বর্ষাকাল এসে গেছে। বর্ষার বারিধারা গ্রীষ্মের তপ্ত ধরনির বুকে শীতলতার প্রলেপ লাগায় ঠিকই, সবুজ গাছগাছালি, প্রাণীজগত্, এমনকী মানুষও শীতল প্রলেপে নতুন করে সবীজতা লাভ করে। কিন্তু এত সুবিধা সত্ত্বেও এই মরশুমে রাস্তায় জলকাদা ভরে যাওয়া থেকে জায়গায় জায়গায় গর্ত হয়ে সেগুলো জলে ভরে যায়। এই সমস্যাগুলোর কারণে গাড়িও অনেকসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বর্ষার সময় গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোলে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা একান্ত দরকার। এই সাবধানতাগুলো মেনে চললে গাড়ির সেলফ লাইফ যেমন বাড়বে তেমনি রাস্তার মাঝেও গাড়ি নিয়ে আপনাকে অসুবিধায় পড়তে হবে না।

১) বর্ষার আগে গাড়ির সার্ভিসিং করান। ইঞ্জিন অয়েল, এয়ার ও ফুয়েল ফিলটার বদলাবার সঙ্গে সঙ্গে সাসপেনশন জয়েন্ট, সাইলেন্সার পাইপও অবশ্যই চেক করিয়ে নিন। কারণ বর্ষায় এই পার্টগুলোই বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২) বর্ষায় রাস্তায় জায়গায় জায়গায় কাদামাটি জমা হয়ে থাকে। ফলে টায়ার স্কিড (পিছলে যাওয়া) করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই সমস্যা রোধ করতে ৪-৫ বছরের পুরোনো ঘষে যাওয়া টায়ার বদলে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। স্টেপনিও ভালো আছে কিনা দেখে সবসময় সঙ্গে রাখুন, যাতে দরকার পড়লে তৎক্ষণাৎ ব্যবহার করতে পারেন।

৩) গাড়ির সমস্ত লাইট চেক করিয়ে নিন। লাইট-এর কাচে ক্র‌্যাক থাকলে বদলে নিন। নয়তো জল ঢুকে বাল্ব শর্ট হয়ে যেতে পারে।

৩) বর্ষার মধ্যে নতুন রাস্তা বেছে না নিয়ে পুরোনো চেনা রাস্তাই ব্যবহার করা ভালো যাতে অ্যাক্সিডেন্টের চান্স কমানো যায়।

৫) বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালাবার সময় ডিপার অন করে চলুন যাতে সামনের গাড়ির ড্রাইভার আপনার স্থিতি বুঝতে পারে।

৬) গাড়ির ভিতর পরিষ্কার করে ফুট কভার-এ কাগজ বিছিয়ে নিন, যাতে কাগজ নোংরা হয়ে গেলে দু-তিন দিনে বদলে দিতে পারেন। এর ফলে গাড়ির ভিতর এবং ফুট কভার কোনওটাই নোংরা হবে না।

৭) বৃষ্টিতে গাড়ি ভিজে গেলে সেটা কভার দিয়ে ঢেকে না রেখে খুলে রাখাই ভালো। ভেজা অবস্থায় ঢেকে রাখলে গাড়িত জং ধরতে পারে।

৮) গাড়ি চালাবার সময় সঙ্গে বাচ্চা থাকলে, নিজের সঙ্গে খাওয়ার জল, বিস্কুট, চিপস ইত্যাদি রাখুন যাতে রাস্তার মধ্যে নামতে না হয় গাড়ি থেকে।

৯) বর্ষার মরশুমে গাড়ি চালাবার সময় একটা ছাতা এবং একটা ছোটো তোয়ালে সবসময় সঙ্গে রাখুন।

১০) আপনার অফিস এবং কার পার্কিং করার জায়গার মধ্যে যদি দূরত্ব বেশি থাকে তাহলে সঙ্গে রেনকোট রাখুন যাতে আপনাকে একটুও না বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।

১১) যদি আপনাকে বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয় এবং পৌঁছোতে রাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সঙ্গে টর্চ অবশ্যই রাখবেন কারণ যে-কোনও মুহূর্তে টর্চের প্রযোজন আপনার হতেই পারে।

১২) বৃষ্টির বেগ যদি খুব বেশি থাকে তাহলে সুবিধামতো জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখুন কারণ প্রচণ্ড বৃষ্টিতে সামনে পিছনে কিছু দেখা না গেলে অন্য গাড়ির স্থিতি বুঝতে পারা বা আন্দাজ করা মুশকিল হতে পারে।

গাড়ি জলে আটকে পড়লে

বৃষ্টিতে রাস্তায় জল জমে থাকলে অনেক সময় গাড়িতে জল ঢুকে গাড়ি আটকে যেতে পারে। এই অবস্থায় জোর করে গাড়ি বার করার চেষ্টা না করে এই প্রাসঙ্গিক কোম্পানিকে ফোন করুন। তারাই গাড়ি ওখান থেকে বার করে আপনাকে সুরক্ষিত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। যদি কোনও অজানা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার প্রযোজন হয়, জিপিএস-এর সাহায্যে সুরক্ষিত পৌঁছোতে পারবেন।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...