প্রায় ২ কিমি অতিক্রম করে এসে পৌঁছোলাম মন্দিরা ড্যাম-এর কাছে। রাউরকেলা থেকে দূরত্ব ২৮ কিমি। শঙ্খনদীর ওপর বাঁধ দিয়ে মন্দিরায় তৈরি হয়েছে সুবিশাল জলাধার। রাউরকেলা স্টিল প্ল্যান্ট ও তার টাউনশিপে জল সরবরাহ করা হয় এই জলাধার থেকেই। ১৯৫৭ সালে মন্দিরা ড্যাম তৈরি শুরু হয়। ড্যাম প্রায় ২৪০০ পরিবারকে ভিটেছাড়া করলেও পরে ৮৫০ পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়।

প্রতি রবিবার বিকেল ৪টে থেকে মন্দিরার হেলথ্ সেন্টারে ইস্পাত জেনারেল হসপিটাল-এর ওপিডি ক্লিনিকস চলে ২ ঘন্টা ধরে, নিকটস্থ গ্রামবাসীদের চিকিৎসার জন্য। পর্যটকদের সাধারণত ড্যাম-এর কোর এরিয়া পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয় না। সিআইএসএফ-এর সদা সতর্ক পাহারা রয়েছে। পরিচিতি থাকায় আমি অবশ্য সিআইএসএফ-এর চেকপোস্ট-এ জিপের নম্বর অফিসিয়ালি পাঠিয়ে দিয়েছিলাম আগেই, অনুমতি সংগ্রহের জন্য। গাড়ি নিয়ে তাই অনেকটা উপরে কোর এরিয়াতে চলে এলাম সোজা। আমাদের জিপ এসে থামল সেল-এর গেস্টহাউস সংলগ্ন সুপরিচর্যিত বাগানের কাছে। ঘড়িতে দেখি বেলা ৩টে। তিনদিন আগে এই অসাধারণ গেস্টহাউসের একটা ঘর বুক করে রেখেছিলাম। তাই প্রথমে সেখানে গিয়ে সকলেই মুখ-হাত ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর গেস্ট হাউসের ছাদ থেকে ড্যাম ও জলাধারের ছবি তুললাম অনেকগুলো। দূর থেকে বয়ে আসা শঙ্খ নদীকেও ক্যামেরাবন্দি করলাম।

নীচ থেকে ডাক এল। বাগানে চেয়ার-টেবিল পেতে দেওয়া হয়েছে। গেস্টহাউস-এর ক্যানটিন-ইন-চার্জ বেহেরাবাবুর তত্ত্বাবধানে চা-পকোড়ার আসর বসল বিকেলে। চা-পর্ব শেষ করে ড্যাম -এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখলাম। ঘড়িতে দেখি, প্রায় সাড়ে ৫টা বাজে। বিকেল গড়িয়ে সঙ্গে হয়ে গেছে। আমরা সবাই গাড়িতে এসে বসলাম। গন্তব্য সোজা রাউরকেলা। আগামীকাল সম্বলপুর যাবার পথে দেখে নেওয়ার ইচ্ছে আরও দুটি সুন্দর জায়গা। ভোরে উঠেই যাত্রার প্রস্তুতি নিতে হবে, তাই ডিনার সারব তাড়াতাড়ি।

রোদ-ঝলমলে সকাল। স্নান সেরে, চা-বিস্কুট পেয়ে সবাই যখন বোলেরোতে চড়ে বসলাম, ঘড়িতে সকাল ৯টা। গাড়ি আধঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছোল বেদব্যাস চক। রাজ্য সড়ক ১০ ধরে এগিয়ে চলেছি। বাঁপাশে চলে এল লারসেন-টুবরোর কংসবাহন টাউনশিপ, রাউরকেলা থেকে ২৫ কিমি দূরত্বে। সুসজ্জিত, আধুনিক, ছোটো টাউনশিপের মাঝে রকমারি ফুলে ভরা দৃষ্টিনন্দন এক বাগান। বাগানের পাশ দিয়ে হেঁটে বেড়ালাম কিছুক্ষণ। কংসবাহন টাউনশিপ রাউরকেলা মিউনিসিপ্যালিটির অধীনেই। গাড়ি আবার রাজ্য সড়ক ধরে কিছুদূর এগোতেই দেখি রাস্তার বাঁপাশ থেকে পথ চলে গেছে পীতামহল ড্যাম পর্যন্ত। সুন্দরগড় জেলায়, কুয়ারমুণ্ডা তহশিলের বালান্ডা গ্রামের কাছে শঙ্খ-এর শাখানদী পীতামহল-এ তৈরি এই ড্যাম সম্পূর্ণ হয় ১৯৭৮ সালে। ড্যামের দৈর্ঘ্য ৬৬০.২ মিটার এবং উচ্চতা ২৫.০৬ মিটার। জঙ্গল-পাহাড়ে ঘেরা এক অতি সুন্দর জায়গায় অবস্থিত এই ড্যাম তাই জনপ্রিয় পিকনিক স্পটও। মন্দিরা ড্যামের মতো এখানেও আগে এসেছি কয়েকবার। আমার বড়ো প্রিয় এই জায়গা। পীতামহল ড্যাম সংলগ্ন এই জায়গাটি যেন প্রকৃতির ফ্রেমে বাঁধানো এক নৈসর্গিক ছবি।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...