একটু বাদেই রঘু এসে ঢোকে অবনীবাবুর কেবিনে। স্যার, আপনি আমাকে ডেকেছেন? হ্যাঁ, আচ্ছা তুমি শুনলাম এখানে একাই থাকো। তা খাওয়াদাওয়া কোথায় করো? কোনওদিন অফিসের ক্যান্টিনে, কোনওদিন বাইরের হোটেলে। এভাবেই চলে যাচ্ছে।
–তা, বিয়ের কথা ভাবছ না কেন? বিয়ে করবে না বলে ঠিক করেছ নাকি?
—না স্যার, ঠিক তা নয়। এখনও তেমন ভাবে ভাবিনি।
—আমি আমাদের অফিসের একটি মেয়েকে জানি। তুমি যদি রাজি থাকো তবে আমি তাকে বলে দেখতে পারি। তোমাদের জন্য না হয় ঘটকালির অভিজ্ঞতাও হয়ে যাবে। বলা তো যায় না রিটায়ারমেন্টের পর কাজে লাগতে পারে, কী বলো? বলেই হা হা করে হাসতে লাগলেন।
বললেন— এক কাজ করো আজ ছুটির পর তৈরি থেকো। বাড়ি ফেরার পথে আজ শিপ্রা হোটেলে আমরা তিন কাপ কফি খেয়ে বাড়ি যাব।
—স্যার, দু'কাপ কফি তো বুঝলাম। কিন্তু তিনকাপের রহস্যটা ঠিক বুঝলাম না।
—ওটাই তো সাসপেন্স। সময় হলেই বুঝতে পারবে। সন্ধে সাড়ে ছ'টায় অফিস থেকে বেরিয়ে যেও। শিপ্রা হোটেলের কফিশপেই বাকি কথাটা হবে।
রঘু কেবিন থেকে বেরিয়ে যেতেই, অবনীবাবু স্নেহাকে ইন্টারকমে ফোন করে বললেন— স্নেহা, তোমার সঙ্গে কিছু প্রয়োজনীয় কথা আছে। সন্ধে সাড়ে ছ'টায় আমার কেবিনে চলে এসো। আমরা একসঙ্গে বেরিয়ে যাব। পথে একটু কফি খেয়ে যাওয়া যাবে।
বলে ফোনটা রেখেই বাড়িতে ফোন করে স্ত্রীকে বললেন— আজ আমার ফিরতে একটু দেরি হবে। একটু বিশেষ কাজে আটকে গেছি। অন্যপ্রান্ত থেকে আওয়াজ ভেসে এল — বাড়ি না এলেই তো পারো। বাড়ি তো শুধু খাওয়া আর শোয়ার জন্য মনে হয়। মাল্টিন্যাশানাল আর কর্পোরেট এই কথাগুলো শুনে শুনে একেবারে ঘেন্না ধরে গেছে, বলেই ফোনটা সজোরে রেখে দিল ও প্রান্ত।
সন্ধে হতেই অবনীবাবু স্নেহাকে নিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে হাজির হলেন শিপ্রা হোটেলে। বললেন— চলো, ক্যাফেতে বসা যাক। ইতিমধ্যেই রঘুর ফোন এল, 'স্যার, আমি রিসেপশন-এ পৌঁছে গেছি। আপনি কোথায়?”