লোকটাকে আর সহ্য হচ্ছিল না সুকুমারের। প্রায় সাত-আট ঘন্টা ধরে একটানা চোখের সামনে। কত বয়স হবে, ওর থেকে ছোটোই হবে। বোধহয় চল্লিশের আশেপাশে। একটা টাইট রংচটা নীল কম দামি জিনসের সঙ্গে কালো গেঞ্জি পরে আছে। বুকের ওপর সাদা অক্ষরে ইংরাজিতে লেখা, তেরে পাস কেয়া হ্যায়?

লাইনে সবাই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে শুধু দাঁড়িয়ে আছে তাই নয়, বেশ কয়েকজনের মুখে মাস্ক নেই। যাদের আছে, এলিয়ে পড়েছে নাকের ছিদ্রের নীচে। এ লোকটার মাস্ক থাকলেও অসংখ্যবার রাত তিনটে থেকে মুখ খোলা অবস্থায় দেখেছে সুকুমার। আর ততবার পানমশলার বিচ্ছিরি গন্ধ।

রাত পৌনে তিনটে থেকে চন্দননগর হসপিটালের এই ভ্যাকসিন ওয়ার্ডের সামনে লাইন দিয়েছে সুকুমার। বউ-এর সঙ্গে বেশ ক'দিন আলোচনা করেছে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে। প্রথমে একটু দ্বিধার মধ্যেই ছিল। বউই জোর দিয়ে পাঠিয়েছে। বলেছিল, ‘আমার তো পঁয়তাল্লিশও হয়নি। আর তুমি পঞ্চাশ পেরিয়েছ— মানেই রিস্ক তোমার একটু বেশি!”

সুকুমার নিজেও সে কথা জানে। বাহান্নর শরীরে কোনও রোগের বাস নেই। আছে শুধু একগাদা উদ্বেগ। বউ-এর কথা ভেবেই কেমন কিন্তু কিন্তু হচ্ছিল। পরে ভেবে দেখল, নিজে দোকান-বাজারটা করতে তাও বেরোয়। রোগ-জীবাণু কোথা থেকে বয়ে আনবে তার ঠিক ঠিকানা নেই। ভ্যাকসিন নেওয়া মানে বউকে কিছুটা হলেও সুরক্ষা দেওয়া।

কয়েকদিন খোঁজখবর করে যা জেনেছিল, তাতে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। রোজ প্রথম ডোজ পাবে দু'শো জন। এদিকে লাইন পড়ছে চারশোর উপর। মারামারি হাতাহাতি। বাঁচতে চাওয়ার কম্পিটিশন। ভিড়ে এখনও বিধিনিষেধ। সেসবের পরোয়া আর করছে কে। ফলে মাঝরাতে বেরিয়ে এসে সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছে।

সুকুমারের একমাত্র ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি নিয়ে বেঙ্গালুরু গেছে, ঠিক ভাইরাস ঝামেলা শুরু হওয়ার আগে। লকডাউন হলেও ফেরেনি। বেঙ্গালুরুতে থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালিয়ে গেছে। ও শহরে থাকার খরচ খুব। বাবা-মা'কে টাকা পয়সা সেভাবে পাঠাতে পারে না। কলকাতার যে-জুতোর শোরুমে সুকুমার ম্যানেজারের চাকরি করত, লকডাউনের দু'মাসের মধ্যেই হাটিয়ে দিয়েছে। শেষ ক'মাস জীবন যে কোন দিকে যাচ্ছে, ঠিক বুঝে ওঠা যাচ্ছে না কিছুতেই!

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...