দ্রোণের ডেরা— দেরাদুন থেকে ট্রেনিং শেষ করার পরে বাড়ির সাথে শিবনাথের দূরত্বটা ক্রমশই যেন বেড়ে চলেছে। আত্মীয়স্বজনবিহীন মধ্যপ্রদেশের নাম না-জানা জঙ্গলের মধ্যে পড়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না তার। অনেক চিঠিপত্র লেখালেখি করা সত্ত্বেও কিছুতেই কিছু হল না। শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশের বনানীই তাকে ছাড়তে চাইল না।

আশা ছিল বাড়ির কাছাকাছি লোহারডাগা বা গুমলায় না হোক, ছোটোনাগপুর অঞ্চলের কোথাও হয়তো তাকে পাঠাতে পারে৷ কিন্তু বৃথা অরণ্যে রোদন। এখন তো মনে হচ্ছে চাকরিটাই তার গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গলের প্রতি একটা নিদারুণ ঘেন্না ধরে গিয়েছে! এই লোভনীয় চাকরিটাকে সে আর কোনও মতেই চাকরি বলে আখ্যা দিতে পারছে না। মনে হচ্ছে যেন নির্বাসন। কেন যে লোকে সাধ করে বনে-জঙ্গলে বেড়াতে আসে শিবনাথের সেকথা মাথাতেই ঢোকে না।

সময়-অসময়ে প্রায়ই বাড়ির জন্যে মনটা এমন ছটফট আর আনচান করতে থাকে যে, তখন কোনও কিছুর লোভ দেখিয়েও তাকে পোষ মানানো যায় না। তখন দৃষ্টির সীমারেখার মধ্যে যাবতীয় সবকিছুই যেন চকিতে ঝাপসা হয়ে যায়। নিজেকে তখন বড়ো একাকী আর অসহায় বোধ হয়।

আজ বহু বছর পরে পুজো উপলক্ষে ছুটি নিয়ে সে বাড়ি যাচ্ছে রাঁচিতে। কথাটা ভাবলেই যেন মনটা আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠছে। এরই নাম বোধহয় গৃহগত প্রাণ। মা-বাপের স্নেহচ্ছায়ায় যাদের দিন কাটে এই আনন্দ তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ব্যাপারটা তাদের কাছে যেমন অহেতুক তেমনই অকল্পনীয়ও বটে।

তখনও অন্ধকার। সমস্ত চরাচর নিঃস্তব্ধ নিঝুম। কেবলমাত্র গাড়ির ইঞ্জিনের অবিশ্রাম শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছিল না। রাতের ঘুম কে যে কেড়ে নিয়েছিল, তা হলফ করে বলা যাবে না। শিবনাথ গাড়ির জানলার ধারে বসে বাইরের দিকে অন্যমনস্ক ভাবে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল কেবল। অন্ধকারে মাঝেমধ্যে জোনাকির আলোয় তার একাগ্রতায় বাধা পড়ছিল।

তারপর অন্ধকার একটু পাতলা হয়ে গেলে পরে চারিদিক নিপুণ শিল্পীর হাতে সদ্য আঁকা ছবির মতো প্রকৃতির নয়নাভিরাম রূপ চোখের সামনে ফুটে উঠেছিল। যদিও রাঁচি শহরের বহুদূর পর্যন্ত বনানী এক প্রকার অদৃশ্য হয়ে গেলেও এখনও যা অবশিষ্ট আছে তা অতিশয় নয়নমুগ্ধকর। শুধু তাই নয়, অন্য কোথাও যার সন্ধান মেলে না তা আছে ছোটোনাগপুর অঞ্চলের রাঁচি শহরে। পাদপ শ্রেণির কি নেই এখানে?

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...