অনেকেই ভালো ঘুম হয় না বলে অভিযোগ করেন। কেউ কেউ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ঘুমের ওষুধ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ঘুমের ওষুধের উপর এই নির্ভরশীলতা ক্ষতিকারক। চেষ্টা করুন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঘুমোতে।

ঘুমের প্রস্তুতি শুরু করুন বিছানায় যাওয়ার অনেক আগেই। ঘুমোনোর অন্তত ৬ ঘণ্টা আগে থেকেই ক্যাফিন আছে এমন কোনও পানীয় পান করা বন্ধ করে দিন।ক্যাফিন এমন এক জিনিস যা আপনার শরীরে থাকে অন্তত ৯ ঘণ্টা। কাজেই ভালো করে ঘুমাতে চাইলে দুপুর ১২টার পর থেকেই চা, কফি এবং কোক-পেপসির মতো পানীয় বাদ দিয়ে দিন, বা কমিয়ে ফেলুন।

যদি পারেন তাহলে ঘুমের সময়ের প্রায় চার ঘণ্টা আগে ডিনারটা সেরে নিন। রাতের খাবারে বেশি মশলাদার গুরুপাক খাবার বা চিনি-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ ভারী খাবার হজম হতে দেরি হয়। ফলে আপনার ঘুমের প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে।

মদ্যপান আপনাকে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করতে পারে – কিন্তু আপনার সেই ঘুম খুব গভীর হবে না। যাকে বলে ‘র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট’ বা ‘আরইএম স্লিপ’ – তা মানুষের স্মৃতি ধরে রাখতে ও শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অগভীর ঘুমে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।তা ছাড়া মদ্যপানের ফলে শরীরে বেশি প্রস্রাব তৈরি হয়, তাই রাতে টয়লেটের জন্য ঘুম ভেঙে যাবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

অনিদ্রার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, ঘুমোনোর আগে এমন কিছু করুন যা আপনার দেহ ও মনকে চাপমুক্ত করবে।সেটা ধ্যান বা সুদিং মিউজিক শোনাও হতে পারে। এটা আপনাকে প্রতিদিনই করতে হবে, যাতে এটা করলেই আপনার শরীর এবং মন্তিষ্ক বুঝে যায় যে ঘুমের সময় হয়েছে।হাল্কা গরম জলে স্নান,জীবনসঙ্গীর সাথে কথা বলা, ডায়েরি লেখা, বই পড়া- যেটাই করুন, সেটা যেন নিত্যকার অভ্যাসের অঙ্গ হয়ে ওঠে।

অনেকেই খালি পেটে ঘুমাতে পারেন না। তবে একেবারে ভরপেট খেয়ে বিছানায় গেলেও ঘুমের অসুবিধা হতে পারে। রাতে অনেকের হঠাৎ করে খিদে পেয়ে যায়।সেটাও ঘুম বিঘ্ন্ত হওয়ার একটা কারণ। তখন ইচ্ছে করে, কিছু একটা খাই। কিন্তু ওজন কমানোর চিন্তা বা আরো মোটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কিছু না-খাওয়াই মঙ্গল।

তবু খুব খিদে পেলে, ডায়েটও সঠিক হবে, আবার রাতে ভালো ঘুমও হবে— এমন খাবার খেতেই পারেন। এমন পাঁচটি খাবার হলঃ

দুধ

দুধকে সুষম খাবার বলা হয়। দুধ ট্রিপটোফানের পরম উৎস। দুধ খেলে শরীরে মেলাটোনিন ও ট্রিপটোফান হরমোন নিঃসৃত হয়, এই হরমোনগুলো ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করলে, তা শরীরের মাংসপেশিকে শিথিল করবে।। ফলে ঘুমও তাড়াতাড়ি আসবে।

কাজুবাদাম

প্রচুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ কাজুবাদাম। এতে প্রচুর ফাইবার ও পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। হৃদপিণ্ডের জন্যও বেশ উপকারী। শরীরকে ফিট ও সুস্থ রাখতে কাজুবাদামের বিকল্প নেই ।, কাজুবাদামকে ঘুমবান্ধব খাবার বলা হয়। এটি ঘুম-নিয়ন্ত্রক হরমোন, মেলাটোনিন উৎপাদন করে।

কলা

কলাতে প্রচুর ট্রিপটোফান আছে। ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর পাকা কলা। আর এ দুটি উপাদানই ঘুম-নিয়মিতকরণ হরমোন মেলাটোনিন উৎপাদনে প্রয়োজনীয়। কলাতে আছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার, যা ধীরে হলেও শরীরে শক্তির জোগান দেয়।

মধু

ঘুমানোর আগে এক টেবিল-চামচ মধু খেলে ভালো ঘুম আসে। মধুতে ঘুম উৎপাদনকারী হরমোন অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রিপটোফান আছে।মধু ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

চেরি ফল

রাতের খাবারের পর চেরি ফল খেলে ঘুম ভালো হয়। তা ছাড়া মাথাব্যথা ও মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতেও এই ফল সাহায্য করে। চেরিতে থাকা মেলাটোনিন রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...