ভারতের ২৮ তম অঙ্গরাজ্য ছত্তিশগড়। আগে অঞ্চলটি ছিল দক্ষিণ কোশল। কালচুরি বংশের রাজারা এখানে রাজত্ব করতেন। সারা রাজ্য জুড়ে সৌন্দর্যের কোনও কমতি নেই। রয়েছে পাহাড়ের সবুজ, গহন বনের হাতছানি, বন্য নদী, মায়াবী জলপ্রপাত, আদিবাসীদের ঘ্রাণ, শিল্পের সম্ভার– সব মিলিয়ে ছত্তিশগড় ইচ্ছে ডানা মেলে উড়ে যাবার এক অনবদ্য ঠিকানা। হারিয়ে যাওয়ার হাজার পথ এখানে খোলা রয়েছে, যে-কোনও পথ বেছে নিয়ে পা বাড়ালেই চলবে।

জগদলপুর

ছত্তিশগড়ের সেরা গন্তব্য জগদলপুর। আদিবাসী অধ্যুষিত জগদলপুর বস্তার জেলার সদর শহর। বস্তার ভারতের বৃহত্তম জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম। নতুন রাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার সময় বস্তার জেলাকে ভাগ করে নতুন জেলা দন্তেওয়াড়া সৃষ্টি হয়েছে। তাতেও জগদলপুরের গুরুত্ব এতটুকু কমেনি। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই প্রচারের আলোয় চলে আসে বস্তার সুন্দরী। আর এখন তো ছত্তিশগড় পর্যটনের বিজ্ঞাপন মানেই জগদলপুর ও চিত্রকোট জলপ্রপাত। মূলত কাঙের ঘাটি (কেউ বলেন কাঙ্গের ঘাটি) ন্যাশনাল পার্ক, তিরোথগড় জলপ্রপাত, কাঙের ধারা, কোটময়র গুহা, দন্ডক গুহা, কৈলাশ গুহা– এই হল জগদলপুরের ভ্রমণ মানচিত্রের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ বিন্দু। এর বাইরে দলপত সাগর, অ্যানেথ্রোপলজিক্যাল মিউজিয়াম, বালাজি মন্দিরও ঘুরে দেখেন অনেকে।

কাঙের ঘাটি ন্যাশনাল পার্ক

ভারতের গভীরতম জাতীয় উদ্যান, জগদলপুর থেকে ৪৩ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কেশলুর মোড়, সেখান থেকে বাঁদিকে গেলে কাঙের ঘাটি জাতীয় উদ্যান। বেশ কিছুটা পথ পাহাড়ের সাথে সখ্য স্থাপন করে এগিয়েছে। এই পথ চলে গিয়েছে হায়দরাবাদের দিকে। কেশলুর থেকে বাঁদিকের পথ ধরতেই গহন বন এসে মিতালি পাতায়। আঁকাবাঁকা পথ ধরে যেতে যেতে এক জায়গায় গাড়ি থামায় চালক। জঙ্গলের পর্দা ভেদ করে অনেক দূরে দেখা যায় জলের ধারা নেমে আসছে পাহাড়ের ঢাল ধরে। ওটাই ভারতবিখ্যাত তিরোথগড় জলপ্রপাত। একসময় গাড়ি এসে থামে কাঙ্গের ঘাটি জাতীয় উদ্যানের প্রবেশপথে। জগদলপুর থেকে নিয়ে আসা অনুমতিপত্র এখানে দেখাতে হল। কোটময়র গুহা যেতে এবং দেখতে হলে গাইড নেওয়া বাধ্যতামূলক এবং তার চার্জ ধরে নেওয়া হয়েছে পার্কের এন্ট্রি ফি’র সাথেই। মায় পেট্রোম্যাক্সের ভাড়া অবধি নেওয়া হয়েছে। কাঙের ঘাটি জাতীয় উদ্যান যথার্থ অর্থেই একটি ভার্জিন ডেস্টিনেশন। আছে বহু ধরনের গাছগাছালি, বন্যপ্রাণী। জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করলেই পাওয়া যায় মন কেমন করা জংলি গন্ধ। ইতিউতি চেয়ে দেখলে গহিন বনের আদিম অন্ধকার, পাহাড়তলির আশেপাশে ঘোর লাগা আলো। প্রাচুর্য ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য কাঙের ঘাটির সর্বত্র চোখে পড়বে। কাঙের ধারা জলধারাটি বনের গভীরে মুখ লুকিয়ে রেখেছে। এদিক-ওদিকে ছোট্ট টিলা। ধাপে ধাপে নেমে গিয়েছে শান্ত জলধারা। নিঃসীম নির্জনতার মাঝে কুুলুকুলু ধবনি তুলে বয়ে যায় কাঙের নদী। নিশ্চিন্তে। মনে ভর করে স্বপ্নমেদুরতা। সেই স্বপ্নমেদুরতাকে পুঁজি করেই পৌঁছে যাওয়া কোটময়রের কাছে। গুহায় প্রবেশ করতে হয় অত্যন্ত সন্তর্পণে। পেট্রোম্যাক্সের আলো নিয়ে পথ দেখিয়ে চলেন গাইড। বুঝিয়ে দেন প্রকৃতির অনন্য সৃষ্টির রহস্য। স্ট্যালাগটাইট ও স্ট্যালাগমাইট ফর্মেশনে তৈরি হয়েছে অসাধারণ গুহা-স্থাপত্য।

