তারপর আরও অনেক কথা হলেও সোনালি আর বিয়েতে রাজি হয় না। অপূর্ব বয়সে ছোটো। এই হাসপাতালে কর্পোরেট বিল সেকশনের ইনচার্জ হয়ে সোনালির এক বছর আগে থেকে কাজ করছে। সোনালি মেডিক্লেম সেকশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট। আলাপ এই ছয় মাসের। তার সঙ্গে সোনালি সেরকম ভাবে বিয়ের কোনও কথা বলেনি। তবে ছেলেটা কথায় কথায় সেদিনও বলেছে, 'বাড়িতে তো শুধু বাবা আর আমি, যাকেই বিয়ে করব বাবা কিছু বলবে না। শুধু বিয়েটা করতে হবে।'
তাও সোনালির মনে হয় শুধু কয়েকটা দিন একটু ঘোরা, ক্যান্টিনে কয়েক কাপ চা, টিফিন, আর দু'দিন ওর এই বাড়িতে আসা, তাও দিনের আলোতে, সন্ধেবেলায় আসার কথা বলবার সাহস হয়নি— এই নিয়ে তো আর মানুষ চেনা যায় না।
‘তুই চিনতে পেরেও কী করবি? এই আমাকে দ্যাখ, এক্কেবারে মা-বাবা দেখেশুনে বিয়ে দিল। কুঠি মেলাল, ব্লাড টেস্ট হল, তাও বিয়ের এক মাসের মধ্যে জানলাম নিজের মামির সাথে ওর সম্পর্ক আছে, ঘর ছাড়তে হল। কিন্তু বিয়ের পর মা-বাবার কাছেও মেয়ে কিন্তু একটা অন্যরকমের বার্ডেন হয়ে যায়। এটা হয়তো স্বাভাবিক। এত খরচ করে বিয়ে দেওয়া, মেয়ে যদি সংসার না করে! তবে এখন ভালো আছি৷' রেবা একদিন কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলে।
অপূর্ব ছেলেটা কোনও দিন দিদি বলে না। সোনালি একদিন জিজ্ঞেস করতে উত্তর দেয়, ‘আমি তোমাকে বড়ো ভাবি না। দিদি বললে সমস্যা হবে।'
—কীসের সমস্যা?
—উফঃ একদিনে সব কিছু বলা যায় না। যখন সময় হবে তোমাকে ঝুড়ি কোদাল নিয়ে বোঝাব।
মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের দিদি হলেও এইসব খবরের জন্যে দুই দিদি জামাইবাবুদের সঙ্গে বসে থাকে। পাশের বাড়ির তপুর মাকে দুই দিদি মাঝে মাঝেই ফোন করে। তবে সব খবর পায় না অথবা পেলেও শোনে না। যেদিন ‘স্বামীজি হাসপাতাল’ কোনও কারণ ছাড়াই চাকরি থেকে তাড়িয়ে দিল, সেদিন ওদের কেউ কোনও খবর পায়নি।





