ইন্টিরিয়র-এর লুক্স বদলানোর প্রয়োজন হলেই, অনেকে ভাবেন বিষয়টা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। তা কিন্তু একেবারেই নয়। একটু বুদ্ধিমত্তা আর আপনার নান্দনিক বোধ– দুইয়ে মিলে আপনিই ভোল বদলে ফেলতে পারেন ঘরের অভ্যন্তরের। স্বল্প পরিসরে আজকাল বেশিরভাগ মানুষকেই মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু ছোটো ফ্ল্যাটও যদি সুন্দর করে সাজানো যায়, তাহলে আপনার বাসস্থানটি অচিরেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।

ঘরের পেইন্ট-এর তো একটা ভূমিকা আছেই। রং ঘরকে মোহময় করে তোলে। সেই সঙ্গে রুচিশীল জিনিস দিয়ে ঘর সাজিয়ে তোলাও জরুরি। জিনিসপত্র দিয়ে সাজানোর আগে, আসবাবগুলির স্থান পরিবর্তন করুন। এতেও বেশ খানিকটা তারতম্য ঘটবে দৃশ্যপটে।

ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে এখন ফিউশন লুক খুব ইন। অর্থাৎ ট্র্যাডিশনাল অ্যান্টিক জিনিসপত্রের সঙ্গে আধুনিক ক্রিস্টালও অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। মুম্বইয়ের নামি ইন্টিরিয়র ডিজাইনার সোনালি মোহাদিকার, গৃহশোভার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বললেন, আজকাল অন্দরসজ্জার তিন রকম ট্রেন্ড চলছে। ড্রাই ডেকোরেশন, ইকো-ফ্রেন্ডলি ডেকোরেশন ও থিম ডেকোরেশন।

ড্রাই ডেকোরেশন

এই ডেকোরেশনের জন্য লাগে ড্রাই ফ্লাওয়ার্স, ব্যাম্বু প্ল্যান্টস্, স্টোন, ডেকোরেটিভ শো-পিস প্রভৃতি। এগুলি আপনি নিজেই সাজাতে পারবেন, কোনও প্রফেশনাল হেল্প লাগবে না।

ইকো-ফ্রেন্ডলি ডেকোরেশন

এই ডেকোরেশন-এ কাগজ, থার্মোকল, কাচের বোতল, মাটির জিনিসপত্র প্রভৃতি দিয়ে সাজানো হয়। এগুলো সবই পরিবেশবান্ধব জিনিসপত্র। ঘরের আয়তন যদি কিছুটা বড়ো হয়, তাহলে জুটের ওয়াল হ্যাঙ্গিং, ফ্লাওয়ার পট বা নানা ধরনের লাইট দিয়েও ডেকোরেশন করা যায়। নানারকম বাহারি ল্যাম্পশেডস্, সুগন্ধী মোমবাতি, টেরাকোটা পট্স, সেরামিক ভাস প্রভৃতি দিয়ে চমৎকার সাজানো যায় ঘরটিকে।

থিম ডেকোরেশন

ঘরের আসবাবের ধরন বুঝে আজকাল অনেকেই থিম ডেকর-এর দিকে ঝুঁকছেন। এটা অবশ্য শুধু বাসস্থানের ক্ষেত্রেই নয়, অফিস ডেকোরেশন-এর ক্ষেত্রেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যেমন ঘরের আসবাব যদি অ্যান্টিক ধরনের হয়, তাহলে ঘরের রং থেকে সাজসজ্জায় সেই অ্যান্টিক লুকটাই বজায় রাখা উচিত। কেউ কেউ কালার থিম পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে ঘরে একই ধরনের রঙের সামঞ্জস্য রাখা হয়। আবার সমুদ্রকে যদি থিম করেন, তাহলে ঘরের পেইন্ট এমন হবে, যেন মনে হবে আপনি সমুদ্রতটে বসে আছেন।

ঘর সাজানোর টিপ্স

  •   রো থিম যদি পছন্দ করেন, তাহলে কিচেনের হাতা, খুন্তি, ঝাঁঝরি প্রভৃতি সারি দিয়ে দেয়ালে ঝুলিয়ে ডেকোরেশন করতে পারেন। কালার্ড চামচ বা প্লেটও এভাবে সাজাতে পারেন দেয়ালে।
  •   হ্যান্ডমেড ল্যাম্পশেড-এ রঙিন বাল্ব ঝোলাতে পারেন। ঘরের কোণে স্ট্যান্ডিং ল্যাম্প-ও রাখা যেতে পারে।
  •   কালার থিম যদি আপনার সাজানোর বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে রঙিন কাগজের ফুল দিয়ে ঘর সাজাতে পারেন। ছোটোদের ঘরের জন্য বাছুন চড়া, উজ্জ্বল রঙের ফুল। বেডরুম আর ড্রয়িংরুমের জন্য হালকা রঙের ফুল নির্বাচন করুন।
  •   বেডশিট বা পর্দার রঙেও যেন পেইন্ট-এর শেডের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে।
  •   দেয়ালে সুন্দর পেইন্টিং বা ওয়াল হ্যাঙ্গিং ঝোলাতে ভুলবেন না।
  •   ঘরে অ্যারোমা অয়েল ক্যান্ডেল্স জ্বালিয়ে ঘরের পরিবেশ সুগন্ধী করে তুলতে পারেন, সঙ্গে হালকা মিউজিক। এতে সহজেই শরীরের ক্লান্তি নিবারণ হবে।

ঘর সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিয়মিত পেস্ট কন্ট্রোল করান। কার্পেট পরিষ্কার করুন ভ্যাকুম ক্লিনারের সাহায্যে। মাঝেমধ্যে ফার্নিচার অ্যারেঞ্জমেন্ট চেঞ্জ করে অন্দরসাজে পরিবর্তন আনুন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...