একঘেয়ে জীবনটা মাঝে মাঝে ছুটি চায়৷আর তখনই মনে হয়  হাতের নাগালে উত্তরবঙ্গ৷ কিন্তু যাবেন কোথায়? আমরা এনেছি  ভিন্ন স্বাদের দুটি ডেস্টিনেশন– যা আপনার ছুটির আমেজকে আনন্দে ভরিয়ে তুলবে৷

রকি আইল্যান্ড : শীতকাতুরে বাঙালি আর শীতপ্রবণ জায়গাগুলোতে যেতে ডরায় না শীতকালেও। তাই দিন চারেক হাতে থাকলেই উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনে চড়ে বসুন। ছোট্ট ছুটি কাটান রকি আইল্যান্ড-এ।

ডুয়ার্স-এর এই অপরূপ স্পটটি আপনার জন্য প্রাকৃতিক নৈসর্গিক শোভার ক্যানভাস বিছিয়ে রেখেছে। বডো বড়ো চট্টানের উপর দিয়ে হেঁটে বেড়ানো, মূর্তি নদীর জলে পা ডুবিয়ে আনন্দ নেওয়া এ সবই এই সফরের বাড়তি পাওনা। রকি আইল্যান্ড নামটিও বস্তুত এই কারণেই। গোল, লম্বা, চ্যাপটা নানা আকৃতির ছোটো বড়ো পাথর, এখানে নদীর গতিপথ রোধ করে রেখেছে। নদীর কাছে বসে দুদণ্ড মনের কথা বলার এ এক অনবদ্য প্রকৃতিবাসর।

জলের শব্দ আর পাখির কলকাকলিতে মুখরিত চরাচর। চোখ রাখুন সবুজের গভীরে, নানা রঙের প্রজাপতি ডানা মেলেছে সেখানে। বুক ভরে অক্সিজেন নিন আর নিজেকে বলুন ভালো আছি।

দিন দুয়ে কাটানোর অবসরে, একজন লোকাল গাইড-কে সঙ্গী করে, পায়ে পায়ে হেঁটে আসুন জঙ্গলে। ডেস্টিনেশন তিন কাঠারিয়া বা নাগা ভ্যালির দিকে। আর সঙ্গে গাড়ি থাকলে, অবশ্যই ঘুরে নিন ঝালং, বিন্দু, প্যারেন ও সুন্তালেখোলা।

কীভাবে যাবেন : শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে উঠে, নামুন মাল জংশনে। গাড়ি নিয়ে সোজা রকি আইল্যান্ড।

কোথায় থাকবেন : রকিতে থাকার জন্য নদীর ধারে কটেজ ও টেন্ট আছে। যোগাযোগ ৯৪৩৪১৪১৮১২। দু-একটা হোমস্টেও রয়েছে স্থানীয় গ্রামটিতে।

travel Bangarh

অনেকেই প্রকৃতির পাশাপাশি পছন্দ করে ইতিহাসের সাক্ষী হতে৷ তাদের যেতে হবে উত্তরবঙ্গের আরেকটি ডেস্টিনেশনে৷

বাণগড় : দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর শহরে, পুরাতাত্ত্বিক স্থাপত্যে ঘেরা বাণগড়ে এলে এক টুকরো ইতিহাসকে চাক্ষুস করতে পারবেন। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে, এখানে খননকার্যের ফলে, পাওয়া গেছে প্রাচীন স্থাপত্যের হদিশ ও নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন।

পুরাতত্ত্ব বিভাগের জন্য বেশ খানিকটা এলাকা সংরক্ষিত থাকলেও, এর বাইরে তিনদিক ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে কয়েকটি আদিবাসী গ্রাম। এ জায়গাটি যাকে বলে ফটোগ্রাফারস্ ডিলাইট। শহরের কেন্দ্রে হলেও, বাণগড়কে ঘিরে থাকা গ্রামগুলি ঘুরলে, বেশ একটা ভিন্ন স্বাদ পাওয়া যায়।

যাদের ইতিহাসে আগ্রহ আছে, তারা এখানে দেখতে পাবেন পাল ও সেন যুগের স্থাপত্যর চিহ্ন। সঙ্গে গুপ্ত ও মৌর্য যুগের বহু নিদর্শন। পৌরাণিক গাথা জড়িয়ে রয়েছে বাণগড়ের ছত্রে ছত্রে। এখানে একটি দুর্গেরও সন্ধান মিলেছে। খননকার্যে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলি সংরক্ষিত হয়েছে স্থানীয় সংগ্রহশালায়। গোটা একটা দিন বেড়ানোর পক্ষে বেশ ভালো জায়গা বাণগড়।

কীভাবে যাবেন : বাস বা ট্রেনে গঙ্গারামপুর পৌঁছোতে হবে। ধর্মতলা থেকে বাস পাবেন। ট্রেনে মালদা পৌঁছে গাড়িতে যেতে পারেন স্পটে।

কোথায় থাকবেন : বাণগড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। খাবার হোটেলও প্রচুর আছে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...