দুটো হাঁড়ি প্রায় কাঁকড়াতে ভরে এসেছে। জোয়ারের জল বাড়তে বাড়তে এখন কোমরের কাছে। মঙ্গলা সতর্ক হয়। হাঁড়িদুটো ভেসে যেতে পারে। সে কোমর থেকে গামছা খুলে তার দু’প্রান্ত দিয়ে হাঁড়িদুটোকে বাঁধল। তারপর একটা গরান গাছের গায়ে জড়িয়ে দিল।

সেই সকাল থেকে সে কাঁকড়া ধরছে। মাতলা যেখানে পিয়ালির সঙ্গে মিশেছে, সেখানে অনেকটা জায়গা জুড়ে চর পড়েছে। আর সেই চরে হেঁতাল, গরান, বাইন আর গেঁয়ো গাছের জঙ্গল বসেছে। জঙ্গলের কাদামাটির মধ্যে অসংখ্য গর্ত। গর্তে বাস করে সুন্দরবনের গাঙের রাক্ষুসে সব কাঁকড়ারা। জোয়ারের জলে যখন গর্তগুলো ডুবে যায়, পেল্লাই সাইজের বড়ো বড়ো দাড়াওয়ালা সব কাঁকড়া বেরিয়ে আসে খাবারের সন্ধানে। আর সেই ক্ষুধার্ত কাঁকড়াগুলোর সামনে তখন টোপ হিসেবে ফেলা হয় মরা মাছ, পচা শামুক। একটা লাঠির মাথায় দড়ি বাঁধা হয়। দড়ির শেষ প্রান্তে খোলামকুচি বা ইটের টুকরো বেঁধে ভারী করা হয়। একে বলে সুতো। এই সুতোর ডগায় চার বেঁধে লাঠিটা মাটিতে পুঁতে দিয়ে সরে আসতে হয়। ক্ষুধার্ত কাঁকড়াগুলো যখন বড়ো বড়ো দাড়া দিয়ে চার খেতে আসে, তখন লাঠিতে টান পড়ে। আর মঙ্গলারা হাতের ছোটো ঝাঁকনিজাল দিয়ে কাঁকড়াটাকে ধরে হাঁড়ির মধ্যে চালান করে। সুন্দরবন অঞ্চলের অনেক মানুষেরই জীবিকা এই কাঁকড়া ধরা।

মঙ্গলারও তাই। মেয়ে তখনও ঘুম থেকে ওঠেনি। একমুঠো পান্তা খেয়ে সুতোর গোছা হাঁড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে আরও অনেকের সঙ্গে। গাঁয়ের অনেক মেয়ে-বউ কাঁকড়া ধরতে আসে। নোনাজলের বাদাবন। ঠিকমতো চাষবাস হয় না, অভাব তাই নিত্যসঙ্গী। মাছের মীন, কাঁকড়া এইসব ধরে গেরস্তবাড়ির মেয়েরাও সংসারের হাল ফেরাতে চায়। তাছাড়া কাঁকড়ার বেশ বাজারদর আছে। শহরে চালান হয়। এককুড়ি বড়ো সাইজের কাঁকড়া বেচে কমবেশি চারশো টাকা পাওয়া যায়। সারাদিন যা কাঁকড়া হয়, হাঁড়িতে রাখা থাকে চুপড়ি চাপা দিয়ে। ভোররাতে জামতলা হাট থেকে তাজউদ্দিন তার মোটরভ্যান নিয়ে আসে। গুনতি করে কাঁকড়ার সাইজ অনুযায়ী বড়ো বড়ো ঝাঁকার মধ্যে ঢালে। দাড়াভাঙা মরা কাঁকড়া সব বাদ দেয়। ওগুলো ওরা বাড়িতে রান্না করে খায়।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...