নানা কারণে চোখের সমস্যা বাড়ছে। তাই বাড়ছে চশমার ব্যবহার। আজকাল প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ চশমা পরেন। এর মধ্যে চশমাধারী মহিলাদের সংখ্যাটাও খুব কম নয়। কিন্তু কে-ই বা চান চোখে একটা বাড়তি বোঝা চাপাতে? তবুও চশমা পরতে হয় প্রয়োজনে। আর যে-সব মহিলা চশমা পরতে বাধ্য হন, তাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, তাদের মুখমণ্ডল যতই সুন্দর হোক, চশমা পরলে আর তত আকর্ষণীয় লাগে না। এই সৌন্দর্যহীনতার বিষয়টি, তাদের আত্মবিশ্বাস কমাতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। অথচ চশমা হল ব্যক্তিত্বের সঙ্গী। কিন্তু আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে, চশমাকে কীভাবে করে তুলবেন সৌন্দর্যের উপকরণ? উত্তরে জানাই, এই সমস্যা সমাধানের অন্যতম রসদ হল মেক-আপ।
চশমা এবং আত্মবিশ্বাস
চোখের সমস্যা দূর করার জন্য চশমা যখন পরতেই হবে, তখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তা পরতে হবে। আর এই আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার জন্য, চশমার কথা মাথায় রেখে সঠিক মেক-আপ জরুরি। কারণ, চশমা পরতে যাদের ভালো লাগে না কিংবা যারা মনে করেন চশমা পরলে আকর্ষণ হারিয়ে যায়, তারা উপযুক্ত মেক-আপ-কে মাধ্যম করে সৌন্দর্য এবং আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন।
এ প্রসঙ্গে মনে রাখবেন, বিশ্বখ্যাত অনেক মহিলাই চশমা পরেন এবং উপযুক্ত মেক-আপ-এর মাধ্যমে, নিজেদের যথেষ্ট আকর্ষণীয় এবং ব্যক্তিত্বময়ী করে তোলেন।
পারফেক্ট মেক-আপ
চশমা পরেও নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কী ধরনের মেক-আপ জরুরি, তা জেনে নিন এবার।
কারেক্টর কনসিলারঃ ডার্ক সার্কল এবং চশমার কারণে চোখ আরও কালো লাগে, তাই পিচ এবং ইয়েলো টোন কনসিলার ব্রাশ-এর সাহায্যে ভালো করে চোখের চারপাশে লাগান। এমনভাবে এই টোন ব্যবহার করুন, যাতে চোখের কোণ পর্যন্ত পৌঁছোয়।
ফাউন্ডেশন এবং পাউডারঃ প্রথমে মুখের উপরের অংশ থেকে নীচ পর্যন্ত ভালো ভাবে ফাউন্ডেশন লাগান। চোখের কোণ, নাকের আশপাশেও ব্যবহার করুন। গায়ের রং-এর সঙ্গে মানানসই মাত্রায় ফাউন্ডেশন লাগান। স্কিন কালার ডার্ক হলে একটু বেশি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। এরপর জিঞ্জার টোন-এর ফেস পাউডার হালকা করে পাফ করুন পুরো মুখমণ্ডলে।
আইশ্যাডোঃ সবার আগে চোখে বেস কোট লাগান। তবে আপার লিড, এক্সট্রা শাইন আপ যেন না করে। কারণ, চশমার সঙ্গে আপার লিড বেশি উজ্জ্বল হলে চোখ ছোটো মনে হবে। তাই শিমার-এর প্রয়োগ যেন হালকা থাকে। আর যদি আইশ্যাডো-য় ন্যাচারাল লুক আনতে চান, তাহলে নিউট্রাল প্যাস্টেল শেড এবং গ্ল্যামারাস লুক-এর জন্য চশমার ফ্রেম এবং আইবলের বিপরীত শেড্স লাগান।
আইলাইনারঃ চশমা পরলে আইলাইনার লাগাতে ভুলবেন না। এর জন্য বেছে নিন জেলবেস লাইনার। কারণ, এটা চোখকে আনন্যাচারাল শাইন দেয় না। লাইনারকে যতটা সম্ভব ল্যাশলাইনের কাছে লাগান, যাতে আপনার চোখের সৌন্দর্য আরও বাড়ে। তবে চোখের ইনার কর্নার-এর পাতলা এবং আউটার কর্নারে একটু মোটা ভাবে লাইনার ব্যবহার করুন।
মাসকারা এবং ল্যাশেসঃ চশমা পরলে মাসকারা এবং আর্টিফিশিয়াল ল্যাশেস ব্যবহার করা উচিত নয় বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু মাসকারা চোখের সৌন্দর্য বাড়ায় এবং আর্টিফিশিয়াল ল্যাশেসও একইরকম ভাবে আকর্ষণ বাড়ায়। অতএব, আর্টিফিশিয়াল ল্যাশেসও ব্যবহার করুন এবং দু’কোট মাসকারা লাগান।
ব্লাশারঃ চশমা পরলে ব্লাশার অবশ্যই লাগান। কারণ ব্লাশার মুখের শ্রী বাড়ায়। লাইট পিংক কিংবা পিচ শেড-এর ব্লাশার ব্যবহার করুন। তবে খুব হালকা টাচ্ দেবেন, যাতে ন্যাচারাল লুক বজায় থাকে।
লিপ্সঃ চশমা পরলে যেহেতু মেক-আপ-এর মাধ্যমে চোখকে হাইলাইট করা হয়, তাই ঠোঁটের জন্য সফট এবং ন্যুড শেড্স ব্যবহার করুন। অবশ্য চাইলে হাইগ্লসও ব্যবহার করতে পারেন।
আইব্রোজঃ আইব্রোজ-কে আর্চ শেপ-এর করে নিন। যদি পাতলা হয় তাহলে উপযুক্ত ব্রো পাউডার কিংবা আইব্রো পেন্সিল ব্যবহার করুন। এতে আইব্রোজ পারফেক্ট লুক দেবে।
হেয়ারস্টাইলঃ চশমার সঙ্গে এমন হেয়ারস্টাইল করুন, যাতে বাউন্সি এবং পাফি লুক পাওয়া যায়। চাইলে রোল্স কিংবা ক্রিপিং মেশিন ব্যবহার করুন। চুলের ভলিউম বাড়ানোর জন্য ভলিউমাইজিং স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।