এই অতিমারীর আবহে পারিবারিক স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি নিশ্চিত করা নিয়ে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ক্যালিফোর্নিয়ার আমন্ড বোর্ড। দেশের বর্তমান স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপর দৃষ্টি আকর্ষণ করা ছাড়াও, পরিবারগুলি তাদের প্রতিদিনের ডায়েট এবং জীবনযাত্রায় কতটা গুরুত্ব দেবে, সেই সমস্ত বিষয় উঠে আসে আলোচনায়। এই ভার্চুয়াল সভাটি সঞ্চালনা করেন আরজে শেলী। আর এতে অংশ নিয়েছিলেন ওড়িয়া অভিনেত্রী অর্পিতা চ্যাটার্জী এবং দিল্লী ম্যাক্স হেলথ কেয়ার-এর রিজিওনাল হেড-ডায়েটিক্স ঋত্বিকা সমাদ্দার।

এখন বেশিরভাগ লোক বাড়ি থেকে কাজ চালাচ্ছেন এবং শিশুরা ভার্চুয়াল ক্লাসে যোগ দিয়েছে। পারিবারিক রুটিনে তাই এমন কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা বিশৃঙ্খলা এবং বেমানান শিডিউলের কুফল প্রকট করে। অস্বাস্থ্যকর খাবার ছাড়াও, শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অভাব, উদ্বেগ, মানসিক চাপ এবং স্ট্রেসের কারণে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যরক্ষা হচ্ছে না সকলের। অধিবেশনটির মাধ্যমে এই বিষয়গুলিকে সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন অর্পিতা এবং ঋত্বিকা। তাঁরা স্বাস্থ্যের তিনটি ক্ষেত্রের উপর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। যেমন—- পুষ্টি, ডায়েট এবং নিয়মিত অনুশীলন। উভয় অতিথি তাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে অভিজ্ঞতা এবং উদাহরণ ভাগ করে নিয়েছেন এবং ডায়েট ও জীবনযাত্রার সামঞ্জস্য বজায় রাখার এমন কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, যা প্রত্যেক পরিবারের স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক কল্যাণকে উৎসাহিত করবে।
সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে ইমিউনিটি বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে অর্পিতা চ্যাটার্জী বলেছেন, ‘আমরা সকলেই এই নতুন জীবনশৈলীকে স্বাভাবিকের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে লড়াই করে যাচ্ছি। আমি অনুভব করি যে, এটি আমার দায়িত্ব গ্রহণ করা পর্যাপ্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যা আমার পরিবারের নিরাপত্তা এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে। এর জন্য আমি স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অভ্যাসের উপর নির্ভর করার পাশাপাশি, জিংকের মতো ইমিউনিটি-সমর্থনকারী পুষ্টি সরবরাহকারী খাবারগুলিতে মনোনিবেশ করি। আমন্ড, জিংকের উৎস হিসাবে পরিচিত, যা বৃদ্ধি, বিকাশ এবং ইমিউনিটি কার্যকারিতা রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই, আমি ঘরে সব সময় আমন্ড রাখি এবং পরিবারের প্রতিটি সদস্যের প্রতিদিন এক মুঠো আমন্ড খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করি। আমি এখন এই অনুশীলনটি অনুসরণ করে চলেছি এবং অবশ্যই অন্যান্য পরিবারগুলিকেও এটি করার অনুরোধ করছি। কারণ এতে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, রাইবোফ্লাভিন, জিংক ইত্যাদি জাতীয় পুষ্টি রয়েছে যা দীর্ঘকাল ধরে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করবে। তবে এগুলি ছাড়াও কিছুটা শারীরিক অনুশীলন রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করে ফিট থাকা এবং এই অভূতপূর্ব সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখাও উচিত।’
অধিবেশন চলাকালীন দিল্লির ম্যাক্স হেলথ-কেয়ারের আঞ্চলিক প্রধান এবং ডায়েটিক্স ঋত্বিকা সমাদ্দার বলেছেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ভারতীয় পরিবারগুলির মধ্যে সঠিক পুষ্টির প্রয়োজনের গুরুত্ব অনুভব করতে শিখিয়েছে। অনেক ভারতীয় উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ (সিভিডি), ডায়াবেটিস এবং স্থূলত্বের মতো অসুস্থতায় ভোগেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই এই বিদ্যমান অসুস্থতা কোভিড-১৯ রোগীদের প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আপনি যদি এর যে-কোনও একটি রোগে ভোগেন বা ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, তাহলে আপনার পরিবার এবং আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে আমন্ড এর মতো পুষ্টিকর আহার রাখুন এবং শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার অনেকটা নিশ্চিত করুন। এ ছাড়াও, আমন্ড-এ যেহেতু কপার, ফোলেট, আয়রন এবং ভিটামিন-ই রয়েছে, এমন পুষ্টি যা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই, প্রতিদিন ডায়েটে এক মুঠো আমন্ড অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করুন! কারণ, মনে রাখবেন, এখন বেশিরভাগ সময়টা বাড়িতে ব্যয় করছি আমরা, তাই স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রতিদিন আমন্ড সহ পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি, নিয়মিত শরীরচর্চা করাও জরুরি।