অনেকেরই মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে একটাই চিন্তায়। আর সেটা হল ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা। ওজন কমানোর মূল চাবি কাঠি হল পর্যাপ্ত জল পান করা। শরীরকে আর্দ্র রাখার পাশাপাশি এটা অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদাটাও কমায়। খাবারের আগে জল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এর ফলে, অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস হবে। ফলে পেটে চর্বি জমা হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।
অনেকসময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ চর্বি বৃদ্ধিকারী হরমোন যেমন কর্টিসোলের মাত্রা বাড়ায়। কর্টিসোলের তীব্রতায় ক্ষুধা বাড়ে।আমরা ক্যালোরি বহুল খাবার খেয়ে ফেলি এবং পেটে চর্বি জমতে শুরু করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে যোগ ব্যায়াম ও ধ্যানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ব্যায়াম করার কতগুলো সুফল তো আছেই৷ এর ফলে বাড়ে আত্মবিশ্বাস, মোটিভেশন আসে৷ প্রথমদিকে শরীর একটু বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে, পেশিতে ব্যথা হয় বটে, তবে কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন ব্যায়াম করার ফলে কেমন ঝরঝরে লাগছে নিজেকে। সারাদিন আগের চেয়ে বেশি কাজ করতে পারছেন৷ রাতে ঘুম ভালো হচ্ছে, বিরক্তি গ্রাস করে নিচ্ছে না৷ সেই সঙ্গে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে টানটান শরীর ফিরে পাওয়াটা তো একটা উপহার!
পেটের চর্বি কমাতে ক্রাঞ্চেস
ক্রাঞ্চ নিঃসন্দেহে খুব ভালো ব্যায়াম, দারুণ কাজেরও৷ কিন্তু যাঁরা কেবল ক্রাঞ্চের ভরসায় পেটকে নির্মেদ করে তোলার স্বপ্ন দেখছেন, তাঁরা ভুল করছেন৷ আপনার কোর মাসলগুলি শক্তিশালী না হলে পেটের মেদের আবরণ পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা অসম্ভব৷ কোর-এর মধ্যে কেবল পেট নয়, হিপ, লোয়ার ব্যাক আর গ্লুটসের পেশিও পড়ে৷ ক্রাঞ্চ কেবল পেটের পেশির উপর কাজ করে৷ তাই শুধু অজস্র ক্রাঞ্চ করলেই আপনার পেটের মেদ কমবে না৷ মেদহীন ছিপছিপে পেট ও কোমর পেতে চাইলে কোর মাসলগুলিকে শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করুন৷
কোন কোন ব্যায়াম অভ্যেস করবেন?
প্লাঙ্ক কোর মাসলকে শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে খুব কার্যকর৷ মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন৷ কনুইয়ের উপর ভর দিয়ে দুই হাত মুঠো করে রাখুন৷ তার পর পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে পুরো শরীরটা মেঝে থেকে উপরে তুলুন৷ মাথা থাকবে সোজা৷ আপনার শরীরটা ঠিক একটা ব্রিজের আকার নেবে৷ শুধু কোর নয়, আপনার কাঁধ, হিপ, পেট, গ্লুটসের মাসলকেও প্লাঙ্ক শক্তিশালী করে তোলে৷ প্রথমদিকে চেষ্টা করুন অন্তত 30 সেকেন্ড প্লাঙ্ক পজিশন ধরে রাখার৷ তার পর সেটা বাড়াতে বাড়াতে দু’ মিনিটে নিয়ে যান৷ সেই সঙ্গে অভ্যেস করুন সাইড প্লাঙ্কও৷ তবে খেয়াল রাখবেন, প্লাঙ্ক করার সময় শরীর যেন একেবারে সোজা থাকে, না হলে চোটের আশঙ্কা আছে৷ কোনও ব্যায়ামই প্রশিক্ষকের পরামর্শ ছাড়া করবেন না৷
খাবারে আনুন নিয়ন্ত্রণ
কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন খাওয়া বাড়ান। প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও দেহে চর্বি সঞ্চয়কারী ইন্সুলিনের মাত্রা কমায়।
শস্য-জাতীয় খাবার আঁশ সমৃদ্ধ। এটা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্ষুধাভাব কমাতে ও উচ্চ ক্যালরিবহুল খাবারের চাহিদা কমাতে সহায়তা করে। উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ শস্য ওজন কমায় এবং পেটের মেদ কমাতেও সহায়তা করে।
আদা স্থূলতার সমস্যা কমায় এবং প্রদাহনাশক উপাদান সমৃদ্ধ। ওজন কমাতে চাইলে খাবারে এই ধরনের মসলা যোগ করুন। এটা দেহের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।