‘সে কী মশাই আপনি এখনও একটাও সম্মাননা পাননি! ছোটো বড়ো কোনও অ্যাওয়ার্ড? তাও না?’ প্রশান্ত এমন করে কথাগুলো বলল, কিছুতেই যেন তার মুখের রেখাগুলো থেকে, অশ্রদ্ধার ভাবটা লুকোনো গেল না। বর্ষীয়ান মানুষ অমূল্যবাবু। কিছু না হোক বয়োঃজ্যেষ্ঠ হিসেবে তো তাঁর একটা সম্মান প্রাপ্য হয়! অপমানটা কোনও রকমে গিলে ফেলে মুখে একটু হাসির ভাব এনে অমূল্যবাবু বলার চেষ্টা করলেন ‘না’। কিন্তু গলা দিয়ে স্বর বেরোল না। তাই মাথা নেড়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন।

‘অ! তা আমার কিন্তু আপনাদের আশীর্বাদে ২৮টা হল,’ বেশ গদগদ শোনাল প্রশান্তর গলা।

বছর ৪৮ বয়স হবে প্রশান্তর। খুব বেশি দিন লেখালেখি করছে বলেও জানা নেই অমূল্যবাবুর। তিনি বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন প্রশান্তর মুখের দিকে। কী যেন ছিল সেই তাকানোয়, প্রশান্ত বেশিক্ষণ তাঁর চোখে চোখ রাখতে পারল না। মাথা নীচু করে মুখে একটা অহংকারী ভাব রেখে বলল, ‘সাহিত্যকর্ম তো আর যে-কেউ পারে না দাদা। এটা আপনার মতো পোড় খাওয়া লেখকরাই বুঝবেন। আচ্ছা চলি, ফেরার সময় একবার বাজারটা ঘুরে যাব। পা চালিয়ে এগোই৷’ কথাটা বলে প্রশান্ত ভিড়ে মিশে যায়।

অমূল্যবাবুর বয়স আটষট্টি। একটা স্ট্রোক হয়ে যাওয়ার পর থেকে একটু বেশিই সাবধানী হয়ে পড়েছেন। একমাত্র ছেলে বিদেশে থাকে। স্ত্রীকে নিয়ে বোলপুরের বাড়িতে থাকেন অমূল্যবাবু। সাদামাটা একটা সরকারি চাকরি করতেন। লোন নিয়ে তখন বাড়িটা বানিয়ে ফেলেছিলেন বলে আজ নিশ্চিন্তে অবসর জীবন কাটাতে পারেন। লেখালিখির একটা বাতিক আছে।

‘বাতিক’! এমনটাই বলেন সুরমা,তাঁর স্ত্রী। সেই কারণেই তেমন অ্যাম্বিশাস হতে পারেননি অমূল্যবাবু। কোনও দিন বিরাট লেখক হয়ে দেশের নানা প্রান্তে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়বে, এমনও ভাবেননি। কিন্তু যে-টুকু যা লেখালেখি করছেন, তা এই বোলপুরের সাহিত্য সভা-টভায় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। প্রতি শুক্রবার সন্ধেবেলা এখানকার একটি পাঠাগারে সাহিত্যচর্চার আসর বসে। তাঁর মতো যাঁরা লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা আসেন। সাহিত্য নিয়ে আলোচনা, নতুন লেখা পাঠ এসব নিয়ে দিব্যি সময়টা কেটে যায়। সেখানেই প্রশান্তর সঙ্গে আলাপ। খুব যে আহামরি কিছু লেখে তেমন নয়। কিন্তু ইতিমধ্যেই এতগুলো সম্মানলাভ, ব্যাপারটা আজ একটু হলেও ভাবিয়েছে অমূল্যবাবুকে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...