জীবন বহমান। তাই, পৃথিবীর আলো দেখার পর ধীরে ধীরে কেটে যায় শৈশব এবং কৈশোর। এরপরই প্রাকৃতিক নিয়মে শরীরে আসে যৌবন। আর এই যৌবনকে উপভোগ করার অন্যতম মাধ্যম হল বিয়ে। অর্থাৎ, নারী-পুরুষের মানসিক এবং শারীরিক মিলনের সামাজিক স্বীকৃতি। যদিও এখন অনেকে বিয়ের আগেই যৌনতার স্বাদ নেন কিন্তু ভারতীয় সামাজিক রীতি-নীতি অনুযায়ী বিয়ের পরেই যৌনসঙ্গমের সুযোগ পাওয়া যায় সাধারণত। কিন্তু কীভাবে সঙ্গীকে খুশি রাখবেন কিংবা নিজে পরিপূর্ণ সুখ পাবেন, তাই নিয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে দিন কাটান। আর ঠিক এই কারণেই, নবদম্পতিদের জন্য রইল কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।

মানসিক প্রস্তুতি

প্রেমের বিয়েই হোক কিংবা অ্যারেঞ্জড, বিয়ের পরের সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স-এর জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তবে এই প্রস্তুতি বিয়ের অনুষ্ঠান রূপায়ণের মতো নয়, বাস্তবিক অর্থে দুটি মনের সংযোগস্থাপন এবং সুসম্পর্ক তৈরি করার সঠিক প্রস্তুতি। কারণ, সবাই জানেন নবদম্পতির মধ্যে আত্মার সংযোগ স্থাপিত না হলে, ভালো ভাবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা যায় না। তাই সাধারণ আলাপপরিচয়ের পর, ধীরে-ধীরে সেক্স সম্পর্কে একে অন্যের ইচ্ছে-অনিচ্ছে কিংবা ভালোলাগা-মন্দলাগার বিষয়ে জেনে নিন। যদি প্রেম করে বিয়ে না হয়ে দেখেশুনেও বিয়ে হয়, তাহলেও কোর্টশিপ পর্বে মানসিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গভীরতা এনে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স-এর ব্যাপারে পরস্পরের চাহিদার বিষয়টি জানার চেষ্টা করুন।

দুজনের মধ্যে কারও যদি পুরোনো প্রেমপ্রীতি অর্থাৎ, অন্য কারওর সঙ্গে পাস্ট রিলেশন থেকে থাকে অথচ সে যদি নিজে থেকে না বলে, তাহলে এই বিষয়ে প্রশ্ন করে তিক্ততা না বাড়ানোই ভালো। বরং, হবু জীবনসঙ্গীর সঙ্গে এমন কথা বলুন এবং ব্যবহার করুন, যাতে সে আপনার প্রেমে হাবুডুবু খায়। এবং আপনাকে শারীরিক ভাবে পাওয়ার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে থাকে। আর বিয়ের পরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে যাতে একে অন্যকে তৃপ্ত করতে পারেন, সেজন্য সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স-এর ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান সঞ্চয় করে রাখুন। যেমন, প্রথমবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার সময় কী ধরনের সমস্যা হয় কিংবা সেই সমস্যা কাটিয়ে কীভাবে তৃপ্তি পাওয়া যায় ইত্যাদি। এইসব বিষয়ে যদি জ্ঞান না থাকে তাহলে ইন্টারনেট-এর গুগল-এ সার্চ দিয়েও জ্ঞান সঞ্চয় করা যায়। সম্বন্ধ করে বিয়ে হলে কেউ কেউ জীবনসঙ্গীর সামনে বিবস্ত্র হতে প্রথমদিকে লজ্জা পান। কিন্তু সত্যিটা হল এই যে, বিবস্ত্র না হয়ে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হলে পরিপূর্ণ আনন্দ পাওয়া যায় না। তাই এই ব্যাপারেও মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। আর যদি কোনও কাপল বিয়ের আগে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করে থাকেন, তাহলে বিয়ের পর সঙ্গমে স্বাদ পরিবর্তনের জন্য বিয়ের আগে অন্তত একমাস সঙ্গমক্রিয়া বন্ধ রাখুন। এতে পরস্পরের প্রতি অতিরিক্ত শারীরিক আকর্ষণ অনুভব করবেন এবং পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাবেন।

শারীরিক প্রস্তুতি

বিয়ের অন্যতম অলিখিত শর্ত যেহেতু সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স, তাই একে অন্যকে শারীরিক ভাবে আনন্দ দেওয়ার বিষয়টিও অলিখিত শর্তের মধ্যে পড়ে। আর এই অলিখিত শর্ত পূরণ করার জন্য, অর্থাৎ পরিপূর্ণ তৃপ্তির জন্য শারীরিক প্রস্তুতির বিশেষ প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন, কীভাবে নেবেন এই শারীরিক প্রস্তুতি ?

