েছিল। বর্তমানে সেই অনাথ আশ্রমও উঠে গেছে।
সন্দীপ এসএইচও-কে জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা, ওই অনাথ আশ্রমের কেউ কি এখনও বেঁচে আছে?'
—আছে। ওই আশ্রমের মালিক এখনও বেঁচে আছেন তবে অনেক বয়েস হয়েছে। বিছানায় প্রায় শয্যাশায়ী। তবে আজকাল যেহেতু দিল্লি পুলিশ সিনিয়র সিটিজেন স্কিমের জন্য সিনিয়র সিটিজেনদের সাথে যোগাযোগ রাখে, তাই আমরাও ওনার সাথে যোগাযোগ রাখি। আমি আপনাকে ওনার ফোন নম্বর দিতে পারি। আপনি গিয়ে একবার কথা বলে দেখতে পারেন।
সন্দীপ ফোন করে রাম সিং-কে সাথে নিয়ে ভদ্রলোকের কাছে পৌঁছে গেল। ভদ্রলোকের নাম ধীমান দত্ত। গিয়ে দেখল, ভদ্রলোক বিছানায় শুয়ে আছেন অসুস্থতার জন্য। সন্দীপকে দেখে কোনওরকমে উঠে বসলেন। সন্দীপ, ধীমানবাবুকে ভাইয়ের কিডন্যাপ হওয়ার কথা সব খুলে বললেন। বললেন- - আমার ভাইয়ের নাম ছিল সৌরভ। আমার ভাই যখন কিডন্যাপ হয় তখন ও নিজের নামটা কোনওরকমে বলতে পারত।
—কী নাম বললেন! সৌরভ। আমার এখানে দু'জন সৌরভ ছিল। দু'জনই এখন দিল্লি পুলিশের উচ্চপদস্থ অফিসার। আপনি আগামীকাল বিকেলে আমার এখানে আসুন। দু'জনের মধ্যে একজন আগামীকাল বিকেল ৫টায় আমার সাথে দেখা করতে আসবে। ও প্রতি সপ্তাহেই আমার সাথে দেখা করতে আসে। তখনই সামনাসামনি দেখে নেবেন যে সে-ই আপনার ভাই কিনা। আপনাকে কী বলে যে ধন্যবাদ জানাব জানি না। ওনার সাথে না দেখা করা পর্যন্ত আজ রাতে আমার ঘুম হবে না জানেন। সন্দীপ বাড়ি ফিরে আসে। পরের দিন ছুটি নেবে, তার দরখাস্তও করে দিল সে।