শেষ পর্ব

পুরোহিতের নির্দেশের অপেক্ষায় আছে আদিবাসী ভক্তরা। তাদের ধামসা, রামসিঙা বেজে উঠবে। দুই থানের মাঝখানে দুটো মোষ বাঁধা আছে। পুরোহিত মঞ্চ থেকে তাদের গায়ে ফুল ছুড়লেই চারদিক থেকে টাঙি, বর্শা ছুঁড়ে মারতে থাকবে ভক্তরা। যতক্ষণ না ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে না পড়ে। তারপর বিশাল খাঁড়া দিয়ে তাদের মাথা কেটে দেবীর পায়ে দেয়া হবে। কুড়ানি সেই সময়ের প্রতীক্ষায় আছে। মোষের রক্ত কপালে ছুঁয়ে প্রার্থনা জানাবে, হে মা, একটা সন্তান দাও। অথচ ঝমঝম পা ফেলে সে নেমে আসে এসময়। রাগে চৌচির হতে থাকে। এই প্রতিক্ষিত সময়ে ডাকাডাকি! সন্ধ্যাদি কানে কানে বলল, দু'পা পেরোলেই শিলদারদের আটচালা শিবমন্দির, পাশে সামন্তদের বাড়িতেই মজুমদার মশায়ের ডাক। দ্রুত পা কুড়ানির। উৎকর্ণ কান ধামসা, সিঙার শব্দের দিকে। পাছে সে বাদ পড়ে যায়। মজুমদার মশাইকে কখনও দেখেনি কুড়ানি, তাঁর নামডাক শুনেছে শুধু। এই হতদরিদ্র অঞ্চলে যে সামান্য শ্রী এসেছে তাঁর নেপথ্যে তিনি। স্থানীয় রাজনীতিতেও তাঁর প্রবল প্রতাপ। ফলে তাঁকে কেউ অমান্য করে না। কিন্তু এই সময়ে ডাক! অবোধ মেয়ে মানুষ। পাঁচিলের পাশে বুড়ো শিরীষ গাছে একটা পেঁচা উড়ে এসে বসে। কুড়ানির চোখ যায়। 'আর ভাল্লাগেনি মোর। বলতো কোন পানে আছেন উনি?'

বাগাল ছেলেটা গোয়ালে গরু তুলতে তুলতে মুখ না ফিরিয়েই আঙুল দেখিয়ে দেয়। সূর্য নেমে গেছে কিছুক্ষণ হল। কুয়াশার মতো একপোঁচ অন্ধকার নেমে এসেছে। কুড়ানির উৎকণ্ঠা আর ক্লান্তি তাতে রহস্য ছড়িয়েছে ঢের। একটা অস্থিরতা নিয়ে হুড়মুড় করে বনটগর গাছটার পাশে সামন্তদের বৈঠকখানা ঘরে ঢুকে পড়ে কুড়ানি।

সামনে জমাট অন্ধকার দেয়ালে বাধা পেয়ে ফিরে আসছে। কুড়ানির শরীরেও তা পিছলে যেতে থাকে। খোলা দরজা দিয়ে কিছু দূরের ভৈরব থানের অস্পষ্ট আলো দেখা যায়। কিন্তু ভিতরে গুমোট অন্ধকার। কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। আর দেখা যাবে বা কাকে! আজ এ তল্লাটের সমস্ত মানুষের বউ-বাচ্চার ঝক্কি সামলাবে ওই রঙ্কিণী থান। চোখের নজর বাড়িয়েও কোথাও কাউকে দেখে না কুড়ানি ।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...