কলকাতায় এত গরম বোধকরি ৭-৮ বছর আগেও টের পাওয়া যেত না। আবহাওয়ায় এক অদ্ভুত রকমের পরিবর্তন এসেছে, বলছেন আবহবিদরা। মনসুন ভারতে ঢুকে গেছে তবু গরমের প্রকোপ এতটুকু কম হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। এই অদ্ভুত তাপমাত্রার হেরফেরের সঙ্গে শরীরকে অভ্যস্ত করাটা বেশ বড়োসড়ো একটা চ্যালেঞ্জ। শরীর, বিশেষ করে ত্বকের সঠিক যত্ন ও সতর্কতার অভাবে নানারকম রোগ অসুখ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় গরমের সময়টায়। ডিহাইড্রেশন, অ্যালার্জি, ব্রণ, ঘাম ও ময়লা জমে ফাংগাল ইনফেকশন, চুলকানি, ঘামাচি, র‍্যাশ – এমন নানান সমস্যার সৃষ্টি হয় এই ঋতুতে।

এমন নানা সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য কিছু জরুরি বিষয় অবশ্যই মনে রাখুন

১) হাইপার হাইড্রোলিসিস অর্থাৎ শরীরের কিছু অংশে যেমন হাতের পাতা, পায়ের তলা প্রভৃতি অতিরিক্ত ঘামতে থাকে। এর ফলে অস্বস্তি তৈরি হতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে ডার্মাটোলজিস্ট-এর পরামর্শ মতো অ্যান্টিপার্সপিরেন্ট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঘাম কম পরিমাণে নিসৃত হয়। এছাড়া হাত-পা বেশিবার ধোয়ার চেষ্টা করুন। হাইজিন-এর বিষয়টি মাথায় রেখে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করুন।

২) গ্রীষ্মে আন্ডারআর্মস পরিচ্ছন্ন রাখতে মুলতানি মাটির প্রলেপ লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। ভিটামিন ‘ই’-যুক্ত নারকেল তেল মাসাজ করলে, আন্ডারআর্মস-এর ঘাম কমবে এবং সেই সঙ্গে দুর্গন্ধও।

৩) রোদে বেরোনোর সময় ব্যাগে অবশ্যই ওয়েট ওয়াইপ্স ও সুতির রুমাল রাখুন। মুখ পরিচ্ছন্ন থাকলে র‍্যাশ বেরোবে না। চুলকানি, র‍্যাশ বা ফাংগাল ইনফেকশন রোধ করতে গোলাপজলে মুখ ধুয়ে নিন। রাতে নারকেল তেল মাসাজ করুন।

৪) কেউ কেউ বছরভর হালকা গরমজলে স্নান করতে অভ্যস্ত। এটি করা উচিত নয়। গরমকালে স্বাভাবিক জলে স্নান করুন। একান্তই যদি অভ্যাস ত্যাগ করতে না পারেন, চেষ্টা করুন বেশিক্ষণ ধরে গরমজলে স্নান না করতে। ত্বকের উপর গরমজলের ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

৫) বেশি সময় ধরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে না থাকার চেষ্টা করুন, কারণ এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে গিয়ে চেহারা রুক্ষ হতে থাকে।

৬) মুখের ত্বক সজীব ও কোমল রাখতে দিনে অন্তত তিনবার জলের ঝাপটায় মুখ ধোন এবং মাইল্ড ক্লিনজারের সাহায্যে মুখ পরিষ্কার করুন।

৭) একটি গবেষণায় জানা গেছে যে শতকরা ৯০ শতাংশ এজিং-এর সমস্যা সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত সময় রোদে ঘুরে কাজ করার জন্য। তাই রোদে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন মাস্ট এবং ফিরে আসার পর স্ক্রাবার ব্যবহার করাও সমান জরুরি।

৮) গরমে পরিশ্রান্ত হয়ে এনার্জি লেভেল ড্রপ করে যায়। তাই তাজা ফলের রস নিয়মিতভাবে পান করুন।

৯) সপ্তাহে দুবার চ্ চামচ মধু, ২০ ফোঁটা লেবুর রস, আধচামচ দুধের সর, ১ চামচ দেশি ঘি ও ১ চামচ জবের ভুসি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে সমস্ত গায়ে লাগান। আধঘন্টা পর ঈষদুষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। তারপর ভিটামিন ‘ই’-যুক্ত ক্রিম লাগান।

১০) আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, সর ব্যবহার করবেন না এবং মাস্ক ধোয়ার পর ভিটামিন ‘ই’-ক্রিমের বদলে ময়েশ্চারাইজার লাগান।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...