বিয়ের আগে প্রথমে মেডিকেল চেক-আপ করান। কোনও শারীরিক, মানসিক দুর্বলতা আছে কিনা কিংবা যৌনরোগ আছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নিন। যদি কোনও রোগ-অসুখ থাকে, তাহলে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হোন। এমনকী যদি শরীরে কোনও চর্মরোগ থাকে কিংবা মহিলাদের বুকে মুখে অবাঞ্ছিত রোম থাকে, তাহলে তা নির্মূল করার চেষ্টা করুন। শারীরিক সমস্যার মধ্যে যদি এক্সট্রিম হোয়াইট ডিসচার্জ কিংবা পিরিয়ডের সমস্যা থাকে, তাহলে অবশ্যই উপযুক্ত চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হোন। বিয়ের আগে থেকে হাইজিন-এর ব্যাপারেও সতর্ক থাকবেন। মনে রাখবেন, ‘ই-কোলি’ এক মারাত্মক অসুখ। ভ্যাজাইনাল ট্র্যাকে যদি এই রোগের জীবাণু বাসা বাঁধে, তাহলে আপনার বহু আকাঙ্খিত প্রথম মিলনরাত হয়ে উঠবে যন্ত্রণাদায়ক। তাই ফুলশয্যা রাতের খলনায়ক ‘ই-কোলি’ যাতে কাছে না ঘেঁষতে পারে, তার জন্য বিয়ের আগে থেকে হাইজিন মেইনটেন করার চেষ্টা করুন। সেইসঙ্গে, কোনও মহিলা যদি দেখেন তার বিয়ের দিনগুলিতে ‘পিরিয়ড’ চলার সম্ভাবনা আছে, তাহলে কোনও গাইনিকোলজিস্ট-এর কাছ থেকে ওষুধ জেনে নিয়ে খেয়ে নিন এবং নিশ্চিন্ত থাকুন।

মাথায় রাখবেন, ফুলশয্যা হল পরস্পরকে আবিষ্কার করার রাত, কৌতূহল নিরসনের রাত। তাই বাঘ-বাঘিনীর মতো ঝাপিয়ে পড়ে হঠকারিতা করতে যাবেন না। প্রশংসামূলক মিষ্টি কথা বলতে বলতে সঙ্গীর শরীরে হাত রাখুন। প্রথমে কপালে, চোখে হালকা চুমু দিয়ে শুরু করে, দৃঢ় আলিঙ্গনে আবদ্ধ হোন পরস্পর। এরপর একে অন্যের পােশাক খুলতে সাহায্য করুন। অন্তত পাঁচ মিনিট চুম্বন ও স্পর্শের দ্বারা ফোরপ্লে করার পর সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স-এ লিপ্ত হোন। তবে প্রথমবার সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করার ক্ষেত্রে তিনটি প্রধান সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমত, ফোরপ্লে চলাকালীনই পতন (ডিসচার্জ) হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, পেনিট্রেশনে অসুবিধা হতে পারে এবং তৃতীয়ত, সতীচ্ছদ (স্ত্রী যোনিতে থাকা পাতলা পর্দাবিশেষ) ছিড়ে গিয়ে সামান্য রক্তপাত হতে পারে। কিন্তু উল্লিখিত তিনটি সমস্যাকে সাধারণ সমস্যা ধরে নিয়ে চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। মনে রাখবেন, প্রথমবারের অসুবিধা কাটিয়ে সামান্য ধৈর্য ধরলেই, দিন দুয়েকের মধ্যে স্বাভাবিক এবং পরিপূর্ণ আনন্দলাভ করতে পারবেন। আর এই আনন্দকে দ্বিগুণ করার জন্য, বিয়ের ঘোর কাটার আগেই মধুচন্দ্রিমাকে মাধ্যম করুন। বাড়ির হইহট্টগোলের পরিবেশ ছেড়ে, নির্জন প্রকৃতিতে নিশ্চিন্তে শরীরী মিলনে মেতে উঠুন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...