জীবনের এক চরমতম সুখের মুহূর্ত হল– বিয়ে। আর এই বিয়ের দিনে আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকেন কনে। তাই কনেকেও সবার মাঝে সুন্দর ভাবে ফুটে উঠতে হবে গোলাপের মতো। এরজন্য ত্বকে বজায় রাখতে হবে লাবণ্য।

পরীক্ষার আগে যেমন ভালো ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয় পরীক্ষা ভালো করার জন্য, ঠিক তেমনই বিয়ের আগে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। প্রি-ব্রাইডাল প্রিপারেশনকে প্ল্যানিং-এরই এক অন্যতম অংশ ধরে নিয়ে এগোনো ভালো।

Beauty article
Beauty-care before marriage

দু’মাস আগের প্ল্যান

  •   দিনে অন্তত দুই থেকে তিন লিটার জল অবশ্যই পান করুন। তবে কনকনে ঠান্ডা জল একেবারেই খাবেন না। নরমাল ওয়াটার শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখে এবং শরীর থেকে বর্জ্য বের করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক ভালো থাকে।
  •   প্রতিদিন ডাবের জল খান। ত্বকের জৌলুস বজায় রাখার জন্য ডাবের জল খুবই কার্যকরী ভূমিকা নেয়। শরীরে পুষ্টির জোগানও দেয়।
  •   খাদ্যতালিকায় মাল্টিভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার রাখুন।
  •   চকোলেট ত্বকের ক্ষতি করে। তাই চকোলেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  •   বিয়ের অন্তত দু’মাস আগে থেকে সানস্ক্রিণ লোশন ব্যবহার করুন।
  •   বেশি মেক-আপ করবেন না। এতে ত্বকে চাপ পড়ে এবং ত্বকের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
  •   প্রতি মাসে একবার কেরাটিন হেয়ার স্পা করান।
  •   ডেড স্কিন রিমুভ করার জন্য প্রতি পনেরো দিন অন্তর ফ্রুট পিলিং করুন। তবে নিজে পিল-অফ ফেসপ্যাক রিমুভ করবেন না, বিউটি এক্সপার্ট-কে দিয়ে করান। পিলিং-এ ব্ল্যাক হেড্স-ও রিমুভ হয়।
  •   ত্বকে যদি সাদা ছোপ (দাগ) থাকে তাহলে স্কিন স্পেশালিস্ট-এর সাহায্যে পার্মানেন্ট কালার করিয়ে নিন। এক্ষেত্রে সঠিক ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন দিয়ে আপনার ত্বকের স্বাভাবিক কালার-এর সঙ্গে সাদা ছোপের জায়গা ম্যাচ করিয়ে দেওয়া হয়। এই কালার দুই থেকে পনেরো বছর পর্যন্ত থাকবে। তারপর পুনরায় কালার করানো যাবে। খরচও খুব বেশি নয়।
  •   শরীরের অবাঞ্ছিত রোম দূর করার জন্য কস্মেটিক ক্লিনিকে গিয়ে কস্মেটোলজিস্ট-এর সাহায্য নিন।
  •   নিয়মিত স্নান জরুরি। এতে ত্বক ভালো থাকে এবং মন তরতাজা হয়।
  •   স্নানের একঘন্টা আগে প্রতিদিন গায়ে কাঁচা হলুদ বাটা মাখুন। এতে ত্বক জীবাণুমুক্ত থাকবে এবং উজ্জ্বল হবে।
  •   শরীর থেকে সুগন্ধ ছড়ানোর জন্য বিয়ের দু’মাস আগে থেকে অ্যারোমেটিক অয়েল ব্যবহার করুন।
  •   শরীরের ওজন বেশি থাকলে, অন্তত দু’মাস আগে থেকে শরীরকে স্বাভাবিক শেপ এবং ওজনে আনার চেষ্টা করুন। এর জন্য নিয়মিত দই, শসা এবং পাকা পেঁপে খান। এতে বাড়তি মেদ ঝরে যাবে।
  •   চুলে খুসকির সমস্যা থাকলে, স্কিন স্পেশালিস্ট-এর সাহায্য নিন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা করান বিয়ের অন্তত দু’মাস আগে থেকে।
  •   ত্বকের ভালোমন্দ অনেকটাই নির্ভর করে লিভারের সুস্থতার ওপর। তাই লিভার সুস্থ রাখুন। বিয়ের আগে ধূমপান, মদ্যপান বন্ধ করুন এবং শাকসবজি খান বেশিমাত্রায়। সেইসঙ্গে, প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চার লিটার জল পান করুন।

এক মাস আগের প্ল্যান

  •   ফলের খোসাকে ব্যবহার করুন ফেসিয়াল কিট হিসাবে। পেঁপে এবং লেবুর খোসা এক্ষেত্রে উপযুক্ত কিট। তবে বিয়ের একদিন আগে ফেসিয়াল করবেন না। অন্তত পনেরো দিন আগে থেকে একদিনের ব্যবধানে এই ন্যাচারাল ফেসিয়াল ব্যবহার করুন।
  •   মাঝেমধ্যে গোল্ড এবং ডায়মন্ড ফেসিয়াল করুন। এতে ত্বকের জৌলুস বাড়বে।
  •   ঠোঁটের যত্ন নেওয়ার জন্য ফল থেকে তৈরি লিপ-বাম ব্যবহার করুন।
  •   চুলের যত্ন নিন। সপ্তাহে অন্তত একদিন হেড মাসাজ করান। এরজন্য শুদ্ধ নারকেল তেল ব্যবহার করুন।
  •   যদি ত্বকের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই প্রি-ব্রাইডাল ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিন। এর জন্য কস্মেটিক ক্লিনিক-এর দ্বারস্থ হওয়া ভালো। কারণ, ত্বকের সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য কসমেটিক ক্লিনিক-ই আদর্শ।
  •   মুখের সৌন্দর্যের জন্য ব্লিচ করান। মিল্ক ব্লিচ, প্রোটিন ব্লিচ এর মধ্যে উপযুক্ত।

১৫ দিন আগের প্ল্যান

  •   হাত এবং পা-কে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য ম্যানিকিওর-পেডিকিওর করান। পনেরো দিনের ব্যবধানে এটা করা ভালো।
  •   ত্বকের ক্ষতি হবে না এমন হার্বাল মেহেন্দি ব্যবহার করুন।

৩-৪ দিন আগের প্ল্যান

  •   লুক্ চেঞ্জ করার জন্য হেয়ারকালারও করাতে পারেন। তবে গ্লোবাল কালারিং অর্থাৎ মাথার পুরো চুল কালার না করে, হাইলাইটিং অর্থাৎ কিছু কিছু অংশ কালার করতে পারেন বিয়ের ৩-৪ দিন আগে।
  •   ত্বকের চরিত্র এবং সমস্যা অনুযায়ী ফেসিয়াল করান। যদি ড্রাই স্কিন হয় তাহলে কুকুন, ডাল হলে সুপার গোল্ড ফেসিয়াল করান।
  •   আইব্রোজকে সঠিক শেপ-এ রাখুন।
  •   হাতে ও পায়ে ওয়াক্সিং করুন।
  •   হাতে ও পায়ে মেহেন্দি পরুন।
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...