কাঙের ঘাটি জাতীয় উদ্যানের প্রবেশপথের বিপরীতে একটি গেট আছে। মাঝ বরাবর চলে গিয়ে জগদলপুর-হায়দরাবাদ সড়ক। সেই গেট থেকে তিরোথগড় জলপ্রপাতের দূরত্ব মাত্রই ৪ কিমি। মুনগাবাহার নদী নির্দিষ্ট ছন্দে বহমান হয়ে এসে এখানে ঝাঁপ দিয়েছে গিরিতলে। তারপর আবার ঝাঁপ দিয়ে বয়ে গেছে পূর্বদিকে। বর্ষার পর তিরোথগড়ের রূপ বর্ণনাতীত। যেন ভরা যৌবনের ঢল নেমে এসেছে! দুগ্ধ ফেনিল জলধারা অনেক পর্যটককেই স্নান করতে প্রলোভিত করে। অনেকে করেনও। তবে অত্যন্ত সতর্কতা আবশ্যক। নানা সময়ে ঘটে গেছে নানা দুর্ঘটনা। এখানে রয়েছে একটি মন্দির। তিরোথগড়ে বিভিন্ন ধারা এখান থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। বড়োই অপরূপ সেই রূপ। প্রকৃতি যেন সৃষ্টি সুখের উল্লাসে, রচেছে এই নিসর্গ।

চিত্রকোটের পথে

সকালের দিকে ঘুরে আসুন কাঙের ঘাটি জাতীয় উদ্যান, দুপুরে জগদলপুর ফিরে এসে লাঞ্চ সেরে চলুন চিত্রকোটের দিকে। চিত্রকোট যাবার পথেই পড়বে অ্যানথ্রোপলজিক্যাল মিউজিয়াম। আদিবাসী প্রধান রাজ্য ছত্তিশগড়ের আদিবাসীদের জীবনযাত্রার ধরণ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান পেতে হলে দেখতেই হবে এই জাদুঘরটি। এরপরেই প্রধান আকর্ষণ। প্রায় সবাই মিউজিয়াম দেখে সরাসরি চলে যান ‘ভারতের নায়াগ্রা’ চিত্রকোট জলপ্রপাত দেখতে। কিন্তু যাত্রাপথের ধারে যে দুটি রমণীয় জলপ্রপাত দেখার আছে, তা অনেকেই জানেন না! জগদলপুর থেকে ১৫-১৬ কিমি এসে বাঁদিকের পথ ধরুন। ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ’ ধরে তাহলেই পৌঁছে যাবেন চিত্রধারা জলপ্রপাতের সামনে। অ-পূ-র্ব! বিস্মিত হয়ে দেখতে হয়! ধাপে ধাপে নেমে এসেছে দুগ্ধফেনিল জলধারা। যেন ছন্দময়ী রমণী! দু’পাশে সবুজ বনস্থলি জড়িয়ে ধরে টিলাকে। আকাশে উড়ে বেড়ায় মেঘ, বৃষ্টির হুমকি সে দিয়েই রেখেছে। রমণীয় এই পরিবেশে দাঁড়িয়ে একপশলা বৃষ্টিতে ভিজতে বেশ লাগে। স্থানীয়রা এই প্রপাতটিকে মেহেন্দ্রি গুমর বলে। ‘গুমর’ শব্দের অর্থ হল জলপ্রপাত।

