আধুনিক প্রযুক্তি এবং গেজেট-এর ব্যবহারে বাচ্চারা বড়োদের থেকে অনেকবেশি এগিয়ে। ছোটো থেকেই বাচ্চারা আধুনিক প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসছে। বাড়িতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি দেখেই তারা বড়ো হচ্ছে। কিন্তু ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিক এবং এর ব্যবহার করার সময় কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত সে বিষয়টা নিয়ে তাদের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। অবিভাবকদের উচিত শূন্যস্থান পূরণ করা এবং ইন্টারনেট এটিকেটস সম্পর্কে তাদের অবগত করানো।
করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে যে ইন্টারনেটের এতদিন তাও বাচ্চাদের এতটা প্রয়োজন ছিল না, এখন সেটাই তাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে। এখন তাদের অ্যাকাডেমিক ক্লাস থেকে শুরু করে, সামার ক্যাম্প, হবি ক্লাস, সবই অনলাইনের মাধ্যমে চলছে। সুতরাং কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল এখন তাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে গেছে। এমনিতে প্রযুক্তিবিদ্যায় বাচ্চারা বড়োদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে তবুও নেট-এর ক্ষতিকারক দিক এবং নেট ব্যবহার করার সময় কী কী ব্যাপারে সাবধান হওয়া দরকার সেটা বাচ্চাদের আগে থেকে জানিয়ে রাখাটা খুব দরকার।
ক) বাচ্চারা যে-গেজেটগুলি রোজ ব্যবহার করছে তাতে পেরেন্টাল ফিচার-এর ব্যবহার অবশ্যই করা উচিত যাতে অ্যাডাল্ট কনটেন্ট তাদের হাতের নাগালে না আসে।
খ) বাচ্চাকে আগে থেকে বলে রাখুন নেটে কাউকে নিজের বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ই-মেল অ্যাড্রেস এবং যে-কোনওরকম ব্যক্তিগত তথ্য যেন শেয়ার না করে।
গ) গেম খেলার সময় স্ক্রিনে ভেসে ওঠা কোনওরকম পপ-আপ, অ্যাড অথবা কোনও সাইট-এ যেন ক্লিন না করে।
ঘ) স্ক্রিনে কোনও অপরিচিত বা অজানা লিংক-এ ক্লিক যেন না করে। কেবল পরিচিতদের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখে।
ঙ) কোনও সেলফি তুলে যেন পোস্ট না করে, কারণ নেটে যে-কারওরই ছবি নিয়ে তার অপব্যবহার করাটা কোনও কঠিন কাজ নয়।
চ) বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অভিভাবক নিজেরা মোবাইল বা কম্পিউটারে সবসময় চোখ রেখে সময় কাটাচ্ছেন অথচ বাচ্চাকে বারণ করছেন ওগুলির থেকে দূরে থাকতে। এটা না করে বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটানো প্রয়োজন।
ছ) অনলাইন ক্লাস করার সময় বাচ্চাকে অ্যাটেনটিভ এবং প্রেজেন্টেবল হতে জোর দিন। কারণ ভবিষ্যতে অধিকাংশ কাজই অনলাইনে করতে হবে। সুতরাং এখন থেকেই অভ্যাস করানো দরকার।
জ) কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ব্যাটারির পাওয়ার কম হয়ে গেলে, গেজেটস চার্জে বসিয়ে যথাস্থানে তুলে রাখার অভ্যাস করান বাচ্চাকে।
ঝ) যদি ওয়াইফাই-এর বদলে মোবাইল ডাটা ব্যবহার করছেন তাহলে বাচ্চাকে শেখান কাজ হয়ে যাওয়ার পর নেট বন্ধ করে দিতে।
ঞ) সবশেষে, বাচ্চা যখনই ইন্টারনেটের ব্যবহার করবে, বড়োদের উচিত তার উপর নজর রাখা। এছাড়াও চেষ্টা করতে হবে যাতে ইন্টারনেটের অত্যধিক ব্যবহার না করে বাচ্চা কোনও সৃজনশীল কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।