চিত্রধারা দেখে সোজা ছুটতে থাকলাম চিত্রকোট রোড ধরে। হঠাৎই লোহন্ডিগুড়ার কাছে এসে গাড়ি বাঁদিকের পথ ধরে। এই রাস্তা চলে গেছে বারসুরের দিকে। প্রায় ১৪ কিমি পথ এসে হঠাৎ গাড়ি ডানদিকে ঘুরে মাঠের উপর দিয়ে ছুটতে শুরু করে। হঠাৎ করে থেমেও যায় আবার। সামনে অতলান্ত খাদ আর সবুজ পরিবেশ। ডানদিকে নজর যেতে তাক লেগে যায়। স্থানটির আকৃতি অনেকটা ঘোড়ার ক্ষুরের মতো। তীব্রবেগে নেমে এসেছে জলধারা, ভীষণ তার গর্জন। এই সুন্দর শুধু সুন্দর নয়, ভয়ংকর সুন্দর। ছত্তিশগড়ের সম্পূর্ণ আদিম গন্তব্য, এখনও পর্যটকদের ভিড়ে স্বকীয়তা হারায়নি। এমনকী ছত্তিশগড়ের পর্যটন মানচিত্রেও ব্রাত্য রয়ে গেছে জলপ্রপাতটি, যার স্থানীয় নাম তমদা গুমর। এই জলধারা সোজা গিয়ে মিশে গেছে ইন্দ্রাবতীর বুকে। সেই ইন্দ্রাবতীই আবার সৃষ্টি করেছে চিত্রকোট জলপ্রপাত। এরপর সেদিকেই রওনা দিই। অবশেষে পৌঁছে গেলাম ‘ভারতের নায়াগ্রা’ চিত্রকোট জলপ্রপাতের সামনে। অ-সা-ধা-র-ণ! বেশ কিছু সময় শুধু হতবাক হয়ে রইলাম। ইন্দ্রাবতী নদীর আস্ফালন আমাদের বিস্ময়কে অন্য স্তরে উন্নীত করে। বিরাট বড়ো এলাকা জুড়ে নেমে আসছে ইন্দ্রাবতীর জলধারা। তার গায়ে সূর্যের রশ্মি পড়ে সৃষ্টি করেছে রামধনু। প্রকৃতি আর নদী এখানে বৈঠকি আড্ডা বসিয়েছে। নদীর চলনেও যেন পাওয়া যায় বুনোগন্ধের মৌতাত। নৈঃশব্দের বুক চিরে শুধু জলপ্রপাতের পতনের বজ্রনির্ঘোষ! ৯৬.৩২ মিটার উঁচু থেকে নেমে এসেছে উত্তুঙ্গ রূপী ইন্দ্রাবতী। গোদাবরীর শাখানদী এই ইন্দ্রাবতী। একদিকে রয়েছে দুর্দান্ত একটি রিসর্ট। সেখানে একটি পূর্ণিমা রাত কাটিয়েই দেখুন না। চাঁদচোয়ানো জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাবে চরাচর।

দেবনগরী দন্তেওয়াড়া

ছত্তিশগড়ের পর্যটন রাজধানী জগদলপুরের মায়া কাটিয়ে পরদিন ছুটে চলি দন্তেওয়াড়া জেলার দন্তেওয়াড়ার দিকে। দেবনগরী দন্তেওয়াড়া ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম। সতীর দাঁত পড়েছিল এখানে। দেবীর নাম দন্তেশ্বরী, সেই থেকে জেলা ও স্থানের নাম দন্তেওয়াড়া। ডঙ্কিনী আর সঙ্কিনী নদীর সঙ্গমে অবস্থিত বিখ্যাত দন্তেশ্বরী মন্দির। চতুর্দিকের পরিবেশ বড়োই মায়াবী। তবে সবথেকে বড়ো প্রাপ্তি এখানকার নির্জনতা। কুমারী অরণ্য চতুর্দিকে। যেন সবুজের বান ডেকেছে। মেঘের আবডাল সরিয়ে উঁকি দিচ্ছে অর্কপ্রভ। অঘোষিত চমকে নামতে পারে বৃষ্টিও। দিন-দুপুরেও কানে আসে পাখির ডাক।

দন্তেওয়াড়ায় থাকার জায়গা মাত্রই দুটি, একটি হল হোটেল মধুবন এবং দ্বিতীয়টি মন্দির কমিটির গেস্ট হাউজ। হোটেলে চেক-ইন করেই পা বাড়ালাম মন্দিরের পথে। হোটেল মধুবন থেকে দন্তেশ্বরী মন্দিরের দূরত্ব ১ কিমির মতো হবে। শহরে অটো চলে না। রিকশাও না। ফলে যেতে হবে পায়ে হেঁটে অথবা গাড়ি করে। দুটি প্রবেশ তোরণ অতিক্রম করে মূল মন্দির। পরিবেশ খুব সুন্দর। সামান্য দূরে রয়েছে একটি সেতু। ওই সেতু অতিক্রম করেই দন্তেওয়াড়ায় প্রবেশ করতে হয়। রাস্তাটি গিদম এসে দন্তেওয়াড়া হয়ে চলে গিয়েছে কিরন্ডুলের দিকে। সেখানে রয়েছে বাইলাডিলা আয়রন ওর। ভারতের উৎকৃষ্টতম লৌহ ও আকরিক খনি বাইলাডিলা আয়রন ওর।

দন্তেশ্বরী মন্দিরের ঠিক পিছনে ডঙ্কিনী আর সঙ্খিনী নদীর সঙ্গম ঘটেছে। খুব শান্তিতে পূজা দেওয়া যায় এখানে। পান্ডার কোনও উৎপাত নেই। ভিড় নেই একদম। তবে মাড়াই উৎসবের সময়ে মন্দিরে খুব ভিড় হয়। এছাড়া দুর্গাপূজা, দশেরা, কালীপূজা বিভিন্ন সময়ে মন্দিরে ধুমধাম করে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রচুর লোকজন চলে আসেন এখানে।

দন্তেশ্বরী মন্দির দেখে পৌঁছোই ঠিক পাশেই অবস্থিত ভুবনেশ্বরী দেবী মন্দিরে। এরপর দন্তেশ্বরী ও ভুবনেশ্বরী দেবীর পায়ের ছাপ দেখে সরাসরি সঙ্গমস্থলে হাজির হই। এখানে রয়েছে ভগবান বিষ্ণু ও চৈতন্যদেবের চরণপাদুকা। কোনও একসময় চৈতন্য মহাপ্রভু এখানে এসেছিলেন। সঙ্গমস্থলটি সম্পূর্ণ সবুজ প্রকৃতিতে আবৃত। মনের মধ্যে যেন গুনগুনিয়ে ওঠে যুগ-যুগান্তর। সুপ্রাচীন কোনও ঐতিহাসিক ক্ষণে পৌঁছে যাই। বন্যশোভাময় অরণ্যানী। নাম না জানা কত পাখি কুহুকেকা ধ্বনি ভরিয়ে রাখে প্রকৃতিকে। গুমোটভাব হঠাৎ করে কেটে যায়। চমক ভাঙে ঘোর বজ্র-নির্ঘোষে। বৃষ্টি নামে। ভিজে মাটি। বৃষ্টি যেন গদ্যময় জীবনযাত্রায় ছন্দ নিয়ে আসে! ফিরে চলি হোটেলে। দন্তেওয়াড়ায় একরাত কাটিয়ে চলে যাই বন্দরনগরী বিশাখাপত্তনম। তারপর ফিরে আসা কলকাতায়।

কীভাবে যাবেন

ট্রেনঃ  হাওড়া থেকে ২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ২৮৩৯ আপ চেন্নাই মেল, ২৮৬৩ আপ যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ধরে বিশাখাপত্তনম নেমে ধরুন ১ ভি.কে। নামুন জগদলপুর। আবার হাওড়া থেকে মুম্বাইগামী রেলপথে যাত্রা করে রায়পুর নেমে বাস ধরে যেতে পারেন জগদলপুর বা দন্তেওয়াড়া। ফেরার পথে দন্তেওয়াড়া থেকে কোরাপুট এসে একরাত থেকে ৮০০৬ ডাউন কোরাপুট-হাওড়া এক্সপ্রেসেও ফিরতে পারেন।

কোথায় থাকবেন

জগদলপুরে থাকার হোটেল প্রচুর। সরকারি-বেসরকারি হোটেলের অভাব নেই। তবে দন্তেওয়াড়ায় থাকার জন্য রয়েছে শুধু হোটেল মধুবন অথবা মন্দির কমিটির গেস্ট হাউজ।

যোগাযোগ

ছত্তিশগড় পর্যটন, ব্লক – এ-ই ৩২৪, সেক্টর – ১, সল্ট লেক, কলকাতা – ৬৪, ফোন – (০৩৩) ২৩৩৪৪৯৬৮

দেখুনঃ

  • বস্তার ও দন্তেওয়াড়া জেলার উৎসব
  • গোঁচা উৎসব – বস্তার (রথযাত্রার সময় হয়)
  • নারায়ণপুর উৎসব – নারায়ণপুর বস্তার (ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ)
  • কাজরি উৎসব – সারা রাজ্যে হয় (জুলাই-আগস্ট)
  • মাড়াই উৎসব – বস্তার ও দন্তেওয়াড়া (ডিসেম্বর থেকে মার্চ)
  • বস্তার দশেরা – জগদলপুর বস্তার (সাধারণত অক্টোবর)
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...